ঢাকা ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ যেন অতিরঞ্জিত না হয়: সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৬ বার

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সব বাহিনীকে এ বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদেরও কোনো খবর ‘অতিরঞ্জিত’ করে প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে শায়িত পিলখানায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিকদের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যৌথ বাহিনীর টহল জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অভিযানে পুলিশ, আনসার, র‍্যাব যে বাহিনীরই হোক, কারও কোনো গাফিলতি থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ঠিকমতো কাজ না করলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’

এ সময় গত রাতে তাঁর বাসার পাশে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান এক সাংবাদিক। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাঁকে যথাস্থানে এ বিষয়ে অবহিত করার পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিক অনুরোধ করে বলেন, ‘সাংবাদিকেরা যে খবর প্রকাশ করছেন, তা যেন অতিরঞ্জিত না হয়। তাহলে মানুষের ধারণা পরিবর্তন হয়ে যায়।’ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন, ‘সঠিক সংবাদ সরবরাহ করেন, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’

শহীদ পরিবারের দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, তাঁদের দুইটা দাবি ছিল: বিচার ও শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা। শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করেছি। বিচারের জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে এই তদন্ত কমিশন করে দেওয়া হয়েছে।

বনানীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পর সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানেরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বিজিবির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

প্রসঙ্গত, পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৬ বছর আজ। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে বিদ্রোহের নামে তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ নিহত হন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভীষিকাময় ও শোকাবহ এ দিনটি প্রথমবার জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হতে যাচ্ছে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে সরকার প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়।

২০০৯ সালে পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ গুম এবং পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও নির্যাতন চালানো হয়। দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা ওই নৃশংস ঘটনাকে দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রথম বড় ধরনের আঘাত হিসেবেই মূল্যায়ন করে থাকেন। অন্তর্বর্তী সরকারেরও মূল্যায়ন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধেও বাংলাদেশ একসঙ্গে এতজন সেনা কর্মকর্তাকে হারায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সংবাদ যেন অতিরঞ্জিত না হয়: সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সব বাহিনীকে এ বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদেরও কোনো খবর ‘অতিরঞ্জিত’ করে প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে শায়িত পিলখানায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিকদের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যৌথ বাহিনীর টহল জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অভিযানে পুলিশ, আনসার, র‍্যাব যে বাহিনীরই হোক, কারও কোনো গাফিলতি থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ঠিকমতো কাজ না করলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’

এ সময় গত রাতে তাঁর বাসার পাশে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান এক সাংবাদিক। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাঁকে যথাস্থানে এ বিষয়ে অবহিত করার পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিক অনুরোধ করে বলেন, ‘সাংবাদিকেরা যে খবর প্রকাশ করছেন, তা যেন অতিরঞ্জিত না হয়। তাহলে মানুষের ধারণা পরিবর্তন হয়ে যায়।’ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন, ‘সঠিক সংবাদ সরবরাহ করেন, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’

শহীদ পরিবারের দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, তাঁদের দুইটা দাবি ছিল: বিচার ও শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা। শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করেছি। বিচারের জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে এই তদন্ত কমিশন করে দেওয়া হয়েছে।

বনানীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পর সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানেরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বিজিবির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

প্রসঙ্গত, পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৬ বছর আজ। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে বিদ্রোহের নামে তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ নিহত হন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভীষিকাময় ও শোকাবহ এ দিনটি প্রথমবার জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হতে যাচ্ছে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে সরকার প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়।

২০০৯ সালে পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ গুম এবং পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও নির্যাতন চালানো হয়। দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা ওই নৃশংস ঘটনাকে দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রথম বড় ধরনের আঘাত হিসেবেই মূল্যায়ন করে থাকেন। অন্তর্বর্তী সরকারেরও মূল্যায়ন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধেও বাংলাদেশ একসঙ্গে এতজন সেনা কর্মকর্তাকে হারায়নি।