ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোগান্তি ছাড়াই ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় দলে দলে ফিরছে মানুষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
  • ২৫ বার

ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি প্রায় শেষ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল টানা ১০ দিনের ছুটি। আজ শুক্রবার ছুটির নবম দিন। ঈদের ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। সবাই পরিবার নিয়ে স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন। অন্যদিকে, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঈদে ছুটি না পাওয়ায় অনেকেই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছাড়ছেন।

শুক্রবার (১৩ জুন) গাবতলী বাস টার্মিনাল ও আমিনবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীতে বাসে প্রবেশ ও প্রস্থান—দুই দিকেই যাত্রীর সংখ্যা প্রায় সমান। গতকাল ভোর ও রাতে কিছুটা চাপ থাকলেও সারাদিনে পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। বেশির ভাগ বাসেই যাত্রী অর্ধেকের মতো। কাউন্টার মাস্টাররা বলছেন, অনেকে এখনও ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন, আবার ফিরেও আসছেন অনেকে।

গাবতলী বাস টার্মিনালে প্রবেশের শুরুতেই থাকা হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার থেকে ঢাকা পোস্টকে জানানো হয়, এখনো প্রচুর পরিমাণে লোকজন ঢাকার বাইরে যাচ্ছে। ভোরের দিকের বাসগুলোতে যাত্রীসংখ্যা একটু বেশি থাকে। এরপর সকাল দশটা থেকে মোটামুটি বিকাল পর্যন্ত যাত্রীর চাপ একটু কম থাকে। তবে বিকাল-সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্তর গাড়িগুলোতে ঈদের ছাড়া স্বাভাবিক দিনগুলোর মতোই যাত্রী আছে।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে সড়ক থেকে নির্দিষ্ট সময় পর পর বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। ৪০/৪৫ সিটের বাসগুলোতে ১৫-২০ জন করে যাত্রী রয়েছেন।

সকাল ১০টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে শ্যামলী এন. আর. ট্রাভেলসের একটি নন-এসি বাস ছেড়ে যায়। জানতে চাইলে বাসের হেলপার নজরুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাসে এই মুহূর্তে ১২ জনের মত যাত্রী আছে। আরও যাত্রী পথে পাওয়া যাবে। যাওয়া আসায় যাত্রী সংখ্যা প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। আসার সময় একদম যাত্রী ভরে আসে। তবে যাওয়ার সময় কিছু সিট খালি থাকে।

বাসের যাত্রী খবির আহমেদ বলেন, আমি একটি বাসায় কেয়ারটেকারের কাজ করি। ঈদে তো প্রায় সব ভাড়াটিয়ারায় চলে গিয়েছিল বাড়িতে। ফলে বাড়ি পাহারা দিতে তখন আর মালিক ছুটি দেয়নি। এখন ভাড়াটিয়ার আসতে শুরু করেছেন। এখন ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।

এদিকে আমিনবাজার সেতু পার হয়ে কিছু সময় পরপরই ঢাকায় প্রবেশ করছে বিভিন্ন কোম্পানির বাসগুলো। বাসগুলো আসার পথে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নামালেও বেশি সংখ্যক যাত্রীদেরই আমিনবাজার সেতু পার হয়ে কাউন্টারগুলোর সামনে নামতে দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে দশটার দিকে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাস গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের বিপরীত পাশে কাউন্টারের সামনে এসে। গাড়ির চালক ঢাকা পোস্টকে জানান, গতকাল রাতে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে মাত্র ঢাকায় আসলাম। বাস যাত্রী বোঝাই ছিল। আশুলিয়া, সাভারসহ বিভিন্ন গন্তব্যে তারা নেমেছে।

তিনি আরও জানান, গত ২/১ দিন যাবত দিনাজপুর যাওয়ার সময়ও মোটামুটি ভলোই যাত্রী হচ্ছে।

বাসের যাত্রী নীরব হাসান বলেন, আসার সময় কোন যানজটে পড়তে হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা ফাঁকা ছিল, দূরের পথ হলেও দ্রুত আসা গেছে। আমাদের বাস ভর্তি যাচ্ছে ছিল।

প্রসঙ্গত, ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারী ছুটি আগামীকাল ১৪ জুন পর্যন্ত হওয়ায় এখন পর্যন্ত রাজধানীমুখী যাত্রা রয়েছে স্বস্তিকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ। মানুষজন আরও দুই তিন দিন আগে থেকেই রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন। আগামী ১৫ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্ম দিবস শুরু হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভোগান্তি ছাড়াই ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় দলে দলে ফিরছে মানুষ

আপডেট টাইম : ১০:৫৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি প্রায় শেষ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল টানা ১০ দিনের ছুটি। আজ শুক্রবার ছুটির নবম দিন। ঈদের ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। সবাই পরিবার নিয়ে স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন। অন্যদিকে, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঈদে ছুটি না পাওয়ায় অনেকেই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছাড়ছেন।

শুক্রবার (১৩ জুন) গাবতলী বাস টার্মিনাল ও আমিনবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীতে বাসে প্রবেশ ও প্রস্থান—দুই দিকেই যাত্রীর সংখ্যা প্রায় সমান। গতকাল ভোর ও রাতে কিছুটা চাপ থাকলেও সারাদিনে পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। বেশির ভাগ বাসেই যাত্রী অর্ধেকের মতো। কাউন্টার মাস্টাররা বলছেন, অনেকে এখনও ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন, আবার ফিরেও আসছেন অনেকে।

গাবতলী বাস টার্মিনালে প্রবেশের শুরুতেই থাকা হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার থেকে ঢাকা পোস্টকে জানানো হয়, এখনো প্রচুর পরিমাণে লোকজন ঢাকার বাইরে যাচ্ছে। ভোরের দিকের বাসগুলোতে যাত্রীসংখ্যা একটু বেশি থাকে। এরপর সকাল দশটা থেকে মোটামুটি বিকাল পর্যন্ত যাত্রীর চাপ একটু কম থাকে। তবে বিকাল-সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্তর গাড়িগুলোতে ঈদের ছাড়া স্বাভাবিক দিনগুলোর মতোই যাত্রী আছে।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে সড়ক থেকে নির্দিষ্ট সময় পর পর বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। ৪০/৪৫ সিটের বাসগুলোতে ১৫-২০ জন করে যাত্রী রয়েছেন।

সকাল ১০টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে শ্যামলী এন. আর. ট্রাভেলসের একটি নন-এসি বাস ছেড়ে যায়। জানতে চাইলে বাসের হেলপার নজরুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাসে এই মুহূর্তে ১২ জনের মত যাত্রী আছে। আরও যাত্রী পথে পাওয়া যাবে। যাওয়া আসায় যাত্রী সংখ্যা প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। আসার সময় একদম যাত্রী ভরে আসে। তবে যাওয়ার সময় কিছু সিট খালি থাকে।

বাসের যাত্রী খবির আহমেদ বলেন, আমি একটি বাসায় কেয়ারটেকারের কাজ করি। ঈদে তো প্রায় সব ভাড়াটিয়ারায় চলে গিয়েছিল বাড়িতে। ফলে বাড়ি পাহারা দিতে তখন আর মালিক ছুটি দেয়নি। এখন ভাড়াটিয়ার আসতে শুরু করেছেন। এখন ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।

এদিকে আমিনবাজার সেতু পার হয়ে কিছু সময় পরপরই ঢাকায় প্রবেশ করছে বিভিন্ন কোম্পানির বাসগুলো। বাসগুলো আসার পথে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নামালেও বেশি সংখ্যক যাত্রীদেরই আমিনবাজার সেতু পার হয়ে কাউন্টারগুলোর সামনে নামতে দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে দশটার দিকে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাস গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের বিপরীত পাশে কাউন্টারের সামনে এসে। গাড়ির চালক ঢাকা পোস্টকে জানান, গতকাল রাতে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে মাত্র ঢাকায় আসলাম। বাস যাত্রী বোঝাই ছিল। আশুলিয়া, সাভারসহ বিভিন্ন গন্তব্যে তারা নেমেছে।

তিনি আরও জানান, গত ২/১ দিন যাবত দিনাজপুর যাওয়ার সময়ও মোটামুটি ভলোই যাত্রী হচ্ছে।

বাসের যাত্রী নীরব হাসান বলেন, আসার সময় কোন যানজটে পড়তে হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা ফাঁকা ছিল, দূরের পথ হলেও দ্রুত আসা গেছে। আমাদের বাস ভর্তি যাচ্ছে ছিল।

প্রসঙ্গত, ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারী ছুটি আগামীকাল ১৪ জুন পর্যন্ত হওয়ায় এখন পর্যন্ত রাজধানীমুখী যাত্রা রয়েছে স্বস্তিকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ। মানুষজন আরও দুই তিন দিন আগে থেকেই রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন। আগামী ১৫ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্ম দিবস শুরু হবে।