ঢাকা ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাঁস্তে হাতে মাঠে ব্যস্ত কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৪:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৭
  • ৩৩৬ বার

সোনালি খেতে রোদের আসা-যাওয়া। সোনার ধানে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। চারদিকে রব উঠেছে নতুনের। আগমনীর গান গেয়ে আর মনের মাঝে স্বপ্ন বুনে যাচ্ছে চাষি। হাজার বছরের ইতিহাস পেরিয়ে সেই একই স্থানে আজ আবারও নব উদ্যমে মাঠে নেমেছে সোনার বাংলার সোনার চাষিরা, সোনা রঙের ধান কাটতে।
বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার চাষিদের ঘরে ঘরে ডাক দিয়ে গেছে বোরোর খেত। সব ভুলে এখন বোরো চাষিরা গামছা মাথায় আর কাঁস্তে হাতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এত আনন্দের মাঝেও কৃষকের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে যে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নন্দীগ্রাম একটি পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ২০ হাজার ৪৬৭ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১৯ হাজার ১১৯ মেট্রিকটন। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি অধিদফতর। খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম উপজেলায় আগাম রোপণ করা বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক-কৃষাণিরা। পোকামাকড়-রোগবালাই কম, নন ইউরিয়া সারের ব্যবহার, আধুনিক সেচ, কৃষক প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংসহ উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ বেশি হওয়ায় এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। এসব এলাকার কৃষকরা প্রায় প্রতিবছর আগেই বোরো ধান কেটে নিজেদের প্রয়োজনসহ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো উপজেলায় ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে।
উপজেলার কাথম গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিমণ মিনিকেট ৯২০ থেকে ৯৫০ টাকা ও ৩৪ জাতের ধান ১৩৫০ থেকে ১৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে বিভিন্ন জাতের ধান কাটা শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে।
উপজেলার ভাদগ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর জানান, বাজারে চালের দাম অনেকটা চাঙ্গা থাকলেও নতুন ধানের দাম তুলনামূলক কম। আগাম ফসলের দাম ভালো হয় এটাই স্বাভাবিক কিন্তু এবার ধানের ক্ষেত্রে উল্টো হচ্ছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মশিদুল হক জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সকল কর্মকর্তা ফসলি জমির প্রতি সুদৃষ্টি রেখেছে। কৃষি কর্মকর্তা আর চাষিদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকায় এবারো ইরি-বোরো ধান ভালো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কাঁস্তে হাতে মাঠে ব্যস্ত কৃষক

আপডেট টাইম : ১২:৫৪:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

সোনালি খেতে রোদের আসা-যাওয়া। সোনার ধানে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। চারদিকে রব উঠেছে নতুনের। আগমনীর গান গেয়ে আর মনের মাঝে স্বপ্ন বুনে যাচ্ছে চাষি। হাজার বছরের ইতিহাস পেরিয়ে সেই একই স্থানে আজ আবারও নব উদ্যমে মাঠে নেমেছে সোনার বাংলার সোনার চাষিরা, সোনা রঙের ধান কাটতে।
বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার চাষিদের ঘরে ঘরে ডাক দিয়ে গেছে বোরোর খেত। সব ভুলে এখন বোরো চাষিরা গামছা মাথায় আর কাঁস্তে হাতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এত আনন্দের মাঝেও কৃষকের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে যে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নন্দীগ্রাম একটি পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ২০ হাজার ৪৬৭ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১৯ হাজার ১১৯ মেট্রিকটন। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি অধিদফতর। খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম উপজেলায় আগাম রোপণ করা বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক-কৃষাণিরা। পোকামাকড়-রোগবালাই কম, নন ইউরিয়া সারের ব্যবহার, আধুনিক সেচ, কৃষক প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংসহ উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ বেশি হওয়ায় এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। এসব এলাকার কৃষকরা প্রায় প্রতিবছর আগেই বোরো ধান কেটে নিজেদের প্রয়োজনসহ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো উপজেলায় ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে।
উপজেলার কাথম গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিমণ মিনিকেট ৯২০ থেকে ৯৫০ টাকা ও ৩৪ জাতের ধান ১৩৫০ থেকে ১৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে বিভিন্ন জাতের ধান কাটা শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে।
উপজেলার ভাদগ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর জানান, বাজারে চালের দাম অনেকটা চাঙ্গা থাকলেও নতুন ধানের দাম তুলনামূলক কম। আগাম ফসলের দাম ভালো হয় এটাই স্বাভাবিক কিন্তু এবার ধানের ক্ষেত্রে উল্টো হচ্ছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মশিদুল হক জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সকল কর্মকর্তা ফসলি জমির প্রতি সুদৃষ্টি রেখেছে। কৃষি কর্মকর্তা আর চাষিদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকায় এবারো ইরি-বোরো ধান ভালো হয়েছে।