ঢাকা ০২:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজান পণ্যে ঊর্ধ্বমুখী চট্টগ্রামের বাজার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৭ বার

রমজান শুরুর নিরাপদ দূরত্বে থেকে আসন্ন দিনগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস দেন প্রশাসনের তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ীরা। তবে গত বৃহস্পতিবার এমন আশ্বাসের পর থেকেই বাজারে একটু একটু করে বাড়ছে রমজানের পণ্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম।

রমজান মাসে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস চেয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। জবাবে ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসককে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সব দপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও নিয়মিত তদারকি ও কঠোর নজরদারির কথা বলেন।

জ্যেষ্ঠ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহরিয়ার আকুঞ্জী বলেন, বাজারে এখন সবকিছুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। সবজির উৎপাদন ভালো। রোজার পণ্যের আমদানিও হয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং চলছে।

মেট্রোপলিটন (পাঁচলাইশ) কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, রবি মৌসুমে প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়েছে। কাঁচা মরিচ, বেগুন, শসা, টমেটোর মতো সবজির সরবরাহও বেশ ভালো। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (চট্টগ্রাম) মো. আনিছুর রহমান বলেন, বাজারে ছোলার প্রচুর সরবরাহ রয়েছে।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ যাতে রোজায় স্বস্তিতে বাজার করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সয়াবিন তেলের বিষয়ে প্রয়োজনে মিল মালিকদের সঙ্গে বসা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাজার তদারকি থাকবে।

মতবিনিময় সভায় রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী, চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজমসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তবে জেলা প্রশাসকের বৈঠকের আলোচনার সঙ্গে বাজারের বাস্তবতার মিল নেই। বিষয়টি স্বীকার করেছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নেতারা। গতকাল নগরীতে সমাবেশ করে ক্যাব নেতারা বিপুল আমদানির পরও বাজারে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না কেন, তা জানতে চেয়েছেন। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির বিরুদ্ধে প্রশাসনকে জোরালো অভিযান পরিচালনার তাগিদ দিয়েছেন।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর অলি খাঁ মসজিদ থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অভিমুখে নাগরিক পদযাত্রা শেষে সমাবেশ করে ক্যাব। ভ্যাট বৃদ্ধি, ডলার সংকট, মজুদ নেইÑ এমন বিভিন্ন অজুহাতে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি ও কৃত্রিম সংকট বন্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ক্যাব এ কর্মসূচির ডাক দেয়।

ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ও মহানগর যুব ক্যাব সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় সংগঠনটির বিভিন্ন শাখার পক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌস, শাহীন চৌধুরী, মিতুল দাশগুপ্ত, আবদুল আলীম, আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ জানে আলম, নুর মোহাম্মদ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, ‘রমজান মাস সংযম ও নাজাতের মাস। অথচ এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এ মাসে মজুদদারি, কারসাজি আর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে অসহনীয় পরিবেশ তৈরি করেন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন সবকিছু জেনেও নীরবতা পালন করেন। মানুষ যে কষ্টে আছে, সেই সত্য তুলে না ধরে তারা সবকিছু ঠিক আছে বলে প্রতিবেদন পাঠিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করেন। সবকিছু যদি ঠিক থাকে, তাহলে বিপুল আমদানির পরও বাজারে সয়াবিন তেল উধাও কেন, টাকা দিয়েও কেন তেল পাওয়া যাচ্ছে না ?

বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাট বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার ও এলসির সংকটসহ নানা অজুহাতে একবার বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট, একবার পেঁয়াজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা, এভাবে প্রতিটি পণ্যের সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থির করে রেখেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রমজান পণ্যে ঊর্ধ্বমুখী চট্টগ্রামের বাজার

আপডেট টাইম : ১০:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রমজান শুরুর নিরাপদ দূরত্বে থেকে আসন্ন দিনগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস দেন প্রশাসনের তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ীরা। তবে গত বৃহস্পতিবার এমন আশ্বাসের পর থেকেই বাজারে একটু একটু করে বাড়ছে রমজানের পণ্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম।

রমজান মাসে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস চেয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। জবাবে ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসককে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সব দপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও নিয়মিত তদারকি ও কঠোর নজরদারির কথা বলেন।

জ্যেষ্ঠ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহরিয়ার আকুঞ্জী বলেন, বাজারে এখন সবকিছুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। সবজির উৎপাদন ভালো। রোজার পণ্যের আমদানিও হয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং চলছে।

মেট্রোপলিটন (পাঁচলাইশ) কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, রবি মৌসুমে প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়েছে। কাঁচা মরিচ, বেগুন, শসা, টমেটোর মতো সবজির সরবরাহও বেশ ভালো। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (চট্টগ্রাম) মো. আনিছুর রহমান বলেন, বাজারে ছোলার প্রচুর সরবরাহ রয়েছে।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ যাতে রোজায় স্বস্তিতে বাজার করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সয়াবিন তেলের বিষয়ে প্রয়োজনে মিল মালিকদের সঙ্গে বসা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাজার তদারকি থাকবে।

মতবিনিময় সভায় রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী, চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজমসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তবে জেলা প্রশাসকের বৈঠকের আলোচনার সঙ্গে বাজারের বাস্তবতার মিল নেই। বিষয়টি স্বীকার করেছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নেতারা। গতকাল নগরীতে সমাবেশ করে ক্যাব নেতারা বিপুল আমদানির পরও বাজারে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না কেন, তা জানতে চেয়েছেন। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির বিরুদ্ধে প্রশাসনকে জোরালো অভিযান পরিচালনার তাগিদ দিয়েছেন।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর অলি খাঁ মসজিদ থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অভিমুখে নাগরিক পদযাত্রা শেষে সমাবেশ করে ক্যাব। ভ্যাট বৃদ্ধি, ডলার সংকট, মজুদ নেইÑ এমন বিভিন্ন অজুহাতে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি ও কৃত্রিম সংকট বন্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ক্যাব এ কর্মসূচির ডাক দেয়।

ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ও মহানগর যুব ক্যাব সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় সংগঠনটির বিভিন্ন শাখার পক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌস, শাহীন চৌধুরী, মিতুল দাশগুপ্ত, আবদুল আলীম, আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ জানে আলম, নুর মোহাম্মদ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, ‘রমজান মাস সংযম ও নাজাতের মাস। অথচ এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এ মাসে মজুদদারি, কারসাজি আর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে অসহনীয় পরিবেশ তৈরি করেন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন সবকিছু জেনেও নীরবতা পালন করেন। মানুষ যে কষ্টে আছে, সেই সত্য তুলে না ধরে তারা সবকিছু ঠিক আছে বলে প্রতিবেদন পাঠিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করেন। সবকিছু যদি ঠিক থাকে, তাহলে বিপুল আমদানির পরও বাজারে সয়াবিন তেল উধাও কেন, টাকা দিয়েও কেন তেল পাওয়া যাচ্ছে না ?

বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাট বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার ও এলসির সংকটসহ নানা অজুহাতে একবার বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট, একবার পেঁয়াজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা, এভাবে প্রতিটি পণ্যের সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থির করে রেখেছেন।