বিষখালী নদীর কোল ঘেঁষে বরগুনার বেতাগী সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বেতাগীর গ্রামের রাস্তা অমাবশ্যার জোতে আংশিক ভেঙে যায়। রাস্তার ভাঙা অংশে অমাবশ্যার জোতে জোয়ারের অতিরিক্ত পানি প্রবেশ করে কৃষকদের উঠতি মৌসুমের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় জনপদ বেতাগীতে গত দুই দিনে পানিতে ভেসে গেছে মরিচ, বাদাম, মুগ ডাল ও বোরো ধানের বীজতলা। চাষিরা উঠতি ফসল ঘরে তুলতে না পারায় চরম হতাশা ও দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে।
সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অমাবশ্যার জোয়ারে ও ভারি বৃষ্টিতে বিষখালী নদীর পানির চাপে সদর ইউনিয়নের উত্তর বেতাগীর বেড়িবাঁধ রাস্তায় কয়েকটি গর্ত তৈরি হয়। এতে জোয়ারে অতিরিক্ত পানিতে তলিয়ে যায় বেতাগী সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝোপখালী গ্রামের আংশিক এলাকা। পানির নিচে তলিয়ে যায় বোরো ধানের বীজতলা, মুগ ডাল, বাদাম, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, ডাটাশাক, করলা, শষা ও মরিচ।
মাঠ ভরা উঠতি ফসলে কৃষকের স্বপ্নও ছিল অনেক।
সময় অনুযায়ী আর ১০-১৫ দিন পর পানিতে তলিয়ে না গেলে এসব ফসল ঘরে তুলতে পারত। বিক্রি করে ধারদেনা পরিশোধ করতে পারত। কিন্তু কৃষকের সেই সোনালী স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা ভেঙে জোয়ারে পানির নিচে রয়েছে ৭৫ হেক্টর ইরি ধানের বীজতলা, ৫৫ হেক্টর চিনাবাদাম, ৭০ হেক্টর মরিচ, ৩৫ হেক্টর মুগ ডাল ও ৭৪ হেক্টর জমির পুঁইশাক, ডাটা শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি।
কৃষক বেল্লাল হোসেন বলেন, বোরো ধানের বীজ বপনের পরই পানিতে ডুবে যায় এবং ১০-১২ দিন পানিতে বীজতলা তলিয়ে থাকায় বীজতলা পচন ধরছে।
উত্তর বেতাগী গ্রামের আব্দুল খালেক হাওলাদার বলেন, মুগ ডাল, মরিচ ও বাদাম ক্ষেতে রয়ে গেছে। সব মুগ ডাল, বাদাম ও মরিচগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এত ক্ষতি কী দিয়ে পূরণ করব। একই কথা বললেন, উত্তর বেতাগী গ্রামের কৃষক মো. নাসির উদ্দিন।
তিনি জানান, ধারদেনা করে মুগ ডাল, বাদাম ও করলা চাষ করা হয়েছে। কিন্তু ফসল তোলার কয়েক দিন আগে পানিতে নষ্ট হয়ে গেল।এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, ‘কৃষকদের কাছে উপ-সহকারী পাঠিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পানি অপসারিত না হওয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে তথ্য প্রেরণ করা হবে।