ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টানা বৃষ্টিতে ফষলের ব্যাপক ক্ষতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৮:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০১৭
  • ৩২২ বার

টানা ৪ দিনের মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিতে রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ক্ষেতেই বৃষ্টির পানি জমে তলিয়ে আছে। গাছের শিকড় পঁচে পাতা ও কাণ্ড নেতিয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আলু ও তরমুজ চাষীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
এছাড়া মুগডাল, মরিচ, চিনাবাদাম, তিলসহ অন্যান্য রবিশস্যেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে চলছে আহাজারি। তাদের বুকফাটা বোবাকান্নায় আকাশ ভারী হয়ে ওঠেছে।
এদিকে কৃষকরা তাদের আলু, তরমুজসহ রবিশস্যের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় শতভাগ বলে জানান। এতে টাকার হিসাবে তাদের ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকার উপরে। তবে গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. মান্নান প্রাথমিকভাবে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ শতকরা ৮০ ভাগ বলে জানান। টাকার হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ মাঠ কর্মীদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার আগে প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয় করা যাবে না। ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পেতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্র জানায়, এ বছর গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন রবিশস্যের আবাদ হয়েছে ৩৩ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আলু ১ হাজার, তরমুজ ৫ হাজার ও বাকি জমিতে অন্যান্য রবিশস্যের আবাদ হয়েছে।
সরেজমিন ডাকুয়া ইউনিয়নের ফুলখালী গ্রামে মনিরুল ইসলাম মাষ্টারের ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, তার আলু ক্ষেত পানির নিচে সম্পূর্ণ তলিয়ে আছে। বৃষ্টির পানি জমে গাছগুলো ঝলসে মরে গেছে। ক্ষেতের আলু ক্ষেতেই পঁচে গেছে। আলু তোলার সময় বাকি ছিল আর মাত্র একসপ্তাহ। এর মধ্যেই এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষকদের সব আশা শেষ হয়ে গেছে।
শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, তিনি সাড়ে ৪ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ফলন ভালো হলেও তিনি একটি আলুও ঘরে তুলতে পারেননি।
পক্ষিয়া গ্রামের তরমুজ চাষী আবুল হোসেন জানান, প্রতি একর জমিতে তরমুজ আবাদ করতে সর্বনিম্ন খরচ হয় দেড় লাখ টাকা। তিনি প্রায় ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। এ হিসাবে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা খরচ হয় তার। আশা করেছিলেন তার লাভ হবে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা।
অসময়ে টানা বর্ষণে তার সব আশা এক ফুৎকারে নিভে যাওয়ায় তিনি এখন দিশেহারা। কৃষকরা রবি ফসলের অনিশ্চয়তায় এখন দিশেহারা। এনজিও, মহাজনদের দেনা পরিশোধ ও পরিবার পরিজনদের ভরণপোষণ নিয়ে তারা এখন রয়েছে মহাদুঃশ্চিন্তায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

টানা বৃষ্টিতে ফষলের ব্যাপক ক্ষতি

আপডেট টাইম : ১২:৩৮:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০১৭

টানা ৪ দিনের মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিতে রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ক্ষেতেই বৃষ্টির পানি জমে তলিয়ে আছে। গাছের শিকড় পঁচে পাতা ও কাণ্ড নেতিয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আলু ও তরমুজ চাষীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
এছাড়া মুগডাল, মরিচ, চিনাবাদাম, তিলসহ অন্যান্য রবিশস্যেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে চলছে আহাজারি। তাদের বুকফাটা বোবাকান্নায় আকাশ ভারী হয়ে ওঠেছে।
এদিকে কৃষকরা তাদের আলু, তরমুজসহ রবিশস্যের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় শতভাগ বলে জানান। এতে টাকার হিসাবে তাদের ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকার উপরে। তবে গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. মান্নান প্রাথমিকভাবে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ শতকরা ৮০ ভাগ বলে জানান। টাকার হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ মাঠ কর্মীদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার আগে প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয় করা যাবে না। ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পেতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্র জানায়, এ বছর গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন রবিশস্যের আবাদ হয়েছে ৩৩ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আলু ১ হাজার, তরমুজ ৫ হাজার ও বাকি জমিতে অন্যান্য রবিশস্যের আবাদ হয়েছে।
সরেজমিন ডাকুয়া ইউনিয়নের ফুলখালী গ্রামে মনিরুল ইসলাম মাষ্টারের ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, তার আলু ক্ষেত পানির নিচে সম্পূর্ণ তলিয়ে আছে। বৃষ্টির পানি জমে গাছগুলো ঝলসে মরে গেছে। ক্ষেতের আলু ক্ষেতেই পঁচে গেছে। আলু তোলার সময় বাকি ছিল আর মাত্র একসপ্তাহ। এর মধ্যেই এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষকদের সব আশা শেষ হয়ে গেছে।
শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, তিনি সাড়ে ৪ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ফলন ভালো হলেও তিনি একটি আলুও ঘরে তুলতে পারেননি।
পক্ষিয়া গ্রামের তরমুজ চাষী আবুল হোসেন জানান, প্রতি একর জমিতে তরমুজ আবাদ করতে সর্বনিম্ন খরচ হয় দেড় লাখ টাকা। তিনি প্রায় ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। এ হিসাবে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা খরচ হয় তার। আশা করেছিলেন তার লাভ হবে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা।
অসময়ে টানা বর্ষণে তার সব আশা এক ফুৎকারে নিভে যাওয়ায় তিনি এখন দিশেহারা। কৃষকরা রবি ফসলের অনিশ্চয়তায় এখন দিশেহারা। এনজিও, মহাজনদের দেনা পরিশোধ ও পরিবার পরিজনদের ভরণপোষণ নিয়ে তারা এখন রয়েছে মহাদুঃশ্চিন্তায়।