আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগে কাউয়া ঢুকে গেছে। তার দেয়া উপাধি দলের ‘কাউয়া’দের পেটে গেছে হাওরের বাঁধ নির্মাণ-সংস্কারের বরাদ্দের অর্থ। সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দলের নতুন কাউয়ার সিন্ডিকেটের কারণে সময়মত বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় হাওরের কৃষকদের ধান খেয়েছে উজানের ভারত থেকে নেমে আসা পানি। ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, হাওরের মানুষের এই চরম পরিণতির জন্য দায়ী তারাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ এমনকি এমপিও এমন অভিযোগ করেছেন। অথচ সচিবালয়ের এসি রুমে বসে মন্ত্রী দায় চাপাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকদের ওপর।
হাওর পাড়ের অধিবাসী সাবেক উপজেলা চেযারম্যান আনিসুল হকের মতে সরকার দলীয় ঠিকাদার, উপজেলার চেয়ারম্যান, কিছু ইউপি চেয়ারম্যান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু সিন্ডিকেটের পেটে গেছে হাওর রক্ষা বাঁধের টাকা। সময়মতো বাঁধ নির্মাণ না করায় হাজার হাজার কৃষকদের কপাল পুড়েছে। তিনি বলেন, তাহিরপুরের মানুষের পাশে নেই কেউ। গতকাল ডুবেছে শনির হাওর। কৃষকের স্বপ্ন ও শেষ ভরসার শনির হাওরের ধান এখন পানির নিচে। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কৃষকদের সামনে শুধু অন্ধকার, কোনো আলোর মুখ দেখছি না। এর মধ্যে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও ত্রাণ সচিবের বক্তব্যে হাওর পারের মানুষের মধ্যে প্রচÐ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবির প্রেক্ষিতে ত্রাণ সচিব সুনামগঞ্জ জেলা সদরে যে কথা বলেছেন তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর ভাষাও আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এটা কৃষকদের নিয়ে উপহাস করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের প্রশ্ন আর কত হাজার একর ধানের ক্ষতি, মাছ-হাঁসের মড়ক হলে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হবে?
চলতি বছরের ২৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হয়নি মার্চ-এপ্রিলেও। সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির মহোৎসব হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকজন ইতোমধ্যেই বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে দুর্নীতির তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। সময়মতো বাঁধ না হওয়ায় ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে হাওরের ধান তলিয়ে গেছে এপ্রিল মাসে। কোনো কোনো হাওরের বাঁধের ৭৫ ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। এর কারণ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় প্রভাবশী ঠিকাদারের বাঁধ নির্মাণের টাকা লুটপাট। ‘সরকারের মাল দরিয়া মে ঢাল’ প্রবাদের মতোই টাকার মচ্ছপ হয়েছে। বাঁধ নির্মাণের খবর প্রচার করা হলেও কোনো কোনো বাঁধে এক কোদাল মাটিও দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানী জনপ্রতিনিধিরাই। স্থানীয়রা বলছেন, হাওর রক্ষা বাঁধের টাকা খেয়েছে কাউয়ারা। এসব দুর্নীতি আর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন।
এমপি রতন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রভাবশালী ঠিকাদারেরা, কিছু উপজেলার চেয়ারম্যান, কিছু ইউপি চেয়ারম্যানসহ একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে টাকা লুটে খেয়েছে। এদের দুর্নীতির কারণেই হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হয়নি। তিনি বলেন, পানি উন্নয় বোর্ডের দেয়া কার্যাদেশে বলা ছিল চলতি বছরের ২৮ ফেব্রæয়ারি হাওর রক্ষা সকল বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ সম্পন্ন করার জন্য। কিন্তু তখন পর্যন্ত কোনো কোনো বাঁধের সিকিভাগ কাজও হয়নি। এ নিয়ে বার বার বলার পরেও মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও বলেছি। কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কোথায় আছি, আমি হাওর এলাকার সন্তান, আমি কৃষকদের কষ্ট বুঝি। কৃষকদের কান্না মন্ত্রণালয় বুঝবে না।
এমপি রতন গতকাল পানি সম্পদমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, ‘পানি ওভার ফ্লো হওয়াতে বাঁধ ডুবে গিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করেছে।’ এটা মোটেও সঠিক নয়। যেখানে বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি সেখানে পানির ওভার ফ্লো হওয়ার প্রশ্ন অবান্তর। এমপি রতন বলেন, বাঁধের যেসব স্থানে উচ্চতা ৬ মিটার, সেসব স্থান এখনও পানির ওপরে ভাসা আছে আমি নিজে ওইসব এলাকা দেখে এসেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডে যোগশাজসে যেসব প্রভাবশালী ঠিকাদাররা লুটপাট করেছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে আমার বাসায় হামলা করেছে ওই চক্রটি। তিনি বলেন, যারা বাঁধের টাকা লুটপাট করেছে এরা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নয়। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তখন এরা ওই দলের নেতা সাজে এবং লুটপাট করে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে এ দুষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। এমপি রতন বলেন, হাওরের মানুষকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আনসার উদ্দিন বলেন, হাওর পাড়ের কৃষকের কপাল পুড়েছে প্রভাবশালী কাউয়াদের কারণে। কাউয়ারাই কৃষকের ধান খেয়েছে। তারা বাঁধ নির্মাণের টাকা লুটে খেয়েছে। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মনোনীত পিআইসি ও ঠিকাদার পানি উন্নয়ন বোর্ডে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগশাজসেই ৫৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা করে খেয়েছে। সময়মত বাঁধ নির্মাণ না করায় অকালে হাওরে পানি প্রবেশ করেছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, এবার সুনামগঞ্জে ৭৬টি বাঁধ নির্মাণের জন্য ৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় এবার বোরো ফসলকে বানের পানি থেকে রক্ষার জন্য ৭৬টি বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ১২টি বাঁধের কাজ শুরু হয়নি বলে পাউবো কর্মকর্তারা নিজেই স্বীকার করেছেন। বাকি থাকা ৬৪টি বাঁধের কাজ হয়েছে।
এমপিরা অভিযোগ করেন, প্রতিটি বাঁধের কাজ ১০ ভাগ থেকে ৩৫ ভাগ পর্যন্ত হয়েছে। এ কারণে বন্যার প্রথম ধাক্কাতেই তলিয়ে যায় হাওর। আর এখন অনেক বাঁধের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেন স্থানীয় কৃষকেরা।
এদিকে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সব মহল থেকে উপস্থাপনের পর দুর্নীতি দমন কমিশনও কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দুদক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। ওই টিমে রয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম ও সহকারী পরিচালক সেলিনা আক্তার মনি।
সুনামগঞ্জের হাওরে ফসলডুবির ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হাজার হাজার কৃষক দাবি আদায়ের আন্দোলনে নেমেছেন। তারা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করেছেন। এসব সমাবেশে পাউবোর কাজের সুষ্ঠু তদন্ত, দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও পিআইসি’র সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার, তদন্তের আগে ঠিকাদারদের বিল না দেয়া, জরুরি ভিত্তিতে খোলা বাজারে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ শুরু, ইজারাকৃত জলমহালের ইজারা বাতিল, সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান, গ্রামে গ্রামে রেশনিং প্রথা চালুসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১ (জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-তাহিরপুর-মধ্যনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন গত মার্চ মাসে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতির বিষয় তুলে ধরেছিলেন। এসময় এমপি রতন বলেছিলেন, ‘সুনামগঞ্জে এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ একটি সিন্ডিকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এ কারণে অধিকাংশ হাওরে এখনো বাঁধের কাজই শুরু হয়নি। কিন্তু তাঁর এ অভিযোগের প্রেক্ষিতেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তখন কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময় মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন,‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হাওরে স্থায়ী বেড়ি বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে কৃষকের সোনার ফসল ঘরে তুলতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবারও হাওর রক্ষা বাঁধের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। এই বেড়ি বাঁধের কাজ সময়মত না হলে কৃষকরা সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারবে না।
সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিকাংশ বেড়ি বাঁধের কাজ একটি লুটেরা সিন্ডিকেট ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছে। আমাদের এলাকার হাওরগুলো এখনও পর্যন্ত হুমকির সম্মুখীন। অধিকাংশ হাওরে এখনও বাঁধের কাজই শুরু হয়নি। আমি হাওরে ছিলাম, প্রতিটি হাওরে আমি গিয়েছি, প্রতিটি হাওর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এমপি রতন বলেন, ‘আমি হাওরের সন্তান। হাওরের মানুষের কান্না কত বেদনাদায়ক আমি বুঝি। যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সমস্ত কাজ হাতিয়ে নিয়েছে, তারা হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের একটি অংশ। আমি হাওরের কাজের অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়েছি কাজ সম্পন্ন করার জন্য।
এমপি রতনের এ অভিযোগ ও প্রতিবাদের পরেও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঘুম ভাঙেনি। জাতীয় সংসদে এমপি রতনের এ বক্তব্যের একমাস যেতে না যেতেই পুরো এলাকার হাওরের ধান অকাল বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এলাকাবাসী বলছেন, সময়মত হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও হাওরের কৃষকদের আজ এ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতো না।
ধর্মপাশা উপজেলার বাসিন্দা ডা. নুরুল আমিন বলেন, দুই মাস আগ থেকেই হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার জন্য বার বার ঠিকাদারদের তাগাদা দিলেও কৃষকদের কথা কর্ণপাত করেনি প্রভাবশালী ঠিকাদারেরা।
ধর্মপাশার খয়েরদিরচর গ্রামের বাসিন্দা এবং তরুণ সমাজ সেবক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, হাওর রক্ষা বাঁধের টাকা খাইছে কাউয়ারা। প্রভাবশালী ঠিকাদার, উপজেলার চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ একটি লুটেরা গোষ্ঠী কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তিনি আরো বলেন, এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ অনেকেই সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। এমপি রতন এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও কথা বলেছেন। কিন্ত লুটেরা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কারণ, পানি উন্ন্য়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাউয়ারাও হাওর রক্ষা বাঁধের টাকা লুটপাটে জড়িত। তিনি জরুরি ভিত্তিতে এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
হাওরে বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজে অর্থ লোপাটসহ নানা অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এবার সুনামগঞ্জ, মৌলভী বাজার হবিগঞ্জ, বি. বাড়িয়া, নেত্রকোনা, সিলেট ও কিশোরগঞ্জ শেরপুরসহ ২ লাখ ৭১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে ওই ৭ জেলায় ৩ কোটি ১৫ লাখ মন ধান কৃষকের ঘরে উঠছে না। ফসলডুবির ঘটনায় মোট ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। নিজের ক্ষেতের ধান নষ্ট হতে দেখে অনেক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উল্লেখ্য, হাওর এলাকার জমি এক ফসলি। এক মওসুমের ফসল দিয়ে তাদের সারা বছর চলতে হয়।
এদিকে সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে দিন দিন বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। জেলায় এ বছর দুই লাখ ২৩ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওরের এই ফসল রক্ষায় ৫৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে। কৃষকদের অভিযোগ-বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়া এবং কাজে অনিয়মের কারণেই হাওরে এই অসময়ে ফসলহানি ঘটেছে। ইতিমধ্যে ভারী বৃৃষ্টিপাত, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে শতাধিক হাওরের ১ লাখ ৩ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকার উপরে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর