ঢাকা ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সহজে শনাক্ত করা যায় না দাগিলেজ গাছআঁচড়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৮:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • ৩০২ বার

বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও ইরান পর্যন্ত। প্রাকৃতিক আবাসস্থল খোলা সরলবর্গীয় বন এবং নাতিশীতোষ্ণ বনাঞ্চল। এরা একাকী, জোড়ায় কিংবা ছোট দলে বিচরণ করে। হিংস নয়। অত্যন্ত চঞ্চল স্বভাবের পাখি। কাঠঠোকরা পাখির মতো গাছের খাড়া কাণ্ডে খুব দ্রুত হেঁটে উঠতে পারে। সারাদিন গাছের কাণ্ডে ঠোঁট চালিয়ে কীট-পতঙ্গ খুঁজে বেড়ায়। গাছ-গাছালিতে বিচরণকালে অনেক সময় ওদেরকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ ওদের গায়ের বর্ণ গাছের শুকনো ডালপালার সঙ্গে মিশে যায়, যার ফলে এ ধরনের ভ্রম তৈরি হয়। প্রজাতির বিচরণ দেশে সন্তোষজনক না হলেও বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়।
প্রিয় পাঠক, ভিন্ন প্রসঙ্গ এবার। লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা সানা উল্লাহ সানু একজন সংবাদকর্মী। এ ছাড়াও লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর ডটকম (অনলাইন) পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। তিনি একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষও। খুব যত্ন নিয়ে প্রকৃতিসংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করেন। প্রকৃতি নিয়ে কাজ করার সুবাদে আমাকে নিয়েও তার পত্রিকায় বড়সড় একটি ফিচার লিখেছেন পর্যন্ত। প্রকৃতিমনা এ সংবাদকর্মীর প্রতি রইল আমার ভালোবাসা। মূলত তার আগ্রহের কারণে আজকের এ লেখাটির অবতারণা।
পাখির বাংলা নাম: ‘দাগিলেজ গাছআঁচড়া’, ইংরেজি নাম: ‘বার-টেইলড ট্রিক্রিপার’ (Bar-tailed Treecreeper), বৈজ্ঞানিক নাম: Certhia himalayana। এরা ‘বাঁকা-ঠোঁট কীট-কুড়ানি’ নামেও পরিচিত।
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৪ সেন্টিমিটার। ওজন ৮ গ্রাম। গায়ের রং বাদামি-সাদা-লালচে ডোরাকাটা। ডানার প্রান্ত পালক ধূসর কালো। লেজ ডোরাকাটা। দেহতল হালকা বাদামি-সাদা। ঠোঁট লম্বা বাঁকানো, কালচে রঙের। পা কালচে।
প্রধান খাবার: কীট-পতঙ্গ, পোকামাকড়, মাকড়সা ইত্যাদি।
প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, তন্তু, শুকনো ঘাস, পালক ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৭ দিন।
লেখক: আলম শাইন, কথাসাহিত্যিক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ। alamshine@gmail.com

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সহজে শনাক্ত করা যায় না দাগিলেজ গাছআঁচড়া

আপডেট টাইম : ০৬:২৮:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও ইরান পর্যন্ত। প্রাকৃতিক আবাসস্থল খোলা সরলবর্গীয় বন এবং নাতিশীতোষ্ণ বনাঞ্চল। এরা একাকী, জোড়ায় কিংবা ছোট দলে বিচরণ করে। হিংস নয়। অত্যন্ত চঞ্চল স্বভাবের পাখি। কাঠঠোকরা পাখির মতো গাছের খাড়া কাণ্ডে খুব দ্রুত হেঁটে উঠতে পারে। সারাদিন গাছের কাণ্ডে ঠোঁট চালিয়ে কীট-পতঙ্গ খুঁজে বেড়ায়। গাছ-গাছালিতে বিচরণকালে অনেক সময় ওদেরকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ ওদের গায়ের বর্ণ গাছের শুকনো ডালপালার সঙ্গে মিশে যায়, যার ফলে এ ধরনের ভ্রম তৈরি হয়। প্রজাতির বিচরণ দেশে সন্তোষজনক না হলেও বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়।
প্রিয় পাঠক, ভিন্ন প্রসঙ্গ এবার। লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা সানা উল্লাহ সানু একজন সংবাদকর্মী। এ ছাড়াও লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর ডটকম (অনলাইন) পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। তিনি একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষও। খুব যত্ন নিয়ে প্রকৃতিসংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করেন। প্রকৃতি নিয়ে কাজ করার সুবাদে আমাকে নিয়েও তার পত্রিকায় বড়সড় একটি ফিচার লিখেছেন পর্যন্ত। প্রকৃতিমনা এ সংবাদকর্মীর প্রতি রইল আমার ভালোবাসা। মূলত তার আগ্রহের কারণে আজকের এ লেখাটির অবতারণা।
পাখির বাংলা নাম: ‘দাগিলেজ গাছআঁচড়া’, ইংরেজি নাম: ‘বার-টেইলড ট্রিক্রিপার’ (Bar-tailed Treecreeper), বৈজ্ঞানিক নাম: Certhia himalayana। এরা ‘বাঁকা-ঠোঁট কীট-কুড়ানি’ নামেও পরিচিত।
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৪ সেন্টিমিটার। ওজন ৮ গ্রাম। গায়ের রং বাদামি-সাদা-লালচে ডোরাকাটা। ডানার প্রান্ত পালক ধূসর কালো। লেজ ডোরাকাটা। দেহতল হালকা বাদামি-সাদা। ঠোঁট লম্বা বাঁকানো, কালচে রঙের। পা কালচে।
প্রধান খাবার: কীট-পতঙ্গ, পোকামাকড়, মাকড়সা ইত্যাদি।
প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, তন্তু, শুকনো ঘাস, পালক ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৭ দিন।
লেখক: আলম শাইন, কথাসাহিত্যিক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ। alamshine@gmail.com