ঢাকা ০৩:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজকে পাস হচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ১৬ বার

বড় ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পাস হচ্ছে আজ রবিবার। আজ সকালে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রস্তাবিত বাজেটটি চূড়ান্ত করা হবে। এরপর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাজেট পাস হবে। নিয়ম অনুযায়ী নতুন বাজেট কার্যকর করা হবে ১ জুলাই থেকে। প্রতিবছর বাজেট নিয়ে সংসদে তুমুল তর্ক-বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের মধ্যে। এখন যেহেতু সংসদ কার্যকর নেই, তাই এ নিয়ে কোনো আলোচনাও নেই।

সংসদ না থাকায় গত ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট জাতির সামনে উপস্থাপন করেন। ওই সময়ের পর থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সব পেশা ও শ্রেণির মানুষের মতামত, পরামর্শ ও এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়। সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটের কিছু বিষয়ে আপত্তি এলেও তেমন বড় কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি, ঢালাওভাবে বহুল আলোচিত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হচ্ছে না, আমদানি-রপ্তানিসহ কয়েকটি খাতে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানা গেছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ ২২ জুন রবিবার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নতুন এই বাজেট পাস করা হবে। তার আগে অর্থবিলে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

জানা গেছে, এর আগে চরম আর্থিক সংকট এবং বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও অতীতের সরকারের মতোই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বিশাল আকারের বাজেট ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। যেখানে ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। যদিও এ বাজেটের মোট আকার চলতি বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। মানুষের আয় বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নের তেমন কোনো বিশদ পরিকল্পনার উল্লেখ নেই প্রস্তাবিত বাজেটে। যদিও বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’। অতীতের সরকারেরাও এ রকম বৈষম্যহীন সমাজ ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে এসেছিল যুগ যুগ ধরে। অথচ প্রকৃত অর্থে সে সময়ে মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বদলায় সমাজ ব্যবস্থা, উন্নয়ন হয়নি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের। কমেনি অনিয়ম-দুর্নীতিও। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত বাজেটের মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, শর্তসাপেক্ষে করহার বাড়িয়ে শুধু আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, কালো টাকা সাদা করতে নয়, অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ আহ্বান তাদের।

এদিকে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে অনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক উল্লেখ করে তা পুরোপুরি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। স্বাধীনতার পর থেকেই জাতীয় বাজেটে বহুল আলোচিত এমন অর্থ সাদা করার বিধান রাখা হচ্ছে। সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও খুব সামান্য অংশই কর দিয়ে সাদা করা হয়। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না থাকলেও জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা শিথিলতা রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এটি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। তবে এটি ঢালাওভাবেও থাকবে না। নির্দিষ্ট কিছু খাতে থাকবে। আগে ১৫ শতাংশ অর্থ দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। এখন সেটি থাকছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এমন সিদ্ধান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিধান রেখেই বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআর সূত্র বলছে, এক্ষেত্রে বর্তমান করহার বাড়তে পারে কয়েকগুণ। অন্যদিকে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনের কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী বাজারমূল্যে দলিল নিবন্ধন করার বিধানও রাখা হচ্ছে। আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি, কালো টাকা নয়, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চান তারা। এক্ষেত্রে মৌজা মূল্যে নিবন্ধন ফি রাখার দাবিও তাদের। এ প্রসঙ্গে রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, বিদেশ থেকে অনেক সময় পাঠানো টাকার ডিক্লেয়ারেশন দেন না প্রবাসীরা। এই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। সম্প্রতি সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে আবাসন খাতে ব্যবসায় অনেকটা মন্দা যাচ্ছে। অনেক প্লট এখনও অবিক্রীত অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে গত এক বছর ধরে এই খাতে ব্যবসা একেবারেই নেই বললেই চলে। রিহ্যাবের ব্যবসায়ীরা এখানে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তার কোনো রিটার্ন পাচ্ছেন না।

এ পরিস্থিতিতে সরকার যদি এ খাতে অপ্রদর্শিত (কালো টাকা) অর্থ বিনিয়োগ করার বিদ্যমান সুবিধা বাতিল করে দেয় তবে তাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তারা আরও বলেন, এ খাতে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করছেন, তারাও বেকার হয়ে পড়বে। এতে করে সমাজে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই সরকারের কাছে রিহ্যাব নেতারা অনুরোধ করেনÑ আগামী বাজেটে বিদ্যমান সুবিধা যেন প্রত্যাহার করে না নেওয়া হয়।

তবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে অনৈতিক ও অলাভজনক বলছেন অর্থনীতিবিদরা। আবাসন খাতে মৌজা ও বাজারমূল্যের জটিলতা নিরসনের পরামর্শ তাদের। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক নয়। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও এটি কোনো সুফল আনবে না। তাই যে মূল্যগুলো স্থির করা হয়, সেগুলোকে বাজারের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। তাহলে কালো টাকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমানো সম্ভব হবে। এনবিআর সূত্র বলছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৮৫৯ ব্যক্তি ৪৭ হাজার কোটি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজকে পাস হচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট

আপডেট টাইম : ১০:১৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

বড় ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পাস হচ্ছে আজ রবিবার। আজ সকালে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রস্তাবিত বাজেটটি চূড়ান্ত করা হবে। এরপর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাজেট পাস হবে। নিয়ম অনুযায়ী নতুন বাজেট কার্যকর করা হবে ১ জুলাই থেকে। প্রতিবছর বাজেট নিয়ে সংসদে তুমুল তর্ক-বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের মধ্যে। এখন যেহেতু সংসদ কার্যকর নেই, তাই এ নিয়ে কোনো আলোচনাও নেই।

সংসদ না থাকায় গত ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট জাতির সামনে উপস্থাপন করেন। ওই সময়ের পর থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সব পেশা ও শ্রেণির মানুষের মতামত, পরামর্শ ও এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়। সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটের কিছু বিষয়ে আপত্তি এলেও তেমন বড় কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি, ঢালাওভাবে বহুল আলোচিত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হচ্ছে না, আমদানি-রপ্তানিসহ কয়েকটি খাতে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানা গেছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ ২২ জুন রবিবার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নতুন এই বাজেট পাস করা হবে। তার আগে অর্থবিলে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

জানা গেছে, এর আগে চরম আর্থিক সংকট এবং বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও অতীতের সরকারের মতোই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বিশাল আকারের বাজেট ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। যেখানে ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। যদিও এ বাজেটের মোট আকার চলতি বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। মানুষের আয় বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নের তেমন কোনো বিশদ পরিকল্পনার উল্লেখ নেই প্রস্তাবিত বাজেটে। যদিও বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’। অতীতের সরকারেরাও এ রকম বৈষম্যহীন সমাজ ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে এসেছিল যুগ যুগ ধরে। অথচ প্রকৃত অর্থে সে সময়ে মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বদলায় সমাজ ব্যবস্থা, উন্নয়ন হয়নি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের। কমেনি অনিয়ম-দুর্নীতিও। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত বাজেটের মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, শর্তসাপেক্ষে করহার বাড়িয়ে শুধু আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, কালো টাকা সাদা করতে নয়, অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ আহ্বান তাদের।

এদিকে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে অনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক উল্লেখ করে তা পুরোপুরি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। স্বাধীনতার পর থেকেই জাতীয় বাজেটে বহুল আলোচিত এমন অর্থ সাদা করার বিধান রাখা হচ্ছে। সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও খুব সামান্য অংশই কর দিয়ে সাদা করা হয়। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না থাকলেও জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা শিথিলতা রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এটি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। তবে এটি ঢালাওভাবেও থাকবে না। নির্দিষ্ট কিছু খাতে থাকবে। আগে ১৫ শতাংশ অর্থ দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। এখন সেটি থাকছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এমন সিদ্ধান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিধান রেখেই বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআর সূত্র বলছে, এক্ষেত্রে বর্তমান করহার বাড়তে পারে কয়েকগুণ। অন্যদিকে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনের কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী বাজারমূল্যে দলিল নিবন্ধন করার বিধানও রাখা হচ্ছে। আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি, কালো টাকা নয়, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চান তারা। এক্ষেত্রে মৌজা মূল্যে নিবন্ধন ফি রাখার দাবিও তাদের। এ প্রসঙ্গে রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, বিদেশ থেকে অনেক সময় পাঠানো টাকার ডিক্লেয়ারেশন দেন না প্রবাসীরা। এই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। সম্প্রতি সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে আবাসন খাতে ব্যবসায় অনেকটা মন্দা যাচ্ছে। অনেক প্লট এখনও অবিক্রীত অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে গত এক বছর ধরে এই খাতে ব্যবসা একেবারেই নেই বললেই চলে। রিহ্যাবের ব্যবসায়ীরা এখানে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তার কোনো রিটার্ন পাচ্ছেন না।

এ পরিস্থিতিতে সরকার যদি এ খাতে অপ্রদর্শিত (কালো টাকা) অর্থ বিনিয়োগ করার বিদ্যমান সুবিধা বাতিল করে দেয় তবে তাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তারা আরও বলেন, এ খাতে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করছেন, তারাও বেকার হয়ে পড়বে। এতে করে সমাজে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই সরকারের কাছে রিহ্যাব নেতারা অনুরোধ করেনÑ আগামী বাজেটে বিদ্যমান সুবিধা যেন প্রত্যাহার করে না নেওয়া হয়।

তবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে অনৈতিক ও অলাভজনক বলছেন অর্থনীতিবিদরা। আবাসন খাতে মৌজা ও বাজারমূল্যের জটিলতা নিরসনের পরামর্শ তাদের। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক নয়। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও এটি কোনো সুফল আনবে না। তাই যে মূল্যগুলো স্থির করা হয়, সেগুলোকে বাজারের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। তাহলে কালো টাকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমানো সম্ভব হবে। এনবিআর সূত্র বলছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৮৫৯ ব্যক্তি ৪৭ হাজার কোটি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন।