জলডুগি আনারস রসালো, সুস্বাদু ও সুঘ্রাণযুক্ত। বৈশাখের গরমে এ জাতের আনারস রাজধানীর বিভিন্ন ফল বাজার ও রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে বিক্রি হচ্ছে। দেখতে ছোট আকারের হলুদ রঙের আনারসগুলো আসছে সিলেট, নরসিংদী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা থেকে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক মোড়ে আনারস বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। ভ্যানগুলোতে সারা দিন ভিড় লেগেই থাকছে। কেউবা পরিবারের জন্য জোড়া জোড়া কিনে নিচ্ছেন। অনেকে আবার আনারসে কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ হয়েছে কি না সেটা খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করে নিচ্ছেন। গতকাল কয়েকজন বিক্রেতা জানান, মধুপুরের আনারস আসতে আরও মাসখানেক সময় বাকি। আগাম এই ছোট আনারসের চাহিদা বেশি। ছোট আনারসগুলো ২৫-৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মগেটের ফল বিক্রেতা আফিন আলী জানান, কারওয়ান বাজারে সিলেটের আনারস বেশি, পাহাড় থেকেও আসে। ফার্মগেটে প্রতিটি আনারস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। তিনি বলেন, পরিবারের কেউ জ্বরে পড়লে অন্যরা আনারস কিনে নিয়ে যান। আবার অনেকে আনারসে কিছু দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চান। সিলেট, নরসিংদী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়েও এখন আগাম জাতের এই আনারসের আবাদ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি মধুপুরের মহিষমারা গ্রামের কৃষক ছানোয়ার হোসেনের জলডুগি আনারস ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার আনারস পরিপক্ব হয়েছে। কিছু কিছু পাকাও শুরু হয়েছে। ছানোয়ার হোসেন জানান, মধুপুরের গ্রামের চাষিদের অন্যতম উপার্জন আসে আনারস আবাদ করে। স্থানীয় জাতটি বাজারে আসতে প্রায় ১ মাস সময় লাগবে। আগাম জাত হিসেবে জলডুগি বেছে নিয়েছিলাম। এটার ফলনও ভালো। বাজারে আগে আসছে বলে দামও ভালো পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, জলডুগি আনারস খেতে মিষ্টি, আঁশমুক্ত, সুঘ্রাণ। কোনো কৃত্রিম হরমোন না দেওয়ায় আনারসের সব স্বাদ এতে রয়েছে। তবে অধিকাংশ কৃষক বাজার ধরতে কৃত্রিম হরমোন দিয়ে আনারসের আকার বড় করে ও একসাথে পাকিয়ে থাকে। সেই আনারস বাইরে থেকে হলুদ রঙ ধারণ করবে। তবে খেতে স্বাদ লাগবে না, কোনো ঘ্রাণও পাওয়া যাবে না। আনারস চাষের এলাকাগুলোতে আনারস একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকে। আনারসে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম। এটি একটি আঁশযুক্ত ফল, যা থেকে প্রয়োজনীয় ফাইবার বা আঁশ ও ক্যালরি পাওয়া যায়। আনারসে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম। সুস্বাদের জন্য অধিকাংশ মানুষের কাছে আনারস প্রিয় মৌসুমি ফল।
সংবাদ শিরোনাম