কিশোরগঞ্জ,সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ ভাটি অঞ্চলের হাওরের ফসলনির্ভর মানুষের আর্তনাদই নয়, স্বতঃস্ফূর্ত মানববন্ধনসহ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে।মানুষের পিঠ ফসল হারিয়ে দেয়ালে ঠেকে গেছে।তারা বাঁধ নির্মাণ নিয়ে অনিয়মের তদন্ত, দোষীদের শাস্তি এবং হাওরের ফসল রক্ষার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে ফসল রক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছে।দীর্ঘদিন পর ৯ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিল।সুনামগঞ্জের সদর আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ও মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে এলাকার পরিস্থিতি অবহিত করলে তারা সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন।সুনামগঞ্জ সদরের সংসদ সদস্য কৃষকের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় দুর্গত এলাকা ঘোষণার জন্য সমাবেশ ডেকেছেন।সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরাও।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গেল বারের ধকল সইতে না সইতেই এবারের অকাল বৃষ্টি ও বন্যায় প্রকৃতির বৈরী নির্দয় খেলায় ফসল হারিয়ে রিক্ত নিঃস্ব হয়ে যাওয়া কৃষকদের পাশে আপনার মানবিক হৃদয় মেলে ধরে সাহায্যের হাত বাড়ানোর মিনতি করছি।মানুষের কল্যাণে রাজনীতি দীর্ঘ সংগ্রামে আপনি অভিজ্ঞই নন, রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতায়ও আপনার প্রজ্ঞা ও দক্ষতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নন্দিত। আপনি জানেন, সর্বস্বান্ত কৃষকের এ ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার পথ কী। আপনিই জানেন একমাত্র বোরো ফসল হারিয়ে পথে বসা কৃষকের কর্মসংস্থানের কী কর্মসূচি নেওয়া যায়।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা থেকে আপনি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করেছিলেন।যে দুটি শক্তির ওপর তার একটি হলো— প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স। অন্যটি পেশিবহুল কৃষকের ঘর্মাক্ত শরীরের পরিশ্রম।আজ সেই কৃষকের পাশে আপনার দাঁড়ানোর সময়।আজ সেই কৃষকের মুখে হাসি চির অম্লান রাখার জন্য আপনার পরিকল্পনা জরুরি।আপনার বরাদ্দের অর্থ লুটপাট করে যারা কৃষকের বুক ভেঙে দেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের এখনই সময়। অকালবন্যায় ফসল হারানো হাওর অঞ্চলের কৃষকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সভাপতি বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি অধ্যক্ষ আসাদুল হক। অধ্যক্ষ আসাদুল হক দলের নেতা-কর্মীদেরও সাধ্যমত সাহায্য-সহযোগিতার অনুরোধ করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি সভাপতি এ কথা বলেন। এতে তিনি কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হাওর ও হাওর এলাকার বাইরে আকস্মিক বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেন, ‘বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ফসলি জমি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে বন্যাকবলিত বিপন্ন মানুষদের প্রতি দেশবাসীর মতো আমিও গভীরভাবে মর্মাহত।’ তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, সরকার এখনও পর্যন্ত দূর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত ফসল হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদেরকে অবিলম্বে সাহায্য সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
শিক্ষক সমিতি সভাপতি বলেন, ‘বন্যাকবলিত মানুষদের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং ভয়াবহ সংকট সমাধানে ফসল হারানো মানুষদের পাশে থাকবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
আসাদুল হক বলেন, ‘বর্তমানে সারসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জিনিসপত্রের উর্ধ্বমূল্যের কারণে কৃষকগণ কষ্ট ও নানাবিধ বিড়ম্বনা স্বীকার করে ফসল উৎপাদন করে থাকেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে বন্যার ভয়াবহ ব্যাপকতা ও ফসলের চরম ক্ষয়ক্ষতিতে দূর্গত এলাকার মানুষ অবর্ণনীয় সংকটে নিপতিত হয়েছে। তাদের ওপর এ যেন ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’।
ষড়ঋতুর এই দেশে কষ্টসহিষ্ণু মানুষ যুগযুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ মোকাবেলা করেছে জানিয়েঅধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেন, এবারেও শত কষ্ট ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে বন্যায় ফসল হারানো অসহায় মানুষগুলো সাহসিকতার পরিচয় দেবে বলে তিনি আশাবাদী।