ঢাকা ০২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ যে কারণে বন্ধ হয়, সিদ্ধান্ত জানাল বাংলা একাডেমি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৪ বার

অমর একুশে বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিনের স্টল বন্ধ করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম আলোচনার পর লিখিত বক্তব্য দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রসার ও ব্যবহার সম্পর্কে কোনো প্রকার সংকোচ থাকার প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।

বাংলা একাডেমি বলছে, বইমেলার পণ্যায়নের একটা ব্যাপার স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রি সংক্রান্ত একটা বিষয় বহুজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে ও ফোনে বহুজন তাদের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে বিশদ জানানো জরুরি হয়ে পড়েছে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তুলে ধরা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বক্তব্যে বলা হয়, ‘বাংলা একাডেমি আয়োজক হলেও বইমেলার প্রয়োজনীয় কাজগুলো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান করে থাকে। এবার এ দায়িত্ব পেয়েছেন ড্রিমার ডংকি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান স্পন্সরের সহায়তায় কাজটি করে থাকে। তবে তাদের কাজ করতে হয় মেলার নীতিমালা মেনে।

এবার স্পন্সর ঠিক করার ক্ষেত্রে সংখ্যা এবং ধরণ বিবেচনায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু নীতি লঙ্ঘন করেছে। তার মধ্যে একটি হল- অনুমতি না নিয়েই মেলার যত্রতত্র পণ্য-বিপণনের ব্যবস্থা করা। আমরা প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে বাধা দিয়ে আসছি। কিন্তু তারা নানা অজুহাতে নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।’

বাংলা একাডেমি বলছে, ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং ডায়াপার বিষয়ে তারা আমাদের জানিয়েছিল, ওয়াশরুমের পাশে রেখে নারী ও শিশুদের প্রয়োজনমতো বিনা মূল্যে এসব পণ্য সরবরাহ করবে। কিন্তু মেলা কর্তৃপক্ষ দেখতে পায়, তারা এ দুই পণ্যসহ আরো কিছু পণ্য বিক্রি করছে। ফলে তাদেরকে স্টল বন্ধ করতে বলা হয়। শুধু স্যানিটারি ন্যাপকিন নয়; ডায়াপার, পেস্ট ও ব্রাশসহ আরও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান বারবার কথা দিয়ে কথা রাখছিল না। বাংলা একাডেমি মাঝখানে তিনদিন নিজেদের উদ্যোগে স্টল দুটি বন্ধ করে রেখেছিল। তাদের অনুরোধে শুধু কাগজ, পেন্সিল, কলম জাতীয় শিশুদের কিছু দ্রব্য বইমেলার শিশুকর্নারে বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘এমতাবস্থায় ইভেন্ট কোম্পানি জানায়, স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়ে গেছে বিধায় তারা বিপদে পড়েছে।’

এই চুক্তির সঙ্গে একাডেমির কোনো সম্পর্ক থাকে না বলেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো চিঠির বিষয়ে বাংলা একাডেমি বলছে, এ চিঠি তারা দেয়নি।

বাংলা একাডেমির বলেছে, তারা বলল, একটা চিঠি তারা স্পন্সর কোম্পানিকে দেবে, যেখানে বলা হবে ন্যাপকিন বিক্রি করলে সমস্যা হবে। তাদের কাজটা সহজ করার জন্যই কেবল বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক চিঠিতে সম্মতিসূচক স্বাক্ষর করেছেন। এ চিঠি বাংলা একাডেমি দেয়নি।

আর কেউ স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রি বন্ধ করার কথা বাংলা একাডেমিকে বলেনি। আমরা অনেকগুলো পণ্য সম্পর্কে কথা বলেছি। কিন্তু ইভেন্ট, স্পন্সরসহ বিভিন্ন পক্ষ শুধু ন্যাপকিনের ব্যাপারটিকেই প্রধান করে তুলেছে।

স্যানিটার ন্যাপকিন বিষয়ে বাংলা একাডেমি বলছে, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রসার ও ব্যবহার সম্পর্কে বাংলা একাডেমির কোনো প্রকার সংকোচ থাকার প্রশ্নই আসে না। বইমেলার পণ্যায়নের একটা ব্যাপার স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

তার প্রমাণ, একদিকে আমরা অন্য অনেকগুলো পণ্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যদিকে ইভেন্টকে বলেছি, সৌজন্য হিসেবে তারা যেন স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রয়োজনমাফিক বিতরণ করে।

বইমেলায় আগেও এরকম বিভিন্ন জরুরি উপকরণ সৌজন্য হিসেবে বিতরণের ব্যবস্থা ছিল বলেছে বাংলা একাডেমি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ওয়াশরুমের পাশে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা রাখবে- এটাও আমরা নিশ্চিত করছি।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ যে কারণে বন্ধ হয়, সিদ্ধান্ত জানাল বাংলা একাডেমি

আপডেট টাইম : ১০:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অমর একুশে বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিনের স্টল বন্ধ করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম আলোচনার পর লিখিত বক্তব্য দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রসার ও ব্যবহার সম্পর্কে কোনো প্রকার সংকোচ থাকার প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।

বাংলা একাডেমি বলছে, বইমেলার পণ্যায়নের একটা ব্যাপার স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রি সংক্রান্ত একটা বিষয় বহুজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে ও ফোনে বহুজন তাদের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে বিশদ জানানো জরুরি হয়ে পড়েছে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তুলে ধরা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বক্তব্যে বলা হয়, ‘বাংলা একাডেমি আয়োজক হলেও বইমেলার প্রয়োজনীয় কাজগুলো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান করে থাকে। এবার এ দায়িত্ব পেয়েছেন ড্রিমার ডংকি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান স্পন্সরের সহায়তায় কাজটি করে থাকে। তবে তাদের কাজ করতে হয় মেলার নীতিমালা মেনে।

এবার স্পন্সর ঠিক করার ক্ষেত্রে সংখ্যা এবং ধরণ বিবেচনায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু নীতি লঙ্ঘন করেছে। তার মধ্যে একটি হল- অনুমতি না নিয়েই মেলার যত্রতত্র পণ্য-বিপণনের ব্যবস্থা করা। আমরা প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে বাধা দিয়ে আসছি। কিন্তু তারা নানা অজুহাতে নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।’

বাংলা একাডেমি বলছে, ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং ডায়াপার বিষয়ে তারা আমাদের জানিয়েছিল, ওয়াশরুমের পাশে রেখে নারী ও শিশুদের প্রয়োজনমতো বিনা মূল্যে এসব পণ্য সরবরাহ করবে। কিন্তু মেলা কর্তৃপক্ষ দেখতে পায়, তারা এ দুই পণ্যসহ আরো কিছু পণ্য বিক্রি করছে। ফলে তাদেরকে স্টল বন্ধ করতে বলা হয়। শুধু স্যানিটারি ন্যাপকিন নয়; ডায়াপার, পেস্ট ও ব্রাশসহ আরও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান বারবার কথা দিয়ে কথা রাখছিল না। বাংলা একাডেমি মাঝখানে তিনদিন নিজেদের উদ্যোগে স্টল দুটি বন্ধ করে রেখেছিল। তাদের অনুরোধে শুধু কাগজ, পেন্সিল, কলম জাতীয় শিশুদের কিছু দ্রব্য বইমেলার শিশুকর্নারে বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘এমতাবস্থায় ইভেন্ট কোম্পানি জানায়, স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়ে গেছে বিধায় তারা বিপদে পড়েছে।’

এই চুক্তির সঙ্গে একাডেমির কোনো সম্পর্ক থাকে না বলেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো চিঠির বিষয়ে বাংলা একাডেমি বলছে, এ চিঠি তারা দেয়নি।

বাংলা একাডেমির বলেছে, তারা বলল, একটা চিঠি তারা স্পন্সর কোম্পানিকে দেবে, যেখানে বলা হবে ন্যাপকিন বিক্রি করলে সমস্যা হবে। তাদের কাজটা সহজ করার জন্যই কেবল বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক চিঠিতে সম্মতিসূচক স্বাক্ষর করেছেন। এ চিঠি বাংলা একাডেমি দেয়নি।

আর কেউ স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রি বন্ধ করার কথা বাংলা একাডেমিকে বলেনি। আমরা অনেকগুলো পণ্য সম্পর্কে কথা বলেছি। কিন্তু ইভেন্ট, স্পন্সরসহ বিভিন্ন পক্ষ শুধু ন্যাপকিনের ব্যাপারটিকেই প্রধান করে তুলেছে।

স্যানিটার ন্যাপকিন বিষয়ে বাংলা একাডেমি বলছে, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রসার ও ব্যবহার সম্পর্কে বাংলা একাডেমির কোনো প্রকার সংকোচ থাকার প্রশ্নই আসে না। বইমেলার পণ্যায়নের একটা ব্যাপার স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

তার প্রমাণ, একদিকে আমরা অন্য অনেকগুলো পণ্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যদিকে ইভেন্টকে বলেছি, সৌজন্য হিসেবে তারা যেন স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রয়োজনমাফিক বিতরণ করে।

বইমেলায় আগেও এরকম বিভিন্ন জরুরি উপকরণ সৌজন্য হিসেবে বিতরণের ব্যবস্থা ছিল বলেছে বাংলা একাডেমি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ওয়াশরুমের পাশে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা রাখবে- এটাও আমরা নিশ্চিত করছি।’