ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো নেই পাখিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • ৩১২ বার

কাকটা অনেক দিনের চেনা। তার ডাকের আলাদা ধরন আছে। সে রোজ আসে বাগানে তার সঙ্গীদের নিয়ে। কদিন থেকে দেখা যায়, সে বাগানের ঘেরার বাঁশের বাতাগুলো কামড়ে ছিড়ে ফেলতে চায়। পাতাবাহারের পাতা, ফুল ছিঁড়ে খুঁড়ে খেতে চায় এমন কি কখনো বাসার ভেতরে ঢুকে যেতে চায়।

পরিবেশের শোভা তারা। শহর কি গ্রাম-যেখানেই যান, মন ভরে যায় পাখির আগমনে। কত জাতের পাখি, কত বিচিত্র শব্দ করে। মুগ্ধ করে দৃষ্টিকে, মুগ্ধ করে মনকে। চোখ ফেরানোই দায়। কিন্তু তারা কি ভালো আছে? মানুষ তার নিজের ভালো থাকার চেষ্টায় পাখিদের কথা কি ভাবে?

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে বা আবাস গড়তে গিয়ে পাখিদের আবাস আর খাদ্যের কী ক্ষতি হয়েছে সেটি ভাবার ফুরসত কতটা আছে? কিছুদিন আগেও বট-পাকুরের ফল ছিল গাছগুলোতে। বিভিন্ন ধরনের কুল কিংবা বড়ই গাছ এখন ফলে ভরা খাকলেও তা বিষ স্প্রে করা। পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হওয়ায় আছে কড়া পাহারা, বসানো হয়েছে কাকতাড়–য়া। নদী অঞ্চলে কিছু খাবার থাকলেও বেশিরভাগ অঞ্চলে পাখিদের কোনো খাবার এ মুহূর্তে তেমন নাই। অনেক কষ্ট করে তাদের সংগ্রহ করতে হয়।

ঝুঁটি শালিকের দল বাগানের মাটি চষে বেড়ায় খাদ্যের জন্য। কখনো ঠোঁট দিয়ে মাটি খুঁড়ে কিছু বের করে আনতে চায়। কিন্তু পারে না। নিরাশ হয়ে গাছের ডালে বসে ক্রমাগত ডেকে চলে কিচিরমিচির করে।

রংপুর চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাসির আহমেদ বলেন, কয়েক বছর আগেও পাখিদের খাবারের কোনো সংকট ছিল না। এখন এ অঞ্চলে জলাশয় কমে গেছে। ফলে পানকৌড়ি, বকসহ জলচর প্রাণীদের খাবার কমে গেছে। পাশাপাশি বড় বড় গাছ-পালা উজাড় হয়ে যাওয়ায় অন্যান্য পাখিদের আবাসন ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

পাখিদের জন্য মন কাঁদে এমন মানুষ চোখে পড়ে হরহামেশাই। এদের একজন কুড়িগ্রামের ধামশ্রেণী গ্রামের আবিদুর রহমান। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকে যদি আমাদের খাবারে সাথে পাখিদের জন্য চিড়া, মোয়া, মুড়ি-মুড়কি বরাদ্দ রাখি তাহলে তাদের আপদকালীন সময়ে খাদ্য সংকট কেটে যাবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভালো নেই পাখিরা

আপডেট টাইম : ১২:১৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

কাকটা অনেক দিনের চেনা। তার ডাকের আলাদা ধরন আছে। সে রোজ আসে বাগানে তার সঙ্গীদের নিয়ে। কদিন থেকে দেখা যায়, সে বাগানের ঘেরার বাঁশের বাতাগুলো কামড়ে ছিড়ে ফেলতে চায়। পাতাবাহারের পাতা, ফুল ছিঁড়ে খুঁড়ে খেতে চায় এমন কি কখনো বাসার ভেতরে ঢুকে যেতে চায়।

পরিবেশের শোভা তারা। শহর কি গ্রাম-যেখানেই যান, মন ভরে যায় পাখির আগমনে। কত জাতের পাখি, কত বিচিত্র শব্দ করে। মুগ্ধ করে দৃষ্টিকে, মুগ্ধ করে মনকে। চোখ ফেরানোই দায়। কিন্তু তারা কি ভালো আছে? মানুষ তার নিজের ভালো থাকার চেষ্টায় পাখিদের কথা কি ভাবে?

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে বা আবাস গড়তে গিয়ে পাখিদের আবাস আর খাদ্যের কী ক্ষতি হয়েছে সেটি ভাবার ফুরসত কতটা আছে? কিছুদিন আগেও বট-পাকুরের ফল ছিল গাছগুলোতে। বিভিন্ন ধরনের কুল কিংবা বড়ই গাছ এখন ফলে ভরা খাকলেও তা বিষ স্প্রে করা। পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হওয়ায় আছে কড়া পাহারা, বসানো হয়েছে কাকতাড়–য়া। নদী অঞ্চলে কিছু খাবার থাকলেও বেশিরভাগ অঞ্চলে পাখিদের কোনো খাবার এ মুহূর্তে তেমন নাই। অনেক কষ্ট করে তাদের সংগ্রহ করতে হয়।

ঝুঁটি শালিকের দল বাগানের মাটি চষে বেড়ায় খাদ্যের জন্য। কখনো ঠোঁট দিয়ে মাটি খুঁড়ে কিছু বের করে আনতে চায়। কিন্তু পারে না। নিরাশ হয়ে গাছের ডালে বসে ক্রমাগত ডেকে চলে কিচিরমিচির করে।

রংপুর চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাসির আহমেদ বলেন, কয়েক বছর আগেও পাখিদের খাবারের কোনো সংকট ছিল না। এখন এ অঞ্চলে জলাশয় কমে গেছে। ফলে পানকৌড়ি, বকসহ জলচর প্রাণীদের খাবার কমে গেছে। পাশাপাশি বড় বড় গাছ-পালা উজাড় হয়ে যাওয়ায় অন্যান্য পাখিদের আবাসন ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

পাখিদের জন্য মন কাঁদে এমন মানুষ চোখে পড়ে হরহামেশাই। এদের একজন কুড়িগ্রামের ধামশ্রেণী গ্রামের আবিদুর রহমান। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকে যদি আমাদের খাবারে সাথে পাখিদের জন্য চিড়া, মোয়া, মুড়ি-মুড়কি বরাদ্দ রাখি তাহলে তাদের আপদকালীন সময়ে খাদ্য সংকট কেটে যাবে।’