শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
সংগঠনটির সভপতি এবিএম আব্দুস সাত্তার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে জানানো হয়, সরকার জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা আনার নামে একটি কঠোর আইন প্রনয়ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনপ্রশাসনে যেকোনো স্তরে বৈষম্য নিরসন ও ন্যায়বিচার প্রাপ্যতা সব কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার। অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলার কিংবা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে প্রণীত কোনো আইন আমরা মেনে নিতে পারি না। এ বিষয়ে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমানে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে কর্মরত অধিকাংশ কর্মকর্তা দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, এলাকাপ্রীতি ইত্যাদিতে জড়িত। অদক্ষতা, অতিকথন, মিথ্যাচার এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হওয়ায় তারা জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের আস্থা হারিয়েছেন। ফলে প্রশাসনে স্থবিরতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এসব কর্মকর্তাদের অপসারণ করার জন্য সুনিদিষ্ট তথ্যসহ তালিকা সরকারের কাছে জমা দিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য যে, বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার অনৈতিক, স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা ও অবৈধ হস্তক্ষেপের কারণে এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনে ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও ‘ওপেন সিক্রেট’- এ পরিণত হয়েছে; যা দেশ ও জাতির জন্য চরম অবমাননাকর ও লজ্জাজনক। প্রশাসনের মাঝে ঘাপটি মেরে বসে থাকা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত এবং নিয়মিত চাকুরিতে নিয়োজিত হাসিনার দোসর একটি চক্র গোটা প্রশাসনকে সরকারের মুখোমুখি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কতিপয় উপদেষ্টা Allocation of business/Rules of business মানছেন না। সব নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণকারী ব্যক্তি, আওয়ামী দোসর এবং নানাভাবে বিতর্কিত অনাভিজ্ঞ লোকদের প্রশাসনে ও বিভিন্ন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাতে চাকরিরত এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের মেধাবীরা হতাশ ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এতে সচেতন নাগরিকরা ক্রমান্বয়ে প্রতিবাদ মুখর হয়েছে। ফলে ন্যায্য দাবির আদায়ের জন্য প্রতিবাদী কণ্ঠ স্তব্ধ করার জন্যে যে কালো আইন জারির প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে, তা থেকে বিরত থাকার জন্যে প্রধান উপদেষ্টা কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
আইন করে জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ স্বৈরাচারের দোসর অন্যান্য সচিবদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে অভিজ্ঞতা, প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং সার্বিক দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে এবং প্রশাসনের সব স্তরে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানিয়ে সংগঠনটির বিবৃতিতে অবিলম্বে দুর্নীতিপরায়ণ বিতর্কিত শীর্ষ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি জানানো হয়। তা না হলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ তারা বেছে নেবেন বলে জানিয়েছেন। বৈষম্যের শিকার সব কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে ফোরামের পরবর্তী সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।