ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওরা বাংলাকে নিশানা করলে, আমিও ইন্ডিয়া টার্গেট করব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৬:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০১৭
  • ২৩৮ বার

সমঝোতার লেশমাত্র ইঙ্গিত নেই। বরং, তিনি সটান বলছেন, ‘‘ওরা যদি বাংলাকে নিশানা করে, আমিও ইন্ডিয়া টার্গেট করব!’’

নোটবন্দির পরেও উত্তরপ্রদেশ থেকে বিপুল সাফল্য ঝুলিতে ভরেছেন নরেন্দ্র মোদী।

অন্য দিকে, সারদার পরে নারদ-কাণ্ডেও সিবিআই তদন্তের মুখে পড়েছে তৃণমূল। জল্পনা চলছিল, পরিস্থি্তির চাপে কি বিজেপি-র প্রতি সন্ধির বার্তা দিতে পারেন তৃণমূল নেত্রী?

এবিপি আনন্দের স্টুডিওতে বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, পাল্টা আক্রমণই তাঁর অস্ত্র। কয়েক জন মন্ত্রীর কাছে বুধবারই যার প্রাথমিক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ দিন সেটাই আরও স্পষ্ট করলেন মমতা।

গোপন করলেন না জাতীয় রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তি হওয়ার বাসনা। সরাসরিই তিনি এ বার বলে রাখলেন, ‘‘চাইলে আমিও নেতৃত্ব দিতে পারি বা অন্য কেউ।’’

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এর আগে দিল্লি, বিহার, তামিলনাড়ুতে হেরেছে। উত্তরপ্রদেশে জিতেছে মানেই সারা ভারতেও জিতবে, তার কোনও মানে নেই।

ওখানে অখিলেশ আর মায়াবতীর

ভোট এক হয়ে গেলেই কিন্তু ব্যাপারটা অন্য রকম হয়ে যায়।’’ ভোটের আগে কোনও কাজ না করেও গেরুয়া শিবির কী ভাবে উত্তরপ্রদেশে ৩২৫টি আসন পেল, ইভিএমে কোনও কারসাজি আছে কি না— এ সব সংশয় তাঁর গলায় ধরা পড়েছে ঠিকই।

কিন্তু সে সব ছাপিয়েও যে বার্তা সামনে এসেছে, তা হল, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি-কে আটকাতে বিরোধী ভোটের ভাগাভাগি আটকানোর রসায়ন এখন থেকেই তাঁর মাথায় ঘুরছে।

তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস এখন দুর্বল। সব রাজ্যে এক রকম শক্তি নয়। যে রাজ্যে যে শক্তিশালী, আমার মতে তাকেই ভোট দেওয়া উচিত।’’

গেরুয়া শিবিরের মধ্যে বিভাজন উস্কে দেওয়ার সূক্ষ্ম কৌশলও কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন মমতা। উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ‘হিন্দুত্বের প্রতীক’ যোগী আদিত্যনাথ। যে তাস বিজেপি আগে আস্তিনের বাইরে আনেনি।

তৃণমূল নেত্রী এ দিন মন্তব্য করেছেন, ‘‘পরের বার ভোটে মোদীই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তারই বা কী ঠিক আছে? যোগীও বলতে পারেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পারি! তবে অন্য দলের ব্যাপার। আমার কিছু বলা উচিত নয়।’’

উত্তরপ্রদেশের ফলাফলের পরে আরএসএস ঘোষণা করেছে, জেহাদি কাজকর্মকে তৃণমূল সরকার প্রশ্রয় দিচ্ছে, এই অভিযোগ সামনে রেখে তারা এ রাজ্যে তৎপরতা বাড়াবে।

নারদ-কাণ্ডকে হাতিয়ার করেও বিজেপি রাজ্যে সক্রিয় হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য, এ রাজ্যেও ভোটের মেরুকরণ ঘটানো।

মমতা অবশ্য বলেছেন, ‘‘এখানে আমরা ওদের মোকাবিলা করছি। হতাশা থেকে আরএসএস এ সব বলছে।’’ সেই সঙ্গেই ফের তাঁর অভিযোগ, আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে তিনিই মোদীর মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছেন বলে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে সারদা, নারদে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে।

এ রাজ্যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁদের স্বরূপ বেরিয়ে পড়েছে বলেই হতাশা থেকে মমতা আক্রমণ করছেন।’’

বাংলায় বিজেপি-র উত্থান আরও দ্রুত হবে বলে দাবি করে কৈলাসের আরও মন্তব্য, ‘‘জাতীয় স্তরে মানুষ মনস্থ করে ফেলেছেন। বিজেপি-ই ফিরবে ২০১৯-এ।’’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ওরা বাংলাকে নিশানা করলে, আমিও ইন্ডিয়া টার্গেট করব

আপডেট টাইম : ১১:৩৬:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০১৭

সমঝোতার লেশমাত্র ইঙ্গিত নেই। বরং, তিনি সটান বলছেন, ‘‘ওরা যদি বাংলাকে নিশানা করে, আমিও ইন্ডিয়া টার্গেট করব!’’

নোটবন্দির পরেও উত্তরপ্রদেশ থেকে বিপুল সাফল্য ঝুলিতে ভরেছেন নরেন্দ্র মোদী।

অন্য দিকে, সারদার পরে নারদ-কাণ্ডেও সিবিআই তদন্তের মুখে পড়েছে তৃণমূল। জল্পনা চলছিল, পরিস্থি্তির চাপে কি বিজেপি-র প্রতি সন্ধির বার্তা দিতে পারেন তৃণমূল নেত্রী?

এবিপি আনন্দের স্টুডিওতে বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, পাল্টা আক্রমণই তাঁর অস্ত্র। কয়েক জন মন্ত্রীর কাছে বুধবারই যার প্রাথমিক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ দিন সেটাই আরও স্পষ্ট করলেন মমতা।

গোপন করলেন না জাতীয় রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তি হওয়ার বাসনা। সরাসরিই তিনি এ বার বলে রাখলেন, ‘‘চাইলে আমিও নেতৃত্ব দিতে পারি বা অন্য কেউ।’’

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এর আগে দিল্লি, বিহার, তামিলনাড়ুতে হেরেছে। উত্তরপ্রদেশে জিতেছে মানেই সারা ভারতেও জিতবে, তার কোনও মানে নেই।

ওখানে অখিলেশ আর মায়াবতীর

ভোট এক হয়ে গেলেই কিন্তু ব্যাপারটা অন্য রকম হয়ে যায়।’’ ভোটের আগে কোনও কাজ না করেও গেরুয়া শিবির কী ভাবে উত্তরপ্রদেশে ৩২৫টি আসন পেল, ইভিএমে কোনও কারসাজি আছে কি না— এ সব সংশয় তাঁর গলায় ধরা পড়েছে ঠিকই।

কিন্তু সে সব ছাপিয়েও যে বার্তা সামনে এসেছে, তা হল, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি-কে আটকাতে বিরোধী ভোটের ভাগাভাগি আটকানোর রসায়ন এখন থেকেই তাঁর মাথায় ঘুরছে।

তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস এখন দুর্বল। সব রাজ্যে এক রকম শক্তি নয়। যে রাজ্যে যে শক্তিশালী, আমার মতে তাকেই ভোট দেওয়া উচিত।’’

গেরুয়া শিবিরের মধ্যে বিভাজন উস্কে দেওয়ার সূক্ষ্ম কৌশলও কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন মমতা। উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ‘হিন্দুত্বের প্রতীক’ যোগী আদিত্যনাথ। যে তাস বিজেপি আগে আস্তিনের বাইরে আনেনি।

তৃণমূল নেত্রী এ দিন মন্তব্য করেছেন, ‘‘পরের বার ভোটে মোদীই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তারই বা কী ঠিক আছে? যোগীও বলতে পারেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পারি! তবে অন্য দলের ব্যাপার। আমার কিছু বলা উচিত নয়।’’

উত্তরপ্রদেশের ফলাফলের পরে আরএসএস ঘোষণা করেছে, জেহাদি কাজকর্মকে তৃণমূল সরকার প্রশ্রয় দিচ্ছে, এই অভিযোগ সামনে রেখে তারা এ রাজ্যে তৎপরতা বাড়াবে।

নারদ-কাণ্ডকে হাতিয়ার করেও বিজেপি রাজ্যে সক্রিয় হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য, এ রাজ্যেও ভোটের মেরুকরণ ঘটানো।

মমতা অবশ্য বলেছেন, ‘‘এখানে আমরা ওদের মোকাবিলা করছি। হতাশা থেকে আরএসএস এ সব বলছে।’’ সেই সঙ্গেই ফের তাঁর অভিযোগ, আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে তিনিই মোদীর মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছেন বলে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে সারদা, নারদে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে।

এ রাজ্যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁদের স্বরূপ বেরিয়ে পড়েছে বলেই হতাশা থেকে মমতা আক্রমণ করছেন।’’

বাংলায় বিজেপি-র উত্থান আরও দ্রুত হবে বলে দাবি করে কৈলাসের আরও মন্তব্য, ‘‘জাতীয় স্তরে মানুষ মনস্থ করে ফেলেছেন। বিজেপি-ই ফিরবে ২০১৯-এ।’’