আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে চায় বিএনপি। ইসি, মাঠ প্রশাসন এবং দলীয় সরকার নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে দলে। প্রকাশ্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বললেও ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি, সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই চলছে। দল গোছানো, আন্দোলন কৌশল নির্ধারণ ও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে এখন দলটি ব্যস্ত। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে ক্ষমতাবলয়ের বাইরের রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা শুরু করেছে। সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত দলের বাইরে থাকা নেতাদের আবার দলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
১৩ মার্চ সোমবার ‘যেসব কারণে নির্বাচনে যেতে চায় বিএনপি’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে দৈনিক ইত্তেফাক।
নেতাদের সাথে কথা বলে জানাগেছে,বিএনপি নির্বাচন বর্জনের কথা ভাবছে না। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দর-কষাকষিতে সব রকমের চেষ্টা চালাবে দলটি । সরকারকে চাপে রাখবে। যদি এই কৌশল সফল না হয় তবে দাবি আদায়ে শেষ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে রাজপথের আন্দোলনে যাওয়ার চিন্তাও করছেন নীতিনির্ধারকেরা। গত মাসে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বেগম খালেদা জিয়া নেতাদের নিজ নিজ এলাকায় সম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং দ্রুত দল গোছানোর কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। আন্দোলনের প্রস্তুতি রাখতেও বলেন। ইতিমধ্যে ৭৫ টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে অর্ধেকের বেশি জেলার কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো আগামী দেড়-দুই মাসের মধ্যে ঘোষণার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী ‘রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন’-এ অংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়,বিএনপির বৃহত্তর স্বার্থে সব রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি মেনে নিয়েই আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন সিনিয়র নেতারা। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশ নিতে এখন থেকেই সব রকম প্রস্তুতি নিতে তারা বিএনপি চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিয়েছেন। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
দলের উপদেষ্টা-পরামর্শকরা বলছেন, নির্বাচনে যাওয়া হবে মন্দের ভালো। নির্বাচনে না গেলে নিবন্ধন টেকানোর শংকা, মামলা হুলিয়ার শিকার মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সামলানোর ঝুঁকিতে পড়তে হবে বিএনপিকে। দশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি আবার সংসদের বাইরে থাকলে বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে নির্যাতিত নেতারা আরো হতাশ হয়ে যাবেন।