৫ জানুয়ারি ঘিরে উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনীতি

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদের বাইরে থাকা প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি। উভয় দলই কৌশলী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ফলে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের রাজনীতি।

গত দুই বছরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন নিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠত। গত বছর ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মসূচি পালনে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উভয় দলের সমাবেশ করা নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিএনপিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়।

আর আওয়ামী লীগ রাজধানীসহ সারা দেশে বিজয় র‌্যালি ও সমাবেশ করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতায় গত বছর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

এবার বিএনপি ৫ জানুয়ারি সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল এবং ৭ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’হিসেবে পালন করবে বিএনপি। ওই দিন ঢাকার বাইরে সব জেলা ও উপজেলায় বিএনপি কালো পতাকা মিছিল এবং কালো ব্যাজ ধারণ করবে। পাশাপাশি দিনটি উপলক্ষে ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন তিনি।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করা হবে। গণতন্ত্রের বিজয় দিবসে আমরা ঢাকায় দুটি সমাবেশ করব। একটি সমাবেশ হবে রাসেল স্কয়ারে হবে। এটি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আয়োজনে হবে। অপরটি ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজনে সমাবেশ হবে। একই সঙ্গে তিনি ক্ষমতাসীন দলের জেলা শাখাগুলোকেও সমাবেশ করার আহ্বান জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক নেতা বলেন, বিএনপির জন্ম ও বিকাশই হয়েছে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে। সেই দল যখন গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচি পালন করে, এটা গণতন্ত্রের জন্য তামাশা ছাড়া আর কিছুই না। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা ভূমিকায় ৫ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে দেশে কি এখন গণতন্ত্রের অভিযাত্রা থাকত? সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা পাহাড় সমান অবিচল আস্থা নিয়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত মোকাবিলা করে গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছিলেন। এবারও আমরা ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করব। তবে বিএনপি বরাবরের মতোই তাদের কৌশলী ‍ভূমিকা নিয়েছে। তারা ৫ জানুয়ারির কর্মসূচিকে ঘিরে দেশে আবারও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আমরা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে তাদের সকল অপচেষ্টা কঠোরভাবে মোকাবিলা করব। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও বলেছেন, বিএনপিকে মাঠেই নামতে দেবে না সাধারণ জনগণ। বিএনপিও জাতীয় নির্বাচনের আগে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে যেকোনো মূল্যে মাঠ দখল করতে চায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর