জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী আতিয়া আনিসা। সংগীত নিয়ে কাটছে তার ব্যস্ত সময়। সম্প্রতি প্রিন্স মাহমুদের সুরে ‘জংলি’ সিনেমার একটি গান উন্মুক্ত হয়েছে। নতুন গান ও সংগীতে ব্যস্ততা নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- তারেক আনন্দ
প্রকাশ হলো ‘জংলি’ সিনেমার গান। প্রিন্স মাহমুদের সুরে গাইলেন। গান প্রকাশের পর কতটা সাড়া পাচ্ছেন?
‘জনম জনম’ গানটি প্রকাশের পর থেকেই দারুণ সাড়া পাচ্ছি। এটি আমার জন্য বিশেষ একটি গান, কারণ কিংবদন্তি প্রিন্স মাহমুদের সুরে গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আর সঙ্গে ছিলেন আমার প্রিয় তাহসান ভাই। গানটি এখন ট্রেন্ডিংয়ে ৭ নম্বরে আছে, যা আমাদের জন্য দারুণ আনন্দের। দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসা আর প্রশংসা পেয়ে সত্যিই অভিভূত। সবাই এত সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছেন, সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। আশা করি, গানটি আরও অনেক দূর যাবে, সবাই পাশে থাকবেন।
প্রিন্স মাহমুদের সুরে গাওয়ার সুযোগটি কীভাবে পেলেন?
প্রিন্স মাহমুদের সুরে গান গাওয়া যে কোনো শিল্পীর জন্যই স্বপ্নের মতো। আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান যে, এমন এক কিংবদন্তির গানে কণ্ঠ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইমরান মাহমুদুল, যিনি সংগীত আয়োজন করেছেন, আর তাহসান ভাইয়ের সঙ্গে দ্বৈতভাবে গানটি গাওয়া আমার জন্য বাড়তি আনন্দের। পুরো টিমের অসাধারণ পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের ফলেই ‘জনম জনম’ গানটি এসেছে এবং আমি কৃতজ্ঞ যে আমাকে এই দারুণ সুযোগটি দেওয়া হয়েছে। প্রিন্স ভাইয়া এবং ইমরান ভাইয়া মিলে এই গানটি নিয়ে প্ল্যানিং করেন। প্রিন্স ভাইয়া যে ধরনের গলার টেক্সচার ও টোন চাচ্ছিলেন, সেটা তিনি ইমরান ভাইয়াকে জানান। এরপর ইমরান ভাইয়া আমাকে সাজেস্ট করেন এবং সেখান থেকেই আমার এই গানটিতে যুক্ত হওয়া। এভাবেই ‘জনম জনম’ গানের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন হয়। এটি আমার জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ এবং অভিজ্ঞতা, যার জন্য আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।
এই গানের পেছনেও ইমরান মাহমুদুলের ভূমিকা আছে। আপনার গানের যাত্রায় ইমরানের অবদানকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আমি ইমরান ভাইয়ার প্রতি সত্যিই কৃতজ্ঞ। কারণ তিনিই আমাকে বাংলাদেশের সংগীতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তার সুরেই আমি আমার প্রথম প্লেব্যাক করেছি, যা আমার সংগীতজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তিনি শুধু একজন প্রতিভাবান সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালকই নন, বরং তিনি সব সময় নতুন সম্ভাবনাকে সুযোগ দেওয়ারও চেষ্টা করেন। ‘জনম জনম’ গানের ক্ষেত্রেও তিনিই আমাকে প্রিন্স ভাইয়ার কাছে সাজেস্ট করেন, যা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। শুধু প্লেব্যাকই নয়, তার সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমি সংগীত নিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। তিনি সব সময় আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, নতুন সুযোগের পথ দেখিয়েছেন, এবং আমার সংগীতজীবনের অনেক সুন্দর অধ্যায়ের সঙ্গী হয়েছেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ এবং আশা করি, ভবিষ্যতেও আমরা একসঙ্গে আরও দারুণ কিছু উপহার দিতে পারব।
এ পর্যন্ত ইমরানের সুরে কয়টি গান গাওয়া হয়েছে আপনার? কোন গানগুলো শ্রোতারা বেশি পছন্দ করেছে?
ডুয়েট গান গেয়েছি ১০টিরও বেশি, তার সুরে গেয়েছি ৯টি। তার সুরে গাওয়া প্রথম গানটি ছিল আমার প্রথম প্লেব্যাকও, যা আমার জন্য খুবই স্পেশাল। এরপর আমরা একসঙ্গে আরও অনেক গান করেছি, এবং প্রতিটি গানেই আলাদা একটা বিশেষত্ব ছিল। শ্রোতারা যেসব গান সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেছেন, তার মধ্যে ‘তোকে রাখব খুব আদরে’, ‘মেঘেরই খামে’, ‘আমি তোমার প্রেমে’ ও ‘যদি একদিন’ অন্যতম, এগুলোতে দারুণ সাড়া পেয়েছি। আমি কৃতজ্ঞ যে শ্রোতারা আমাদের গানকে এত ভালোবাসা দিয়েছেন।
ইমরানের সঙ্গে বেশি কাজ করার কারণেই কি অন্য সুরকারের সঙ্গে আনিসার কাজ কম?
আমার মৌলিক গানের সংখ্যা ৯০টি। এর মধ্যে ১০টি ইমরান ভাইয়ের সঙ্গে। বাকি ৮০টি তো অন্যদের সুরে গেয়েছি। শুরু থেকেই বেছে বেছে কাজ করি। প্লেব্যাকও খুব বেশি করা হয়নি, ভালো ভালো সিনেমায় গেয়েছি। জাহিদ নিরবের সুরে করেছি অনেক গান। হাবিব ওয়াহিদের সুরে ৬টি, ইমন চৌধুরী ভাইয়ের সুরে ৪টি, সাজিদ সরকারের সুরে ৬টি, আভ্রাল সাহিরের সুরে ৮-৯টি গান করেছি। অন্যদের সুরে কাজ করা হয় না, বিষয়টি এমন নয়। আমি সবার সঙ্গেই কাজ করছি। তবে হ্যাঁ ইমরান ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করা মানেই আলোটা এদিকে বেশি আসে।
শিগগির কোন কোন গানে শ্রোতারা আপনাকে পাবে?
শিগগিরই শ্রোতারা আমাকে বেশ কিছু নতুন গানে শুনতে পাবেন। এর মধ্যে কিছু একক গান, কিছু ডুয়েট এবং প্লেব্যাকও রয়েছে। সামনে আরও কিছু আকর্ষণীয় গান আসছে, যা নিয়ে আমি ভীষণ আশাবাদী। এ ছাড়া কিছু বিশেষ প্রজেক্টেও কাজ করছি, যেখানে প্রিয় গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি চাই শ্রোতারা প্রতিটি গান উপভোগ করুন এবং আমাদের পাশে থাকুন। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এসব গানের খবর জানাব!