হাওরে যখন মহাবিপর্যয়, সারাদেশে যখন এ নিয়ে তোলপাড়; তখন বিদেশ সফরে আছেন বাংলাদেশ হাওর ও জলাভুমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট ৯ কর্মকর্তা।
হাওরের এই দুর্যোগের মধ্যেই চলতি মাসের ১৮ তারিখ মন্ত্রণালয়ের আরো ৫ কর্মকর্তাসহ কানাডা গেছেন তারা। সিদ্ধান্ত নেয়ার কেউ না থাকায় হাওরের বিপর্যয়ে কার্যত কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না সরকারের এই অধিদপ্তর।
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় মহাপরিচালক মজিবুর রহমান, পরিচালক প্রশাসন নূরুল আমিন, পরিচালক জলাভুমি ডক্টর রুহুল আমিন এবং উপ-পরিচালক প্রশাসন নাজমূল আহসান কেউ কার্যালয়ে নেই। তারা একসঙ্গে কানাডা সফরে গেছেন। অধিদপ্তরের বেশিরভাগ কক্ষ ফাঁকা। নামে মাত্র দায়িত্ব পালন করছেন প্রেষণে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকতা ড. নূরুল আলম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মহাপরিচালক মহোদয় বর্তমানে আমাদের একটা প্রোজেক্টের ব্যাপারে সরকারি সফরে কানাডা গেছেন।’
হাওর নিয়ে যখন সারাদেশে তোলপাড়, সরকারের সকল আলোচনা-সিদ্ধান্তে যখন হাওর, তখন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে বিস্মিত হাওর এডভোকেসি প্লাটফর্ম।
হাওর এডভোকেসি প্লাটফর্মের যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত হাওর অঞ্চল সফর করেছেন।কিন্তু আমরা যতটুকু জানি হাওর উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা হাওরে যাননি, তারা বিদেশে গেছেন। এই যে কর্মকর্তারা দায়িত্বহীন আচরণ করছেন,
সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
হাওর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাওরে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে হাওর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরেই প্রমাণ হয় হাওর নিয়ে ভাবার লোক নেই, যে কারণে এখনকার এই মহাবিপর্যয়।
২৭ মার্চ থেকে আগাম বন্যায় প্লাবিত হতে থাকে দেশের হাওর অঞ্চল। পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায় একের পর এক বাঁধ। এর ফলে তলিয়ে যায় ১৪২টি ফসলি হাওরের সব ফসল। গেল এক সপ্তাহে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। তৎপরতা শুরু করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা। হাওরের এই মহাবিপর্যয়ের মধ্যেই ১৮ এপ্রিল বিদেশ সফরে যান বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের শীর্ষ ৫ কর্মকর্তার ৪ জন। সঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হাওর সংশ্লিষ্ট ৩ কর্মকর্তাসহ অন্য মন্ত্রণালয়ের আরো ২ কর্মকর্তা।