গত ৮০ ঘণ্টা আলোর মুখ দেখেনি জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের উইকেট। সোমবার থেকে মেঘ আর বৃষ্টির যে দৌরাত্ম্য শুরু, সময়ের সঙ্গে সেটা কেবল বেড়েছেই। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ ৩০ ঘণ্টায় প্রায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে এখানে।
মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট সঞ্চালনশীল গভীর মেঘমালার কারণে গত দুদিন ধরেই এই অঞ্চলের আকাশের আবস্থা খারাপ। বুধবার তো বটেই বৃহস্পতিবারও বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রবিবার দ্বিতীয় ম্যাচের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দুটি শেষ ওয়ানডেতে অন্যরকম যুদ্ধের যে আভাস দিয়ে রেখেছে, সময়ের সঙ্গে সেটা ক্রমেই ম্রিয়মান হয়ে যাচ্ছে। শুধু চট্টগ্রামের দর্শক নয়, মাশরাফি-বাটলার অন্যরকম ‘যুদ্ধটা’ উপভোগ করার জন্য অধীর হয়েছিল দেশের প্রতিটা ক্রিকেটপ্রেমী।
ম্যাচটা না হলে বোধ হয় সবচেয়ে বেশি হতাশ হবেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা নিজে। দেশের মাটিতে এর আগে টানা ছয়টি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে মাশরাফির বাংলাদেশ। উপমহাদেশের দ্বিতীয় দল হিসেবে দেশের মাটিতে টানা সাতটি সিরিজ জয়ের অসাধারণ রেকর্ডের সামনে তিনি এখন দাঁড়িয়ে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাম্পতিক পারফরম্যান্স, রেকর্ড, চট্টগ্রাম লাকি হোম গ্রাউন্ড, মনোবল, গ্যালারি সাপোর্ট, সবকিছুই পক্ষে বাংলাদেশের। হয়তো পক্ষে নেই বৃষ্টি।
সকালে যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে হয়তো কার্টেল ওভারে ম্যাচ হলেও হতে পারে। কিন্তু সকাল নাগাদ আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে সেটার কোনোরকম লক্ষণ নেই।
এমনিতে এখানকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা অন্তত ভালো। অনেকটা মিরপুরের মতো। বৃষ্টি থামার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে খেলা শুরু হওয়া সম্ভব।
ম্যাচ যদি শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়ায়ই তাহলে কেমন হবে একাদশ? জহুর আহমেদ চৌধুরীর উইকেট স্পিন সহায়ক। সেক্ষেত্রে একজন পেসার কমিয়ে মানে শফিউলকে বসিয়ে রেখে স্পিনার তাইজুলকে একাদশে রাখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। অবশ্য গত ক’দিন ধরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে উইকেট আগের মুডে থাকবে না। বল অনেক নিচু হবে। পেসাররা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন এমন কন্ডিশনে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ তিন পেসার নিয়ে মাঠে নামেতে চাইবে।
কার্টেল ওভার বা ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতির ম্যাচে টস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি ও ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলী। এ ধরনের ম্যাচে টস জেতা মানে অনেকটাই ম্যাচ জিতে নেওয়া। কিন্তু মাশরাফির টস ভা্গ্য যে মোটেও ভালো নয়। টস হারাটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়কের।
টস জিতুন বা হারুন ম্যাচটা মাঠে গড়ালে সামার্থ্যের পুরোটা যে ঢেলে দিবেন, সেটা জানিয়ে রেখেছেন মাশরাফি। মঈন আলীর কণ্ঠেও ছিল একই ঘোষণা। যুদ্ধের ঘোষণা আছে, কিন্তু ক্ষেত্র যে প্রস্তুত নয়!