সারা দেশের প্রকৃতি এখন ছেয়ে আছে আম ও লিচুর মুকুলে। ফাল্গুনী হাওয়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে আমের মুকুল। গাছের শাখে শাখে আগুনরঙা ফুল। চারিদিকে স্বর্ণালী শোভা। যেমন তার সৌন্দর্য, তেমনি তার ঘ্রাণ। মুকুল ভরা ডালে পাতাদের হাতছানি।
মৌ মৌ গন্ধে গুন গুন সুরে মুকুলের ওপর মাতোয়ারা মৌমাছির দল। যে কারও প্রাণ জুড়িয়ে যাওয়ার মত পরিবেশ এখন জেলার সারা আগৈলঝাড়া উপজেলা ও আশপাশের এলাকা জুড়ে। বসন্তকালে ফুল ফোটার ভরা মৌসুমে গত বছরের চেয়ে এবছর অনেক বেশী পরিমাণ গাছে আম আর লিচুর মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে।
মৌসুমের শুরুতেই হালকা বৃষ্টি হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ছোট-বড় সব গাছে এবার ব্যাপক পরিমাণ মুকুল ধরেছে। বর্তমান আবহাওয়া আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে মৌসুমী ফল আম আর লিচুর উৎপাদন দ্বিগুণ হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ী চাষীরা বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক প্রয়োগ করে মুকুল আটকানো এবং পোকা দমনের চেষ্টা করছেন। এবছর শীত কম হওয়ায় এবং ফাল্গুনের আগেই কুয়াশা কেটে যাওয়ায় সব গাছেই বেশী করে মুকুল ধরেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে এখন বানিজ্যিকভাবে আম, লিচু ও কাঁঠালের চাষ করা হচ্ছে।
আগের তুলনায় এলাকায় ফলের বাগান ও চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যক্তিগত বাগানের পাশাপাশি বন বিভাগের উদ্যোগে সরকারী অফিস, বিভিন্ন সড়কের পাশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফাঁকা জায়গায় সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ রোপণ করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহের বৈরী আবহাওয়ায় আমের মুকুলের পরাগায়ণে বিঘ্ন, ছত্রাকজনিত রোগ ও পোকার আক্রমণে মুকুলে এনথ্রাকনোজ রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বৃষ্টির কারণে কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, ৯৯ ভাগ মুকুলে কোন গুটি হয়না। আবার বিভিন্ন কারণে গুটি হলেও তা ঝরে যায়। মাটিতে প্রয়োজনীয় রস না থাকলে গুটি ঝরে পরার হার বেড়ে যায়। এছাড়া বিরূপ প্রকৃতির কারণে আমের মুকুলের ক্ষতি হয়। যদিও এবার প্রচুর মুকুল এলেও ফলন নির্ভর করবে পরবর্তী আবহাওয়ার উপর। তবে মুকুল বেশী পরিমাণে ঝরে গেলে ওই গাছের গোড়ায় পানি দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়।