প্রায় দুই মাস চিকিৎসা শেষে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল ছাড়ছেন সিলেটের কলেজ ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস। সোমবার সকালে তাকে এই চিকিৎসালয় থেকে সাভারের পক্ষাগাত গ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপিতে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার বাবা মাশুক মিয়া।
গত ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে চাপাতির কোপে আহত হন খাদিজা। মরণাপন্ন তরুণীতে তাৎক্ষণিক নেওয়া হয় সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরদিন ভোরে তাকে আনা হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। সেই দিনই তার মাথায় এক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়।
এই হাসপাতালে আনার পর খাদিজার বেঁচে উঠার সম্ভাবনা মাত্র পাঁচ শতাংশ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকর। কিন্তু অসামান্য জীবনিশক্তি দেখিয়ে সেরে উঠেন এই তরুণী।
৪ অক্টোবরের পর খাদিজার হাত ও মাথায় আরও একাধিকবার অস্ত্রোপচার করা হয়। গত শনিবার খাদিজাকে গণমাধ্যমের সামনে আনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খাদিজা বলেন, তিনি ভালো আছেন, পুরোপুরি সুস্থ হতে দেশবাসীর দোয়াও চান তিনি।
স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, খাদিজা অনেকটাই সেরে উঠলেও তার শরীরের বাম অংশ এখনও অনেকটাই অবশের মতো হয়ে আছে। এখন তাকে ফিজিওথেরাপি দিতে হবে। আর সিআরপিই সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
এর মধ্যে খাদিজার চিকিৎসা শেষ জানিয়ে তাকে চাইলে নিয়ে যাওয়া যাবে বলে স্বজনদের জানিয়ে দেয় স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘খাদিজাকে আরো আগেই রিলিজ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ঢাকায় তাদের থাকার জায়গা নেই তাই সাভারের সিআরপিতে একটি কক্ষ অথবা শয্যা না পাওয়া পর্যন্ত তারা এখান থেকে যেতে পারছে না।’
এই কক্ষ বা পাওয়ার খোঁজে রবিবার খাদিজার বাবা মাশুক মিয়া যান সাভারের সিআরপি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা এই তরুণীকে নিয়ে যেতে বলেছেন বলে জানান খাদিজার বাবা।
মাশুক মিয়া বলেন, ‘আইজ (রবিবার) আমার সাভারে যাওনের খথা আছিন। কিন্তু যাইতাম ফারছি না। তাগো লগে ফুনে খথা হইছে, কাইল (সোমবার) সখাল ১০টায় ইনশা আল্লাহ রওনা খরবো।’
দেশ জুড়ে আলোড়ন তোলা এই ঘটনায় খাদিজার চিকিৎসার পুরো খরচই বহন করেছে সরকার। গত প্রায় দুই মাসে হাসপাতালে থাকার বিল কতো হয়েছে, সে বিষয়ে বাবা মাসুক মিয়াকে কিছু জানানোও হয়নি। মাসুক মিয়া বলেন, ‘আমাকে এক টাকাও দিতে হইছে না।’