ঢাকা ০৮:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাটির মানুষ, রাষ্ট্রপতি বাবাকে নিয়ে অটোরিকশা চালালেন এমপি তৌফিক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৭:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৬
  • ৪১৭ বার

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্ম নেয়া সেই যুবকটিকে সবাই একনামে ডাকতেন ‘হামিদ’ বলে। কিন্তু আজ তার দেশজোড়া তার সম্মান। হাওয়াবাসীর সেই প্রিয়মুখ এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।
হাওরের জলকাদা গায়ে মেখে তার বেড়ে উঠা তিনিও ছিলেন আর পাঁচজন শিশুর মত। অন্য সাধারণ কিশোরের মতোই বড় হয়েছেন এলাকায়। পড়ালেখা শেষ করে যুবকটি শুরু করেন কর্মজীবন।

১৯৭০ সালে সবচেয়ে কম বয়সে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। হাওরের নির্ভৃত পল্লী কামালপুর থেকে যার যাত্রা শুরু হাওরবাসীর প্রিয় সেই সেই লোকটিই এখন দেশের রাষ্ট্রপতি। তবে রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানে থাকলেও তিনি ভুলে যাননি জন্মভূতির প্রিয় হাওরকে।

১৩ জানুয়ারি বুধবার তিনদিনের সফরে কিশোরগঞ্জে যান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ওই দিন দুপুর দুটায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে মিঠামইনে নামেন।

বৃহস্পতিবার সফরের দ্বিতীয় দিনে নদী পথে রাষ্ট্রপতি ঢাকি, ঘাগড়া ও কাটখাল ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে দেখেন। তিনি চলমান কালনী-কুশিয়ারা নদী খনন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব সম্পদ বড়ুয়া, জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফর উল্লাহ, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান প্রমুখ।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর আবদুল হামিদ বেশ কয়েকবার গেছেন মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে তার নিজের বাড়িতে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করলেও এবার মূলত রাষ্ট্রপতি নিজ বাড়িতে কিছুটা সময় কাটাবেন।

মূলত, নিজ এলাকার মানুষকে দেখতে, তাদের সঙ্গে কথা বলতেই হাওরে ছুটে গিছেন রাষ্ট্রপতি।

বুধবার মিঠামইন গিয়েই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন রাষ্ট্রপতি। হেলিপ্যাড থেকে নেমে সোজা চলে যান বড় ভাইয়ের নামে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক কলেজ পরিদর্শন করতে।এরপর তিনি অটোরিকশায় চেপে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত তমিজা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। বাবাকে নিয়ে এসময় অটোরিকশা চালাচ্ছিলেন তার বড় ছেলে এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক।

এ সময় রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার ইচ্ছে করে বার বার আপনাদের মাঝে ছুটে আসি। কিন্তু পারি না। বঙ্গভবনে কঠোর প্রহরার মধ্যে থাকি। এখানে এলেও হাজার হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রহরার মধ্যে থাকতে হয়। ইচ্ছে করে বাড়িতে একা একা ঘুমাতে।আপনাদের সাথে প্রাণখুলে কথা বলতে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আগের মতো যদি বাড়িতে একা একা থাকতে পারতাম, তবে খুব ভালো লাগতো।’

শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে বঙ্গভবনের উদ্দেশ্যে রওনা করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে তিনি এলাকার স্বজনদের সাথে সময় কাটাবেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মাটির মানুষ, রাষ্ট্রপতি বাবাকে নিয়ে অটোরিকশা চালালেন এমপি তৌফিক

আপডেট টাইম : ০১:৩৭:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্ম নেয়া সেই যুবকটিকে সবাই একনামে ডাকতেন ‘হামিদ’ বলে। কিন্তু আজ তার দেশজোড়া তার সম্মান। হাওয়াবাসীর সেই প্রিয়মুখ এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।
হাওরের জলকাদা গায়ে মেখে তার বেড়ে উঠা তিনিও ছিলেন আর পাঁচজন শিশুর মত। অন্য সাধারণ কিশোরের মতোই বড় হয়েছেন এলাকায়। পড়ালেখা শেষ করে যুবকটি শুরু করেন কর্মজীবন।

১৯৭০ সালে সবচেয়ে কম বয়সে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। হাওরের নির্ভৃত পল্লী কামালপুর থেকে যার যাত্রা শুরু হাওরবাসীর প্রিয় সেই সেই লোকটিই এখন দেশের রাষ্ট্রপতি। তবে রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানে থাকলেও তিনি ভুলে যাননি জন্মভূতির প্রিয় হাওরকে।

১৩ জানুয়ারি বুধবার তিনদিনের সফরে কিশোরগঞ্জে যান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ওই দিন দুপুর দুটায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে মিঠামইনে নামেন।

বৃহস্পতিবার সফরের দ্বিতীয় দিনে নদী পথে রাষ্ট্রপতি ঢাকি, ঘাগড়া ও কাটখাল ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে দেখেন। তিনি চলমান কালনী-কুশিয়ারা নদী খনন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব সম্পদ বড়ুয়া, জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফর উল্লাহ, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান প্রমুখ।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর আবদুল হামিদ বেশ কয়েকবার গেছেন মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে তার নিজের বাড়িতে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করলেও এবার মূলত রাষ্ট্রপতি নিজ বাড়িতে কিছুটা সময় কাটাবেন।

মূলত, নিজ এলাকার মানুষকে দেখতে, তাদের সঙ্গে কথা বলতেই হাওরে ছুটে গিছেন রাষ্ট্রপতি।

বুধবার মিঠামইন গিয়েই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন রাষ্ট্রপতি। হেলিপ্যাড থেকে নেমে সোজা চলে যান বড় ভাইয়ের নামে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক কলেজ পরিদর্শন করতে।এরপর তিনি অটোরিকশায় চেপে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত তমিজা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। বাবাকে নিয়ে এসময় অটোরিকশা চালাচ্ছিলেন তার বড় ছেলে এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক।

এ সময় রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার ইচ্ছে করে বার বার আপনাদের মাঝে ছুটে আসি। কিন্তু পারি না। বঙ্গভবনে কঠোর প্রহরার মধ্যে থাকি। এখানে এলেও হাজার হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রহরার মধ্যে থাকতে হয়। ইচ্ছে করে বাড়িতে একা একা ঘুমাতে।আপনাদের সাথে প্রাণখুলে কথা বলতে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আগের মতো যদি বাড়িতে একা একা থাকতে পারতাম, তবে খুব ভালো লাগতো।’

শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে বঙ্গভবনের উদ্দেশ্যে রওনা করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে তিনি এলাকার স্বজনদের সাথে সময় কাটাবেন তিনি।