ঢাকা ০৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশকে প্রধান উপদেষ্টা ‘যুদ্ধাবস্থায় আছি, সজাগ থাকতে হবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ১২ বার

দেশে এই মুহূর্তে এক ধরনের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে পুলিশকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা যুদ্ধাবস্থায় আছি। অশুভ শক্তি আমাদের স্বপ্ন ও ঐক্য ভেঙে দিতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে চেষ্টা করছে। একে প্রতিহত করতে পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী জনরোষের শিকার হয়, যার কারণে অনেক সৎ অফিসারকেও মাশুল দিতে হয়েছে।’

স্বৈরাচার পতনের পর পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়েছিল উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশকে উজ্জীবিত করতে। পুলিশের কাজের সহায়ক পরিস্থিতি যাতে তৈরি হয়, সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তার দিক থেকে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। নারী ও শিশু নিরাপত্তা পেলেই দেশ আরও এগিয়ে যাবে। সব স্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় পুলিশকে ভূমিকা পালন করতে হবে।’

‘বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে, পুলিশ এই স্বপ্ন পূরণের মূল শক্তি’ বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্বৈরাচার আমলে পুলিশ জনগণের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছিল তা কমিয়ে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, মানুষ ও পুলিশের মধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলা, যাতে মানুষ পুলিশকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে।’

এ সময় চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, সেজন্য পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ ও ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন,‘ভবিষ্যতে যাতে পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনী ও অন্যায় কাজে ব্যবহার করা না যায় সেজন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের আগের সময়টা অনেকটা কঠিন, পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে পরাজিত শক্তি যেন কোনোভাবেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে।’

নায্যতার ভিত্তিতে গঠিত বৈষম্যমুক্ত দেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখছি, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগ যেন আমরা না হারাই। এবার ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজম্মের কাছে চিরজীবনের জন্য দায়ী থাকব।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও পুলিশ প্রধান বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশকে প্রধান উপদেষ্টা ‘যুদ্ধাবস্থায় আছি, সজাগ থাকতে হবে

আপডেট টাইম : ০৬:৩৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

দেশে এই মুহূর্তে এক ধরনের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে পুলিশকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা যুদ্ধাবস্থায় আছি। অশুভ শক্তি আমাদের স্বপ্ন ও ঐক্য ভেঙে দিতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে চেষ্টা করছে। একে প্রতিহত করতে পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী জনরোষের শিকার হয়, যার কারণে অনেক সৎ অফিসারকেও মাশুল দিতে হয়েছে।’

স্বৈরাচার পতনের পর পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়েছিল উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশকে উজ্জীবিত করতে। পুলিশের কাজের সহায়ক পরিস্থিতি যাতে তৈরি হয়, সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তার দিক থেকে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। নারী ও শিশু নিরাপত্তা পেলেই দেশ আরও এগিয়ে যাবে। সব স্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় পুলিশকে ভূমিকা পালন করতে হবে।’

‘বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে, পুলিশ এই স্বপ্ন পূরণের মূল শক্তি’ বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্বৈরাচার আমলে পুলিশ জনগণের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছিল তা কমিয়ে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, মানুষ ও পুলিশের মধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলা, যাতে মানুষ পুলিশকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে।’

এ সময় চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, সেজন্য পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ ও ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন,‘ভবিষ্যতে যাতে পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনী ও অন্যায় কাজে ব্যবহার করা না যায় সেজন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের আগের সময়টা অনেকটা কঠিন, পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে পরাজিত শক্তি যেন কোনোভাবেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে।’

নায্যতার ভিত্তিতে গঠিত বৈষম্যমুক্ত দেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখছি, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগ যেন আমরা না হারাই। এবার ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজম্মের কাছে চিরজীবনের জন্য দায়ী থাকব।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও পুলিশ প্রধান বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।