বাংলাদেশ-নেপাল বাণিজ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। ভারত হঠাৎ করে বাংলাদেশের পণ্যের তৃতীয় দেশে যাওয়ার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলেও থেমে নেই বাংলাবান্ধা দিয়ে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম। বিশেষ করে কৃষিপণ্য—যেমন আলু—রপ্তানির ক্ষেত্রে এ বন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর ফলে একদিকে যেমন দেশের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে ৩৭৮ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে নেপালে। কোয়ারেন্টিন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেন জানিয়েছেন, এই আলুগুলো রপ্তানি করেছে থিংকস টু সাপ্লাই, হাবিব ইন্টারন্যাশনাল ও ঈশান অ্যাগ্রো ফার্মসহ আরও বেশ কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, যেমন—মিয়ামি ড্রেডিং, হুসেন এন্টারপ্রাইজ, স্বাধীন এন্টারপ্রাইজ ও ক্রসেস অ্যাগ্রো। এর আগে ১৭ এপ্রিল, একই বন্দর দিয়ে ২৭৩ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়। এখন পর্যন্ত এ পথেই ৪,৮৭২ মেট্রিক টনেরও বেশি আলু রপ্তানি হয়েছে নেপালে।
এই আলুগুলো মূলত উত্তরের চার জেলা—পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুর—থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব এলাকার কৃষকরা বর্তমানে সরাসরি আন্তর্জাতিক বাজারে অংশ নিতে পারছেন, যার ফলে তাঁদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হচ্ছে। শুধু আলুই নয়, বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ও নেপালে পাট, ওষুধ, জুস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি ও ইলেকট্রনিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে নিয়মিত। অপরদিকে, আমদানি হচ্ছে মসুর ডাল, গম, ভুট্টা, চিরতা, হাজমলা, যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক দানা, আদা ও চিটাগুড়সহ বিভিন্ন পণ্য।
যদিও গত ৮ এপ্রিল ভারত বাংলাদেশের পণ্যের তৃতীয় দেশে পরিবহনের সুবিধা বাতিল করেছে, যার ফলে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের সঙ্গে সহজ বাণিজ্যপথ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে; তবুও বাংলাবান্ধা বন্দর হয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। এটি প্রমাণ করে, নিজেদের সংযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বহির্বিশ্বের সঙ্গে আরও গভীর ও সাশ্রয়ী বাণিজ্য গড়ে তুলতে পারে।