বনসাই একটি জীবন্ত শিল্পকর্ম। এই শিল্পকর্মের এক-একটিতে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। দেশের বেকারদের অনেকেই এখন বনসাই তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।
শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্তদের কাছ থেকে জানা যায়, বনসাই গাছ দেখতে ছোট হলেও বেশ দামি। শিল্পকর্ম ভেদে এক ফুট লম্বা একটি বনসাই ১ লাখ টাকা থেকে দেড় লাখ টাকায় বিদেশে বিক্রি হয়। জাপানি ইড়হ শব্দ থেকে বনসাই এসেছে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি ও জার্মানিতে বনসাই শিল্পের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ঢাকা ও রাজশাহীতে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে বনসাই তৈরির শিল্প। ফলে দেখা দিয়েছে নতুন এক সম্ভাবনা। গত তিন বছরে বিভিন্ন দেশে এ গাছ রপ্তানি করে কয়েক কোটি টাকা আয় করেছেন বনসাই ব্যবসায়ীরা। ঢাকা বনসাই সোসাইটির সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বট, পাইকর, লাইকর, তমাল, বাগান বিলাস, কতবেল, থাইচেরি, ভাইরেনসহ অর্ধ শতাধিক প্রজাতির বনসাই পাওয়া যায়। এগুলো ব্রম, কেসকেড, সেমিকেসকেড, ইনফরমাল, ফরমাল, রুটওভারলক ও ল্যান্ডস্ক্যাপ আকারে প্রদর্শন করা হয়। তিনি বলেন, দেশে দুই শতাধিক বনসাই শিল্পী ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। আমরা প্রতি বছর নতুন নতুন বনসাই শিল্পী ও ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করছি। বনসাই সোসাইটির আয়োজনে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। বনসাই শিল্পী ইসরার আলী জানান, বনসাই তৈরি করে অনেক শিল্পী স্বাবলম্বী হয়েছেন। রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চলের জলবায়ু ও গাছপালা বনসাই চর্চার জন্য খুব উপযোগী। এ দুই জেলায় খুব সহজেই বনসাই তৈরি করা যায়। আরেক বনসাই শিল্পী শাহনাজ পারভিন জানান, মেয়েরা প্রশিক্ষণ নিয়ে বাসাবাড়ির ছাদে বা বারান্দায় সহজেই বনসাই তৈরি করে লাভবান হতে পারেন। অনেকে ১০ থেকে ১১ হাজার টাকায় বনসাই তৈরি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। গ্রিন রোডের বনসাই ব্যবসায়ী ইমরান আলম বলেন, এক-একটি বনসাই তৈরিতে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। বিক্রি করা যায় দেড় লাখ টাকায়। আমি এভাবে কয়েক বছরে মালয়েশিয়ায় এ গাছ রপ্তানি করে ৩৫ লাখ টাকা আয় করেছি। বনসাই ব্যবসায়ী আবদুর রব জানান, বেকার যুবকরা প্রশিক্ষণ পেয়ে বনসাই তৈরি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন ইচ্ছে করলেই এ শিল্পের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে বেকারদের জন্য আয়ের একটা বড় পথ করে দিতে পারেন।