এহসানুল ইয়াসিন শূন্য দশকের কবি ও কথাসাহিত্যিক। সমকালীন তরুণ লেখকদের মধ্যে তাকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। তার রচনার বিষয়, ভাষাভঙ্গি, যাপিত জীবন, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ব্যবহার পাঠককে দারুণভাবে আলোড়িত করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার গল্পগ্রন্থ- ‘ফেরাও অথবা ভেঙে ফেলো’।
বইটি প্রকাশ করেছে জিনিয়াস পাবলিকেশন্স। মূল্য ৩০০ টাকা। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
‘ফেরাও অথবা ভেঙে ফেলো’ গল্পগ্রন্থে সাতটি গল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্প পাঠককে ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করাবে। মুক্তিযুদ্ধ, সমকালীন সুবিধাবাদী রাজনৈতিক বাস্তবতা, যৌনতা, লোভ-লালসা, গ্রামীণ জীবন, পুঁজির উত্থান কিংবা উন্নত জীবনবোধের আড়ালে জীবনের যে সত্যিকারের সৌন্দর্য আছে তা সহজেই পাঠকের মনে গভীরভাবে নাড়া দেবে।
এ বিষয়ে প্রকাশক হাবিবুর রহমান জানান, এহসানুল ইয়াসিনের গল্পগুলো সমকালীন বাস্তবতাকে প্রশ্ন করে, একই সঙ্গে ভাবনার জগতে এক ধরনের সংশয়কে উসকে দেবে। মানুষের জীবন যে নানা তন্ত্র কিংবা মতবাদের ফাঁকে মাকড়সার মিহি জালের মতো আটকে তা চোখের সামনে ভেসে উঠে এই গল্পগুলোর চরিত্রের মধ্য দিয়ে। যা পাঠককে নতুন ভাবনার জগতে নিয়ে যাবে।
ফেরাও অথবা ভেঙে ফেলো বইটি সম্পর্কে লেখক বলেন, ‘একটা অস্থির এবং অসহিষ্ণু সময় আমরা যাপন করছি। এই সময়ে প্রতিটি সংবেদনশীল মানুষের বুকের ভেতর হাহাকার। কিন্তু মুক্তি কোথায়? মানুষ তো মনের গহীনে দুঃখ চেপে জীবনের ভার বহন করে না। সে চায় নির্মল বাতাসের মতো আনন্দময় যাপন। ফলে তার একমাত্র মুক্তিরপথ- নিরন্তর কথা বলা। নানাভাবে, নানা মাধ্যমে মনের কথা বলতে পারাই জীবনের চরম আনন্দ! ফেরাও অথবা ভেঙে ফেলো- গল্পগ্রন্থে আমি এই সুযোগটাই নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গল্পগুলোর চরিত্র- তাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা ও জীবনবোধ এই সমাজের।এই অর্থে গল্পগুলো আমি লিখিনি। তাদের হয়ে সময় আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে। সুতরাং আমার কিছু বলার নেই। আমার হয়ে গল্পগুলো একদিন কথা বলবে।’
উল্লেখ্য, এহসানুল ইয়াসিনের জন্ম ১৯৮৩ সালের ২০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলায়। তার শৈশব ও কৈশোর কাটে উপজেলার প্রসিদ্ধ গ্রাম চিনাইরে। বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
তার উল্লেখ্যযোগ্য কাব্যগ্রন্থ এখানে কেউ নেই, অহংকারের গোপন চিঠি, উত্তরাধিকারের হলফনামা এবং রাধিকা নগরীর দিকে হেঁটে যাচ্ছি।