ঢাকা ১০:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭ বার

বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। দেশের দ্রুতগতির ইন্টারনেট খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে এই অনুমোদন। সরকারের বিনিয়োগ-সংক্রান্ত সংস্থা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) প্রতিষ্ঠানটিকে এ অনুমোদন দিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিডা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি জানান, ঈদের আগে গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈদেশিক কোনো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করতে চাইলে বিডা থেকে নিবন্ধন নেওয়া বাধ্যতামূলক। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে স্টারলিংক।

বর্তমানে দেশের ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি সাবমেরিন কেব্লনির্ভর। সমুদ্রতলদেশ দিয়ে ফাইবার অপটিক তারের মাধ্যমে আনা ব্যান্ডউইডথ মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা (আইএসপি) গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়। তবে দুর্গম ও গ্রামীণ অঞ্চলে এখনো নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এই প্রেক্ষাপটে স্টারলিংকের আগমন হতে পারে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন। কারণ, স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা আসে স্যাটেলাইট থেকে, যা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপিত হাজার হাজার উপগ্রহের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এতে করে দেশের যেকোনো প্রান্তে, এমনকি দুর্গম পাহাড় কিংবা নদীবেষ্টিত চরে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছানো সম্ভব হবে।

স্টারলিংকের মূল প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। ২০১৫ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ২০১৯ সালে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টারলিংকের ৬ হাজার ৯৯৪টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয়েছে, যেগুলো পৃথিবী থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার ওপরে ঘূর্ণমান অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ১০০ টির বেশি দেশে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় ভুটানে।

সেবাটি ব্যবহার করতে গ্রাহককে একটি বিশেষ ডিভাইস বা ডিশ অ্যান্টেনা স্থাপন করতে হবে, যা স্যাটেলাইটের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকবে। এরপর সেই অ্যান্টেনার সঙ্গে যুক্ত একটি রাউটার ব্যবহার করে গ্রাহক ঘরে বসেই উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা উপভোগ করতে পারবেন। স্টারলিংকের ইন্টারনেট গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ডাউনলোড স্পিড ২৫ থেকে ২২০ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ৫ থেকে ২০ এমবিপিএস পর্যন্ত হতে পারে। বেশির ভাগ ব্যবহারকারী গড়ে ১০০ এমবিপিএসের বেশি গতি পান।

অন্যদিকে গত জানুয়ারিতে ইন্টারনেট স্পিড বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান ওকলা জানায়, বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গড় ডাউনলোড গতি ৪০ এমবিপিএসের নিচে এবং আপলোড গতি ১৩ এমবিপিএস। ব্রডব্যান্ডের গড় ডাউনলোড স্পিড ৫১ এমবিপিএস, আপলোড ৪৯ এমবিপিএস হলেও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ক্ষেত্রবিশেষে অনেক কম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক

আপডেট টাইম : ১০:৫৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। দেশের দ্রুতগতির ইন্টারনেট খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে এই অনুমোদন। সরকারের বিনিয়োগ-সংক্রান্ত সংস্থা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) প্রতিষ্ঠানটিকে এ অনুমোদন দিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিডা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি জানান, ঈদের আগে গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈদেশিক কোনো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করতে চাইলে বিডা থেকে নিবন্ধন নেওয়া বাধ্যতামূলক। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে স্টারলিংক।

বর্তমানে দেশের ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি সাবমেরিন কেব্লনির্ভর। সমুদ্রতলদেশ দিয়ে ফাইবার অপটিক তারের মাধ্যমে আনা ব্যান্ডউইডথ মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা (আইএসপি) গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়। তবে দুর্গম ও গ্রামীণ অঞ্চলে এখনো নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এই প্রেক্ষাপটে স্টারলিংকের আগমন হতে পারে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন। কারণ, স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা আসে স্যাটেলাইট থেকে, যা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপিত হাজার হাজার উপগ্রহের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এতে করে দেশের যেকোনো প্রান্তে, এমনকি দুর্গম পাহাড় কিংবা নদীবেষ্টিত চরে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছানো সম্ভব হবে।

স্টারলিংকের মূল প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। ২০১৫ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ২০১৯ সালে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টারলিংকের ৬ হাজার ৯৯৪টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয়েছে, যেগুলো পৃথিবী থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার ওপরে ঘূর্ণমান অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ১০০ টির বেশি দেশে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় ভুটানে।

সেবাটি ব্যবহার করতে গ্রাহককে একটি বিশেষ ডিভাইস বা ডিশ অ্যান্টেনা স্থাপন করতে হবে, যা স্যাটেলাইটের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকবে। এরপর সেই অ্যান্টেনার সঙ্গে যুক্ত একটি রাউটার ব্যবহার করে গ্রাহক ঘরে বসেই উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা উপভোগ করতে পারবেন। স্টারলিংকের ইন্টারনেট গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ডাউনলোড স্পিড ২৫ থেকে ২২০ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ৫ থেকে ২০ এমবিপিএস পর্যন্ত হতে পারে। বেশির ভাগ ব্যবহারকারী গড়ে ১০০ এমবিপিএসের বেশি গতি পান।

অন্যদিকে গত জানুয়ারিতে ইন্টারনেট স্পিড বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান ওকলা জানায়, বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গড় ডাউনলোড গতি ৪০ এমবিপিএসের নিচে এবং আপলোড গতি ১৩ এমবিপিএস। ব্রডব্যান্ডের গড় ডাউনলোড স্পিড ৫১ এমবিপিএস, আপলোড ৪৯ এমবিপিএস হলেও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ক্ষেত্রবিশেষে অনেক কম।