জড়তা, ভয়, লজ্জা বা সংকোচকে পিছনে ফেলে গ্রামের মাঠে শাড়ি-বোরকা পড়েই ফুটবল খেলছেন নারী ও কিশোরীরা। গত ৮ মার্চ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটি গ্রামে নারী ও কিশোরীদের ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঁধভাঙ্গা আনন্দ আর উচ্ছাস নিয়ে এসব সাধারণ নারীরা খেলার মাঠে নামেন।
সেদিন শাড়ী আর বোরকা পড়ে ফুটবল নিয়ে দৌড়ে বেড়িয়েছেন সাড়া মাঠ জুড়ে। ‘আমরাও পারি’ এমন প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামা এসব নারীদের ফুটবল খেলা দেখে দর্শক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা মুগ্ধ হয়েছেন। বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা একশন এইডের সহায়তায় উইমেন রেজিলিয়ান ইনডেক্স প্রকল্পের আওতায় আভাসের উদ্যোগে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংস্থার সুবিধাভোগী দরিদ্র নারী ও কিশোরীরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়া নারীরা জানান, গ্রামীন নারীরাও সুযোগ পেলে দারিদ্রতাকে জয় করতে পারে। শাড়ী পরিহিতা নারীরা চার দেয়ালেই এখন বন্দী নয়। নারীদের সমাজে অবদান রয়েছে। ক্রীড়ার মত শক্ত কাজে তারা সমান পারদর্শীতা দেখিয়েছে। ফুটবল খেলায় অংশ নেয়া লাইলী বেগম জানান, জীবনে কোনদিন ফুটবলে লাথি মারিনি। আজ সবার সামনে মাঠে খেলতে নেমে কিছুটা জড়তা, ভয়, লজ্জা, সংকোচ আমাদের সবার মধ্যেই কাজ করেছে। তবে খেলা শুরু হওয়ার পর সব ভুলে গিয়েছি। এতে খুব আনন্দ পেয়েছি।
আত্মবিশ্বাসের বিজয়ী হাসি দিয়ে হাওয়া বেগম বলেন, খেলতে নেমে বুঝতে পারলাম এ খেলাতে দম লাগে। আমরাও শাড়ী পড়ে দম নিয়ে খেলাতে পারি। সুযোগ পেলে আমরা করতে পারি অনেক সামাজিক কাজ। রাখতে পারি সমাজে অবদান। করতে পারি দারিদ্রতাকে জয়। সাবিতা বেগম বলেন, আমরা শুধু ঘর নয়, বাহিরেও সামলাতে পারি। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাড়ী গিয়ে সচেতনার বার্তা পৌঁছে দিয়ে আমরা প্রমান করেছি।
প্রধান অতিথি নীলগজ্ঞ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, সমাজের অনাগ্রসর নারীদের নিয়ে আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে একশন এইড এবং আভাসের এই ব্যাতিক্রমী আয়োজন নারীদের অগ্রসর হতে ব্যাপক অনুপ্রেরণা যোগাবে।