ভাঙা যাবে না বিএনপি! মেজর অব. মো. আখতারুজ্জামান

বিএনপি একটি আদর্শের নাম। একটি বিশ্বাসের নাম। যারা যতই বিএনপিকে ভাঙার স্বপ্ন দেখুক বা ভাঙার চেষ্টা করুক তারা কখনোই সফল হবে না। অতীতেও চেষ্টা করা হয়েছে, দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দী রেখেও চেষ্টা করা হয়েছে। দু-দুবার দুজন মহাসচিব সরকারের প্রলোভনে বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে তারাই রাজনীতি থেকে হারিয়ে গেছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব দল থেকে বিতাড়িত হয়ে বিকল্প বিএনপি তৈরি করতে পারেননি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এককালের সদস্য কর্নেল অলি আহমদ বিএনপির বেশ কয়েকজন সদস্যকে বাগিয়ে নিয়েও রাজনীতির হালে পানি পাননি। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মওদুদ আহমদ বহুবার পালটি খেয়ে ম্যাডামের পায়ের নিচেই শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নেন। জেনারেল মাহবুবের কথা না হয় বাদই দিলাম। তিনি কখন কী বা কার জন্য সংস্কার করেন তা তিনি নিজেই বোধহয় ভালো করে জানেন না। প্রয়াত মান্নান ভূঁইয়াকে গাছে উঠিয়ে তিনি পগার পার হয়ে তাকে ফেলে মূল দলে ফিরে এসেছিলেন। স্থায়ী কমিটির ভাবুক সদস্য ড. মইন খানকে যে যখন যা বোঝাতে পারবে তিনি তখন তা নিয়েই কথা বলতে এগিয়ে যান। তার কথায় বিএনপিতে কখনো কিছু হয় না। ১৯৮১ সালের পর বিশেষ করে ’৮৪-উত্তর সেই মহাদুর্দিনে বিএনপির অনেক মহারথী বিএনপিকে অসহায় খালেদা জিয়ার কাছে ফেলে সরকারের উচ্ছিষ্ট খেতে চলে গিয়েছিলেন। তাতে বিএনপি ধ্বংস হয়ে যায়নি। হয়তো ম্যাডামকে সাময়িক কিছু কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল কিন্তু তিনি ঠিকই বিএনপিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বিএনপি তারুণ্যের দল। নতুন প্রজন্মের দল। ভয়ের কিছু নেই। বিএনপি একটি বিশাল বৃক্ষ। ঝড়-ঝাপটায় এই বৃক্ষের ছোট-বড় ডাল ভাঙতেই পারে। এমন কি বৃক্ষের মূল ডাল বা ডালের মাথাও ভেঙে যেতে পারে। কিন্তু তাতে বিএনপি নামক বিশাল বৃক্ষ ধ্বংস হয়ে যাবে না। এই দলের শিকড় অনেক গভীরে জনগণের মাঝে, যা জিয়াউর রহমান প্রোথিত করে গেছেন আর বেগম খালেদা জিয়া সুদীর্ঘ ৩৫ বছর সার-পানি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন বিএনপি নামক মহীরুহটিকে, যা আবহকাল বেঁচে থাকবে। বিএনপির প্রাণভোমরা বেগম খালেদা জিয়া আর প্রাণশক্তি তারেক রহমান। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে বিএনপি ততদিন থাকবে। বিএনপি বাংলাদেশের জনমানুষের দল। ধর্মীয় আদর্শে বিশ্বাসী ইসলামী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঐতিহাসিক সমন্বয়ের দল। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিশ্বস্ত রাজনীতির নাম বিএনপি। কোনো সন্দেহ নেই, সব প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃতে বিএনপি এগিয়ে যাবে। তারপর সামনে আছে তরুণ নেতৃত্ব তারেক রহমান। ষড়যন্ত্রকারীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে বিএনপি সামনে এগিয়ে যাবেই। ষড়যন্ত্রকারীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন বিএনপি ধ্বংস হবে না, হতে পারে না। তবে দলে পরিবর্তন আবশ্যক। আগাছা, পুরনো ও মরা ডালপালা ছাঁটাই না করলে বৃক্ষ যেমন সতেজ থাকে না, তেমনি দলের আগাছা, চাকর-বাকর, আপসকামী ও ষড়যন্ত্রকারীদের বাদ দেওয়া সময়ের চাহিদা আর না হলে দল হয়তো মুখ থুবড়ে পড়তে পারে! তবে ম্যাডাম সে বিষয়ে যে সজাগ তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। সব শেষে সরকারকে বলতে চাই, দল ভাঙার রাজনীতি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক শক্তির জন্য ভালো রাজনীতি নয় বলেই সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ রাখা হয়েছে। যদি দল ভাঙার রাজনীতি সরকার করতে চায় তাহলে সরকারকে প্রথমে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করতে হবে। সরকারের এখন প্রথম প্রয়োজন জনগণের আস্তা অর্জন করা। অন্যের দল থেকে নেতা বের করে আনা বা দল ভাঙার চেষ্টা করা চৌর্যবৃত্তি এবং বিশ্বাস ভঙ্গের অপরাধ, যা করা কোনো রাজনৈতিক সরকারের উচিত নয়। ভুল রাজনীতির কারণে দেশে অপরাজনীতির বিকাশ ঘটবে, যা গণতান্ত্রিক রাজনীতির ক্ষতি বয়ে আনবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর