ঢাকা ০৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২০:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • ১৭ বার

যেসব সংস্কার প্রস্তাব মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করতে পারে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশসমূহ নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম. সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

সভায় জানানো হয়, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনআকাঙ্খা পূরণে যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, সেগুলোর সুপারিশ সরকারের কাছে দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান সংশ্লিষ্ট ও বৃহৎ সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। তবে যেসব প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নিজেরাই বাস্তবায়ন করতে সক্ষম, সেগুলো দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২৫ মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে একটি পত্র প্রেরণ করে। সভায় জানানো হয়, পাঁচটি সংস্কার কমিশন থেকে প্রাপ্ত মোট ১২১টি আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের নয়টি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৩৮টি, দুর্নীতি দমন কমিশনের ৪৩টি, পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাব চিহ্নিত করা হয়েছে।

১৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাব। এই ১৮টি প্রস্তাবের মধ্যে আটটি অপেক্ষাকৃত সহজে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এগুলো হলো : ১. মহাসড়কের পেট্রোল পাম্পে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট স্থাপন, ২. মন্ত্রণালয়গুলোর ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক করা, ৩. কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন, ৪. বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা, ৫. সকল সরকারি দপ্তরে নির্দিষ্ট বিরতিতে গণশুনানি, ৬. তথ্য অধিকার আইন ও অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট পর্যালোচনা, ৭. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে পরিসংখ্যান কমিশনে রূপান্তর, ৮. ডিজিটাল রূপান্তর ও ই-সার্ভিস জোরদার।
আগামী এক মাসের মধ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে অবহিত করবে। সভায় এসব প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরকে বাস্তবায়নে করণীয় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বলা হয়, প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ নিজস্ব বাস্তবায়ন টিম গঠন করবে এবং কার্যক্রম তদারকির জন্য জিআইইউ-এর অধীনে একটি কেন্দ্রীয় তদারকি ইউনিট কাজ করবে। পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও এ কার্যক্রম মনিটরিং করবে।

সভায় আরও জানানো হয়, সরকার ইতোমধ্যে ৫৪টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এক হাজার ৬১টি সংস্কার ও উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমও বাস্তবায়নে নেওয়া হবে নিয়মিত সভা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে নিয়মিত এই ধরনের সভা আয়োজন করা হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ

আপডেট টাইম : ১১:২০:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

যেসব সংস্কার প্রস্তাব মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করতে পারে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশসমূহ নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম. সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

সভায় জানানো হয়, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনআকাঙ্খা পূরণে যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, সেগুলোর সুপারিশ সরকারের কাছে দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান সংশ্লিষ্ট ও বৃহৎ সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। তবে যেসব প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নিজেরাই বাস্তবায়ন করতে সক্ষম, সেগুলো দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২৫ মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে একটি পত্র প্রেরণ করে। সভায় জানানো হয়, পাঁচটি সংস্কার কমিশন থেকে প্রাপ্ত মোট ১২১টি আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের নয়টি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৩৮টি, দুর্নীতি দমন কমিশনের ৪৩টি, পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাব চিহ্নিত করা হয়েছে।

১৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাব। এই ১৮টি প্রস্তাবের মধ্যে আটটি অপেক্ষাকৃত সহজে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এগুলো হলো : ১. মহাসড়কের পেট্রোল পাম্পে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট স্থাপন, ২. মন্ত্রণালয়গুলোর ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক করা, ৩. কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন, ৪. বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা, ৫. সকল সরকারি দপ্তরে নির্দিষ্ট বিরতিতে গণশুনানি, ৬. তথ্য অধিকার আইন ও অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট পর্যালোচনা, ৭. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে পরিসংখ্যান কমিশনে রূপান্তর, ৮. ডিজিটাল রূপান্তর ও ই-সার্ভিস জোরদার।
আগামী এক মাসের মধ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে অবহিত করবে। সভায় এসব প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরকে বাস্তবায়নে করণীয় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বলা হয়, প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ নিজস্ব বাস্তবায়ন টিম গঠন করবে এবং কার্যক্রম তদারকির জন্য জিআইইউ-এর অধীনে একটি কেন্দ্রীয় তদারকি ইউনিট কাজ করবে। পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও এ কার্যক্রম মনিটরিং করবে।

সভায় আরও জানানো হয়, সরকার ইতোমধ্যে ৫৪টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এক হাজার ৬১টি সংস্কার ও উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমও বাস্তবায়নে নেওয়া হবে নিয়মিত সভা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে নিয়মিত এই ধরনের সভা আয়োজন করা হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।