বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটিতে ছেলের নামে প্রস্তাব না পাঠানোয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম চরকাঁকড়া পন্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াছিনকে প্রকাশ্যে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে পন্ডিতেরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রেজাউল হক (৫৫) উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে পশ্চিম চরকাঁকড়া পন্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিল। সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল হকের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় তিনি বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করতে তার ছেলে একই বিদ্যালয়ের ছাত্র ও উপজেলার পেশকারহাট জনতা ব্যাংক শাখার ক্যাশিয়ার তানভীর হোসেন শুভর (২৮) নাম প্রস্তাব করেন।
কিন্তু বিএনপি নেতার ছেলের বয়স কম হওয়ায় বয়োজৈষ্ঠ এ.বি.এম ছিদ্দিক (৭৫) ও এ.কে এম আব্দুল ওহাব (৬৩) ও গোলাম সরওয়ারের (৪৭) নামের তালিকা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। অ্যাডহক কমিটির সভাপতির তালিকায় ছেলের না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হন রেজাউল।
এর জেরে গতকাল রবিবার বেলা ১১টার দিকে জরুরি কাজে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রধান শিক্ষক ইয়াছিনের গতিরোধ করে পথ আটকান এই বিএনপি নেতা। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে গালমন্দ করে কিল, ঘুষি দেন। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেজাউলের ফার্মেসি দোকান ভাঙচুর করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
জানতে চাইলে অভিযোগ নাকচ করে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে একটু গালমন্দ করেছেন।
পাল্টা অভিযোগ করে রেজাউল হক বলেন, তিনি ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে গত ১৪ বছর ধরে নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ছেলে মাস্টার্স পাশ। তার সঙ্গে আরও তিনজন অ্যাডহক কমিটিতে প্রার্থী, সবাই ডিগ্রি পাশ। প্রধান শিক্ষক অন্য আরেকজনের সঙ্গে চক্রান্ত করে তার ছেলের নামটি তালিকায়ও রাখেননি।
এ বিষয়ে পন্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াছিন বলেন, ‘রেজাউল হকের ছেলে তানভীর হোসেন শুভর নাম অ্যাডহক কমিটিতে না দেওয়ায় আমার সঙ্গে তিনি অশোভন আচরণ করেন। তার ছেলের বয়স কম হওয়ায় দেওয়া যায়নি। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেই তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।