ঢাকা ০৭:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিবিসি বাংলাকে অধ্যাপক ইউনূস ‘একটা পলাতক দল দেশটাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৭:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • ১৯ বার

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে দেশটাকে অস্থিতিশীল করার জন্য।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসি বাংলার সঙ্গে। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিবিসি বাংলাকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটাতো সবসময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটাতো সবসময় থ্রেট আছেই। প্রতি ক্ষনেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটাতো সবসময় থাকবে।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে হুমকি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই। এটাতো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। এড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে। এই যে এড্রেস করছে। জাগো, কাজে নামো ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক আহ্বান জানাচ্ছে না- কর্মসূচি দিচ্ছে, হরতাল করো, অমুক করো। মানুষ কীভাবে নেবে এটাকে বলেন? এটা কি মিষ্টি মুখে চলে যাবে সব?’

দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের উপর আস্থা স্থাপন করেছে। শুধু আস্থা স্থাপন করেছে না, বিপুলভাবে করেছে। তারা বলছে আমরা অতীতে যা করি নাই তারচেয়ে বেশি করবো এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। সেইজন্য তারা বলছে। কাজেই এটা একটাতো বড় প্রমাণ। যখনই আপনি দেশের সারিগুলা দেখবেন- প্রত্যেকটা দেশ নিজে এসে বলেছে, আমরা তোমাদের সমর্থন করছি। তোমাদের যা দরকার আমরা দেবো। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।’

সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো সংস্কার কমিশন করেছি। আমাদেরকে ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনের রিপোর্ট দেয়ার কথা। তারা দিতে পারে নাই। আমি অভিযোগ করছি না। কারণ বিশাল একটা কাজ। আরেকটু সময় চেয়েছে- এক মাস, দুই মাস। ওইটুকু একটু পিছিয়ে গেছে। এগুলো আর কী। কাজ করতে গেলে যা হয়।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমারতো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এরকম কোনো খবরতো আমি পাই নাই এখনও। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে।

রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাৎ আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এরকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিবিসি বাংলাকে অধ্যাপক ইউনূস ‘একটা পলাতক দল দেশটাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে

আপডেট টাইম : ১০:৫৭:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে দেশটাকে অস্থিতিশীল করার জন্য।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসি বাংলার সঙ্গে। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিবিসি বাংলাকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটাতো সবসময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটাতো সবসময় থ্রেট আছেই। প্রতি ক্ষনেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটাতো সবসময় থাকবে।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে হুমকি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই। এটাতো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। এড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে। এই যে এড্রেস করছে। জাগো, কাজে নামো ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক আহ্বান জানাচ্ছে না- কর্মসূচি দিচ্ছে, হরতাল করো, অমুক করো। মানুষ কীভাবে নেবে এটাকে বলেন? এটা কি মিষ্টি মুখে চলে যাবে সব?’

দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের উপর আস্থা স্থাপন করেছে। শুধু আস্থা স্থাপন করেছে না, বিপুলভাবে করেছে। তারা বলছে আমরা অতীতে যা করি নাই তারচেয়ে বেশি করবো এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। সেইজন্য তারা বলছে। কাজেই এটা একটাতো বড় প্রমাণ। যখনই আপনি দেশের সারিগুলা দেখবেন- প্রত্যেকটা দেশ নিজে এসে বলেছে, আমরা তোমাদের সমর্থন করছি। তোমাদের যা দরকার আমরা দেবো। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।’

সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো সংস্কার কমিশন করেছি। আমাদেরকে ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনের রিপোর্ট দেয়ার কথা। তারা দিতে পারে নাই। আমি অভিযোগ করছি না। কারণ বিশাল একটা কাজ। আরেকটু সময় চেয়েছে- এক মাস, দুই মাস। ওইটুকু একটু পিছিয়ে গেছে। এগুলো আর কী। কাজ করতে গেলে যা হয়।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমারতো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এরকম কোনো খবরতো আমি পাই নাই এখনও। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে।

রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাৎ আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এরকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’