ঢাকা ০৪:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফগানিস্তানকে এবার ধবলধোলাইয়ের সুযোগ বাংলাদেশের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৩ বার

কীভাবে যেন ছড়িয়ে পড়েছে কথাটা, টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তান নাকি এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল। দুদিন আগে রশিদ খান দাবি করেছেন, মন্তব্যটা সংবাদমাধ্যমের তৈরি! এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়, নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের কাছে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে গেছে আফগানরা। এই পারফরম্যান্সে নিজেদের এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল দাবি করাও তো কঠিন।

আরব আমিরাত আফগানিস্তানের কাছে দ্বিতীয় ঘর। ২০ ওভারের ক্রিকেটে আফগানদের সমীহ করে না, পৃথিবীতে এমন দল পাওয়া কঠিন। সেই আফগানিস্তানকে এবার মরুতে টানা হারিয়েই চলেছে বাংলাদেশ। আবুধাবিতে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে হারিয়েছিলেন জাকের-সোহানরা। শারজায় দ্বিপক্ষীয় সিরিজেও টানা দুই ম্যাচে জিতল বাংলাদেশ। আজ একই মাঠে জয়ের ধারা অব্যাহত থাকলে একটি ‘প্রথমে’র সাক্ষী হবেন জাকেররা। ২০ ওভারের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো আফগানদের ধবলধোলাই। এটা করতে পারলে পুরোনো একটা ক্ষতে প্রলেপও পড়বে। ২০১৮ সালের জুনে দেরাদুনে আফগানিস্তানের কাছে ৩-০ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানের আগমন বাংলাদেশের অনেক পরে হলেও গত এক দশকে দুই দলের ব্যবধান অনেক কমে এসেছে। বরং আফগানদের বড় হুমকি মনে করে বাংলাদেশ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে রশিদ-মুজিবদের মতো বিশ্বমানের স্পিন বোলিং যেমন ধাঁধায় ফেলে দেয় বাংলাদেশের ব্যাটারদের। তেমনি সাম্প্রতিক সময়ে আফগান ব্যাটারদের পাওয়ার হিটিং দক্ষতা কঠিন পরীক্ষায় ফেলে বাংলাদেশের বোলারদের। তবে এবার মরুতে আফগানিস্তান একবারও পেরে ওঠেনি বাংলাদেশের বিপক্ষে।

এই সিরিজে বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে, তাতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করা কঠিন নয়। চিন্তা শুধু হঠাৎ ব্যাটিংধস নিয়ে। দুই ম্যাচ জিতলেও দুটিতেই ভয় ধরিয়ে দেওয়া ব্যাটিংধস দেখেছে বাংলাদেশ। তবে নুরুল হাসান সোহানের অসাধারণ ফিনিশিংয়ে ম্যাচ হাতছাড়া হয়নি। প্রথম ম্যাচে ১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১১.৪ ওভারে ১০৯ রান তুলে বাংলাদেশকে সহজ জয়ের পথে রাখেন পারভেজ হোসেন ইমন এবং তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু এরপর ৯ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট পতনে হারের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান ১৩ বলে ২৩ এবং রিশাদ হোসেনের ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংসে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় ২৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে মিডল অর্ডারে জাকের আলী ও শামীম হোসেনের ৫৬ রানের জুটিতে চাপমুক্ত হয়। পরে ফিনিশার হিসেবে জয় নিশ্চিত করেন সোহান। তিনি খেলেন ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংস।

এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ে খুশি নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া জাকের আলী। পরশু তিনি বলেছেন, ‘সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ায় ভালো লাগছে। দল হিসেবে গত দুই ম্যাচে ভালো খেলেছি। বোলাররা ভালো করেছে। বোলাররা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। আমরা ইতিবাচক ছিলাম।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে যে ‘রোমাঞ্চকর ও আক্রমণাত্মক’ ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ, তাতে খুশি বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি বোলিং। বোলাররা। যেভাবে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আটকে ফেলছেন প্রতিপক্ষকে, এক কথায় তা অসাধারণ। বাংলাদেশ ম্যাচ হারছে শুধুই ব্যাটিংব্যর্থতায়। যেদিন ব্যাটিং-বোলিং দুটিই ক্লিক করছে, সেদিন জয় নিশ্চিত হচ্ছে। একই সূত্রে আজ আফগানদের ধবলধোলাই করতে শারজায় খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে নিয়মিত একাদশে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান সিরিজেও পরিবর্তন অব্যাহত রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্টে। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ একাদশে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আফগানিস্তানকে এবার ধবলধোলাইয়ের সুযোগ বাংলাদেশের

আপডেট টাইম : ১১:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

কীভাবে যেন ছড়িয়ে পড়েছে কথাটা, টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তান নাকি এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল। দুদিন আগে রশিদ খান দাবি করেছেন, মন্তব্যটা সংবাদমাধ্যমের তৈরি! এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়, নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের কাছে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে গেছে আফগানরা। এই পারফরম্যান্সে নিজেদের এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল দাবি করাও তো কঠিন।

আরব আমিরাত আফগানিস্তানের কাছে দ্বিতীয় ঘর। ২০ ওভারের ক্রিকেটে আফগানদের সমীহ করে না, পৃথিবীতে এমন দল পাওয়া কঠিন। সেই আফগানিস্তানকে এবার মরুতে টানা হারিয়েই চলেছে বাংলাদেশ। আবুধাবিতে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে হারিয়েছিলেন জাকের-সোহানরা। শারজায় দ্বিপক্ষীয় সিরিজেও টানা দুই ম্যাচে জিতল বাংলাদেশ। আজ একই মাঠে জয়ের ধারা অব্যাহত থাকলে একটি ‘প্রথমে’র সাক্ষী হবেন জাকেররা। ২০ ওভারের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো আফগানদের ধবলধোলাই। এটা করতে পারলে পুরোনো একটা ক্ষতে প্রলেপও পড়বে। ২০১৮ সালের জুনে দেরাদুনে আফগানিস্তানের কাছে ৩-০ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানের আগমন বাংলাদেশের অনেক পরে হলেও গত এক দশকে দুই দলের ব্যবধান অনেক কমে এসেছে। বরং আফগানদের বড় হুমকি মনে করে বাংলাদেশ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে রশিদ-মুজিবদের মতো বিশ্বমানের স্পিন বোলিং যেমন ধাঁধায় ফেলে দেয় বাংলাদেশের ব্যাটারদের। তেমনি সাম্প্রতিক সময়ে আফগান ব্যাটারদের পাওয়ার হিটিং দক্ষতা কঠিন পরীক্ষায় ফেলে বাংলাদেশের বোলারদের। তবে এবার মরুতে আফগানিস্তান একবারও পেরে ওঠেনি বাংলাদেশের বিপক্ষে।

এই সিরিজে বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে, তাতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করা কঠিন নয়। চিন্তা শুধু হঠাৎ ব্যাটিংধস নিয়ে। দুই ম্যাচ জিতলেও দুটিতেই ভয় ধরিয়ে দেওয়া ব্যাটিংধস দেখেছে বাংলাদেশ। তবে নুরুল হাসান সোহানের অসাধারণ ফিনিশিংয়ে ম্যাচ হাতছাড়া হয়নি। প্রথম ম্যাচে ১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১১.৪ ওভারে ১০৯ রান তুলে বাংলাদেশকে সহজ জয়ের পথে রাখেন পারভেজ হোসেন ইমন এবং তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু এরপর ৯ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট পতনে হারের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান ১৩ বলে ২৩ এবং রিশাদ হোসেনের ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংসে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় ২৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে মিডল অর্ডারে জাকের আলী ও শামীম হোসেনের ৫৬ রানের জুটিতে চাপমুক্ত হয়। পরে ফিনিশার হিসেবে জয় নিশ্চিত করেন সোহান। তিনি খেলেন ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংস।

এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ে খুশি নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া জাকের আলী। পরশু তিনি বলেছেন, ‘সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ায় ভালো লাগছে। দল হিসেবে গত দুই ম্যাচে ভালো খেলেছি। বোলাররা ভালো করেছে। বোলাররা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। আমরা ইতিবাচক ছিলাম।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে যে ‘রোমাঞ্চকর ও আক্রমণাত্মক’ ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ, তাতে খুশি বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি বোলিং। বোলাররা। যেভাবে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আটকে ফেলছেন প্রতিপক্ষকে, এক কথায় তা অসাধারণ। বাংলাদেশ ম্যাচ হারছে শুধুই ব্যাটিংব্যর্থতায়। যেদিন ব্যাটিং-বোলিং দুটিই ক্লিক করছে, সেদিন জয় নিশ্চিত হচ্ছে। একই সূত্রে আজ আফগানদের ধবলধোলাই করতে শারজায় খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে নিয়মিত একাদশে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান সিরিজেও পরিবর্তন অব্যাহত রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্টে। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ একাদশে।