আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের স্কুলের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয়ায় অন্য অংশের এক নেতার হাতে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া এম এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকনকে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে সোমবার সকালে ক্লাস বর্জন করে স্কুলটির চার শতাধিক শিক্ষার্থী বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
গতকাল স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনের দিনে ওই লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছিল।
একাধিক সূত্র জানায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। গতকাল স্বাধীনতা দিবস পালনের জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুস সোবহান খানের নেতৃত্বে দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা সাতুরিয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নেয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়ার পর গতকাল ওই পক্ষটি অনুষ্ঠান করছিল। অনুষ্ঠান চলাকালীন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির কয়েকবার প্রধান শিক্ষক ফজলুল হকের কাছে জানতে চান, কেন সোবহান খানকে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। একপর্যায়ে তিনি প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের অনুষ্ঠান শেষে দুপুরের খাবার গ্রহণের জন্য স্কুল সংলগ্ন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান ওবায়েদের বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। পথে একই বিষয় নিয়ে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে তার আবারও কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হুমায়ুন তাকে কয়েকটি কিল-ঘুষি এবং চড়-থাপ্পড় মেরে রাস্তার পাশে ফেলে দেন। পরে আশপাশে থাকা শিক্ষকসহ অনেকে তাকে উদ্ধার করেন।
অভিযুক্ত সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির জানান, ‘প্রধান শিক্ষক স্কুলের সকল কাজই তার ইচ্ছেমতো করেন। এসব বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে সভাপতি দুজনকে তার বাসায় ডেকে মিলিয়েও দিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান জানান, ‘তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি শুনে মীমাংসা করে দেই। তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে জরুরি মিটিং ডেকে ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে শিক্ষাবোর্ড বরাবর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।’
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, সড়ক অবরোধের খবর শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে ছাত্রদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।’
ওসি আরও বলেন, শিক্ষককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।