ঢাকা ০৪:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালিই কারণ: হাওর অ্যাডভোকেসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৭
  • ৩৫১ বার

হাওরের উন্নয়নে কাজ করা হাওর অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের মতে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় সঠিক সময়ে বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় অসময়ে প্লাবিত হয়েছে হাওর। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে আড়াই কোটি মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

‘হাওরের জনজীবন নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করাদের তথ্যমতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালিতে ২৫ লাখ মানুষ সরাসরি আক্রান্ত হয়েছে,’ দাবি করে হাওর অ্যাডভোকেসির যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন: আক্রান্ত এলাকাকে অবিলম্বে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি উঠেছে।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, শহরের সাধারণ নাগরিকরা আপাতত হাওর পরিস্থিতি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। তবে ইতোমধ্যে হাওরে ফসলহানীর হতাশার বাতাস লাগছে রাজধানীর চালের বাজারে। রাতারাতি বেড়ে গেছে মোটা চালের দাম।

তিনি বলেন: ‘শুধু সুনামগঞ্জের হাওর নয়, অন্য আরও ৬টি জেলার হাওরাঞ্চল আছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট এবং মৌলভিবাজারের হাওরগুলোতেও প্রয়োজনীয় বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় ঝুঁকির বাইরে নয়।’

শরিফুজ্জামান শরিফ
হাওরের বাঁধ প্রতিবছরই সংস্কার করতে হয় কিন্তু হাওরবাসী এবং হাওর নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর কোন প্রস্তাবেই সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ড সাড়া না দেয়ায় এবারের দুর্যোগ চরমে বলে মনে করেন তিনি।

শরিফ বলেন: উপকূলীয় বাঁধের মতো হাওরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা যায় না। হাওরের বাঁধ প্রতি বছর সংস্কার করাটাই নিয়ম। অথচ পাউবো’র এই কাজে প্রতিবছরই ব্যাপক হারে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়।

‘এই বিষয়গুলোকে আমরা সরকারের নজরে আনতে এবছর মার্চের ১০-১৪ তারিখে সুনামগঞ্জের কয়েকটি হাওর পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বাঁধের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না এমনটা সেসময় দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসকও স্বীকার করেন।’

হাওরাঞ্চলে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে হাওরবাসীর হতাশা দূর করতে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেছেন তিনি।

প্রথমতঃ উপদ্রুত এলাকাকে অবিলম্বে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণার দাবি তার। হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডের ওপর সরকারকে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় সরকার এবং হাওরবাসীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

ফসলহানীর শিকার কৃষকদের কৃষিঋণ পুরোপুরি মওকুফের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত কৃষকদের জন্য কৃষিঋণ পরিশোধের যে নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। আজ হোক কিংবা কাল হাওরের ফসল হারানো কৃষককে এই ঋণ শোধ করতেই হচ্ছে।

‘অথচ বড় বড় পুঁজিপতিদের কাছে শত শত কোটি টাকার ঋণ কোথায় যায় কিভাবে শোধ হয় সেটা দেশের মানুষ জানে না। হাওরের এই ফসলহারানো কৃষকদের জন্য এবারের কৃষি ঋণ পরিশোধের দায়টা না চাপালে মানবিক বিপর্যয় কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠবে হাওর জনপদ।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালিই কারণ: হাওর অ্যাডভোকেসি

আপডেট টাইম : ১১:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৭

হাওরের উন্নয়নে কাজ করা হাওর অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের মতে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় সঠিক সময়ে বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় অসময়ে প্লাবিত হয়েছে হাওর। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে আড়াই কোটি মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

‘হাওরের জনজীবন নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করাদের তথ্যমতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালিতে ২৫ লাখ মানুষ সরাসরি আক্রান্ত হয়েছে,’ দাবি করে হাওর অ্যাডভোকেসির যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন: আক্রান্ত এলাকাকে অবিলম্বে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি উঠেছে।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, শহরের সাধারণ নাগরিকরা আপাতত হাওর পরিস্থিতি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। তবে ইতোমধ্যে হাওরে ফসলহানীর হতাশার বাতাস লাগছে রাজধানীর চালের বাজারে। রাতারাতি বেড়ে গেছে মোটা চালের দাম।

তিনি বলেন: ‘শুধু সুনামগঞ্জের হাওর নয়, অন্য আরও ৬টি জেলার হাওরাঞ্চল আছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট এবং মৌলভিবাজারের হাওরগুলোতেও প্রয়োজনীয় বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় ঝুঁকির বাইরে নয়।’

শরিফুজ্জামান শরিফ
হাওরের বাঁধ প্রতিবছরই সংস্কার করতে হয় কিন্তু হাওরবাসী এবং হাওর নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর কোন প্রস্তাবেই সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ড সাড়া না দেয়ায় এবারের দুর্যোগ চরমে বলে মনে করেন তিনি।

শরিফ বলেন: উপকূলীয় বাঁধের মতো হাওরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা যায় না। হাওরের বাঁধ প্রতি বছর সংস্কার করাটাই নিয়ম। অথচ পাউবো’র এই কাজে প্রতিবছরই ব্যাপক হারে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়।

‘এই বিষয়গুলোকে আমরা সরকারের নজরে আনতে এবছর মার্চের ১০-১৪ তারিখে সুনামগঞ্জের কয়েকটি হাওর পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বাঁধের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না এমনটা সেসময় দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসকও স্বীকার করেন।’

হাওরাঞ্চলে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে হাওরবাসীর হতাশা দূর করতে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেছেন তিনি।

প্রথমতঃ উপদ্রুত এলাকাকে অবিলম্বে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণার দাবি তার। হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডের ওপর সরকারকে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় সরকার এবং হাওরবাসীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

ফসলহানীর শিকার কৃষকদের কৃষিঋণ পুরোপুরি মওকুফের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত কৃষকদের জন্য কৃষিঋণ পরিশোধের যে নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। আজ হোক কিংবা কাল হাওরের ফসল হারানো কৃষককে এই ঋণ শোধ করতেই হচ্ছে।

‘অথচ বড় বড় পুঁজিপতিদের কাছে শত শত কোটি টাকার ঋণ কোথায় যায় কিভাবে শোধ হয় সেটা দেশের মানুষ জানে না। হাওরের এই ফসলহারানো কৃষকদের জন্য এবারের কৃষি ঋণ পরিশোধের দায়টা না চাপালে মানবিক বিপর্যয় কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠবে হাওর জনপদ।’