আগামী ৩১ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের পোস্টার-লিফলেটে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। সেই সঙ্গে মাইকে চলছে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তবে ভোটররা বলছেন, প্রতীক দেখে নয়, বরং সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই এবার ভোট দিতে চান তারা। সব মিলিয়ে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ পুরো পৌর এলাকায়। পাকুন্দিয়ায় এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নতুন পৌরসভা হিসেবে উন্নয়ন-অবকাঠামোতে পিছিয়ে থাকলেও, নির্বাচন ঘিরে উৎসবের কমতি নেই। সবাই চাইছে এমন একজন মেয়র নির্বাচিত হোক, যার হাত ধরে এগিয়ে যাবে নতুন পৌরসভাটি।
৩১ অক্টোবরে পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচন জমে উঠেছে
৩১ অক্টোবরে পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচন জমে উঠেছে
প্রার্থীদের মধ্যে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মেসবা উদ্দিন এবং ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন বিএনপি থেকে মনোনয়নবঞ্চিত ও সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান খোকন। কাউন্সিলর পদে যারা প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন, তারা হলেন ১নং ওয়ার্ডে গোলাপ মিয়া, তৌফিকুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন দুলাল, রুহুল আমীন, শফিকুল ইসলাম আরিফ, ২নং ওয়ার্ডে রাকিবুল আলম ছোটন, ফরিদ উদ্দিন, স্বপন মিয়া, মোহাম্মদ শাহ আলম, ৩ নং ওয়ার্ডে হাছান মামুন, আ. মমিন, আ. কাইয়ুম, আ. আহাদ, আবুল কালাম শাহীন, ৪ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, শামীম, মোবারক হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ডে আমিনুল হক মানিক, মোহাম্মদ আসাদ মিয়া, শরিফুল ইসলাম সুজন, শরীফ আশরাফী, রফিকুল ইসলাম রিপন, আক্তারুজ্জামান সোহেল, জাহাঙ্গীর আলম, ৬ নং ওয়ার্ডে আজিজুল হক কামাল, মকবুল হোসেন, সোহাগ মিয়া, সিদ্দীক হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ডে শহিদুল্লাহ, হারুন অর রশিদ, কফিল উদ্দিন, সাফি উদ্দিন, লাল মিয়া, হাসিম উদ্দিন, ৮ নং ওয়ার্ডে উজ্জ্বল মিয়া, মোছলেহ উদ্দিন, সিদ্দিক হোসেন রিপন, জহিরুল ইসলাম, ৯ নং ওয়ার্ডে আ. বাতেন, ফজলুল হক, মোস্তফা কামাল। সংরক্ষিত আসনের প্রতিদ্বন্দ্বীরা হচ্ছেন- এক নম্বর আসনে মাহাবুবা সুলতানা, রেহেনা, সেলিনা আক্তার, শোভা আক্তার সাইফুল খাতুন। দুই নম্বর আসনে মোমেনা জাহান, উম্মে কুলসুম, তাসলিমা সুলতানা এবং তিন নম্বর আসনে দিলোয়ারা, রোকিয়া বেগম ও আফরোজা খাতুন।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসাবে পৌর মেয়র প্রার্থীরা ইতিমধ্যে পথসভা, মিছিল-মিটিং করেছেন। বিএনপি প্রার্থী বর্তমান মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন (ধানের শীষ) এর পক্ষে বৃহস্পতিবার পৌরসদর ঈদগাহ প্রাঙ্গণে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. শাফিউদ্দিন মেম্বারের সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল আলম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আমিরুজ্জামান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম। এসময়, বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের জেলা ও উপজেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান খোকন (নারিকেল গাছ) এর পক্ষে শুক্রবার পৌরসদর ঈদগাহ প্রাঙ্গণে বিশাল পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া, পাকুন্দিয়া বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আমিনুল হক দুলাল, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান মাসুদ, উপজেলা যুবদলের সহ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসসহ উপজেলা বিএনপির প্রবীণ নেতৃবৃন্দ।
পৌর এলাকার সাধারণ ভোটাররা জানান, প্রার্থীর যোগ্যতা ও সক্ষমতা এবং অতীত কর্মকাণ্ড বিচার করেই মেয়র প্রার্থীকে বেছে নেওয়া হবে। দলীয় নির্বাচন হলেও কেবল দলীয় বিবেচনায় নয়, নাগরিক সেবা ও এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন- এমন যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করার কথা ভাবছেন সাধারণ ভোটাররা। বিরাজমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন পৌরবাসী।