ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি, ‘লাগাতার অসহযোগ’ আন্দোলনের ঘোষণা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৬:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • ২৫ বার

এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজস্ব প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২১ মে) থেকে সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে লাগাতার অসহযোগিতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

পাশাপাশি তাদের তিনটি প্রধান দাবি হলো— জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা।

১২ মে সরকার এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারি করে। এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এসব দাবি জানিয়েছে।

এর আগে দুপুরে এনবিআর কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা।

আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এত বড় প্রশাসনিক পরিবর্তন অত্যন্ত গোপন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি এনবিআরের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মতামত না নিয়েই অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত করা হয়। ফলে এর স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

এর আগে ১৪-১৫ ও ১৭-১৯ মে পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন দফতরে আংশিক কলমবিরতি পালন করা হয়। তবে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সভার কারণে কর্মসূচি এক দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল।

সভায় আলোচনার পর হতাশ প্রতিনিধিদল

২০ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ওই সভায় অংশ নেয়। সভায় অর্থ উপদেষ্টা ছাড়াও দু’জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্য, এনবিআরের সাবেক সদস্য, অর্থ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান।

প্রতিনিধিদলের অভিযোগ, ১৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র দু’জনকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। অর্থ উপদেষ্টা সভার শুরুতেই জানান, তিনি দীর্ঘ আলোচনা করবেন না এবং ছয় থেকে সাত মিনিটের মধ্যে বক্তব্য শেষ করতে হবে।

সভায় রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বলেন, জারিকৃত অধ্যাদেশ তাদের সুপারিশের প্রতিফলন নয়। তারা এনবিআর অক্ষুণ্ন রেখে কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই নতুন দুই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নির্ধারণের পক্ষে মত দেন। অন্যদিকে সভায় উপস্থিত দু’জন উপদেষ্টা অধ্যাদেশের পক্ষে অবস্থান নেন।

সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা গণমাধ্যমকে জানান, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই অধ্যাদেশ জারি হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে। তবে পরামর্শক কমিটির মাধ্যমে কিছু বিষয় সমন্বয়ের চেষ্টা করা হবে। এমনকি তিনি এ–ও বলেন, আন্দোলন চলমান থাকবে কি না, তাতে কিছু আসে–যায় না। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ বলেছে, সভায় কথার সুযোগ না দিয়ে একতরফাভাবে ‘ফলপ্রসূ’ বলার প্রচেষ্টা তাদের আহত করেছে।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আন্দোলন আরও সংগঠিত করার লক্ষ্যে এনবিআরের তিন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। বৃহস্পতিবার গ্রেড-১০ ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সচিবালয়-কেন্দ্রিক সকল সংগঠন বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে রিট

এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি, ‘লাগাতার অসহযোগ’ আন্দোলনের ঘোষণা

আপডেট টাইম : ০৪:২৬:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজস্ব প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২১ মে) থেকে সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে লাগাতার অসহযোগিতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

পাশাপাশি তাদের তিনটি প্রধান দাবি হলো— জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা।

১২ মে সরকার এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারি করে। এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এসব দাবি জানিয়েছে।

এর আগে দুপুরে এনবিআর কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা।

আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এত বড় প্রশাসনিক পরিবর্তন অত্যন্ত গোপন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি এনবিআরের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মতামত না নিয়েই অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত করা হয়। ফলে এর স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

এর আগে ১৪-১৫ ও ১৭-১৯ মে পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন দফতরে আংশিক কলমবিরতি পালন করা হয়। তবে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সভার কারণে কর্মসূচি এক দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল।

সভায় আলোচনার পর হতাশ প্রতিনিধিদল

২০ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ওই সভায় অংশ নেয়। সভায় অর্থ উপদেষ্টা ছাড়াও দু’জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্য, এনবিআরের সাবেক সদস্য, অর্থ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান।

প্রতিনিধিদলের অভিযোগ, ১৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র দু’জনকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। অর্থ উপদেষ্টা সভার শুরুতেই জানান, তিনি দীর্ঘ আলোচনা করবেন না এবং ছয় থেকে সাত মিনিটের মধ্যে বক্তব্য শেষ করতে হবে।

সভায় রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বলেন, জারিকৃত অধ্যাদেশ তাদের সুপারিশের প্রতিফলন নয়। তারা এনবিআর অক্ষুণ্ন রেখে কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই নতুন দুই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নির্ধারণের পক্ষে মত দেন। অন্যদিকে সভায় উপস্থিত দু’জন উপদেষ্টা অধ্যাদেশের পক্ষে অবস্থান নেন।

সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা গণমাধ্যমকে জানান, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই অধ্যাদেশ জারি হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে। তবে পরামর্শক কমিটির মাধ্যমে কিছু বিষয় সমন্বয়ের চেষ্টা করা হবে। এমনকি তিনি এ–ও বলেন, আন্দোলন চলমান থাকবে কি না, তাতে কিছু আসে–যায় না। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ বলেছে, সভায় কথার সুযোগ না দিয়ে একতরফাভাবে ‘ফলপ্রসূ’ বলার প্রচেষ্টা তাদের আহত করেছে।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আন্দোলন আরও সংগঠিত করার লক্ষ্যে এনবিআরের তিন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। বৃহস্পতিবার গ্রেড-১০ ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।