ঢাকা ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি’ চলছে, একাত্তরের মতো ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ছাত্রদল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৫ বার

বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি’ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে এক কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানায় তারা। ছাত্রসংগঠনটির নেতারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো যদি এই রাজনীতি করা হয়, তাহলে ধরে নেওয়া হবে, ১৯৭১-এর মতো আবারও কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ বিচার এবং সন্ত্রাসীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ছিল এটি। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। মিছিলটি শাহবাগ, রাজু ভাস্কর্য এবং টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ কেন্দ্র, মহানগরের বিভিন্ন নেতা-কর্মী।

সমাবেশে রাকিব বলেন, ‘বিগত সাড়ে পাঁচ মাসে প্রথম আমাদের কর্মসূচি, নীরবে-নিভৃতে থেকে সরকারকে সাহায্য করেছি, সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করেছি। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে গ্রেপ্তার করায় কাজ করছে না। নিষিদ্ধ করেই দায়সারা হিসেবে রয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও কলেজের প্রিন্সিপালদের আহ্বান জানিয়ে রাকিব বলেন, ‘দ্রুততম সময়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঢাবি, জাবিসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছিল, সেসব স্থানে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হলেও সাড়ে পাঁচ মাসেও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেননি। দ্রুত তদন্ত করে তাদের তালিকা প্রকাশ করে ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। আমরা কোনো আলটিমেটাম দিচ্ছি না। দ্রুততম সময়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সারা দেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলন করেছে। কিন্তু অনেকে বিভেদ সৃষ্টি করছে। আমরা এখনো ঐক্যবদ্ধ আছি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সব ছাত্রসংগঠন ঐক্যবদ্ধ। আজকের কর্মসূচি থেকে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। যদি কেউ এখনো আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি করে, ধরে নেব তারা ১৯৭১-এর মতো আবারও কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে’। যত দিন ছাত্রলীগের বিচার না হবে, তত দিন ছাত্রদল মার্চ ফর জাস্টিসের মতো রাজপথে থাকবে বলে মন্তব্য করেন রাকিব।

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাহস বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার সাড়ে পাঁচ মাস গেলেও কোনো বিচার দেখতে পারছি না। ঢাবিসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারের যে দোসররা হাসিনাকে সাহায্য করেছিল, তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন, স্বৈরাচারের দোসররা এখনো থেকে গেলে জুলাই-আগস্টের স্পিরিট বিনষ্ট হবে।’

সরকারের উদ্দেশে সাহস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আপনারা আইনের আওতায় আনুন। ফ্যাসিবাদের দোসর দুর্জন শিক্ষকদেরও বিচারের আওয়ায় আনুন।’

মার্চ ফর জাস্টিসে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতা-কর্মীদের অগ্রভাগে নিয়ে এ যাত্রা শুরু হয়। এ সময় তাঁরা ছাত্রলীগের বিচার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে নানা স্লোগান দেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি’ চলছে, একাত্তরের মতো ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ছাত্রদল

আপডেট টাইম : ১২:০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি’ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে এক কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানায় তারা। ছাত্রসংগঠনটির নেতারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো যদি এই রাজনীতি করা হয়, তাহলে ধরে নেওয়া হবে, ১৯৭১-এর মতো আবারও কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ বিচার এবং সন্ত্রাসীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ছিল এটি। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। মিছিলটি শাহবাগ, রাজু ভাস্কর্য এবং টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ কেন্দ্র, মহানগরের বিভিন্ন নেতা-কর্মী।

সমাবেশে রাকিব বলেন, ‘বিগত সাড়ে পাঁচ মাসে প্রথম আমাদের কর্মসূচি, নীরবে-নিভৃতে থেকে সরকারকে সাহায্য করেছি, সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করেছি। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে গ্রেপ্তার করায় কাজ করছে না। নিষিদ্ধ করেই দায়সারা হিসেবে রয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও কলেজের প্রিন্সিপালদের আহ্বান জানিয়ে রাকিব বলেন, ‘দ্রুততম সময়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঢাবি, জাবিসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছিল, সেসব স্থানে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হলেও সাড়ে পাঁচ মাসেও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেননি। দ্রুত তদন্ত করে তাদের তালিকা প্রকাশ করে ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। আমরা কোনো আলটিমেটাম দিচ্ছি না। দ্রুততম সময়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সারা দেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলন করেছে। কিন্তু অনেকে বিভেদ সৃষ্টি করছে। আমরা এখনো ঐক্যবদ্ধ আছি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সব ছাত্রসংগঠন ঐক্যবদ্ধ। আজকের কর্মসূচি থেকে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। যদি কেউ এখনো আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি করে, ধরে নেব তারা ১৯৭১-এর মতো আবারও কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে’। যত দিন ছাত্রলীগের বিচার না হবে, তত দিন ছাত্রদল মার্চ ফর জাস্টিসের মতো রাজপথে থাকবে বলে মন্তব্য করেন রাকিব।

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাহস বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার সাড়ে পাঁচ মাস গেলেও কোনো বিচার দেখতে পারছি না। ঢাবিসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারের যে দোসররা হাসিনাকে সাহায্য করেছিল, তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন, স্বৈরাচারের দোসররা এখনো থেকে গেলে জুলাই-আগস্টের স্পিরিট বিনষ্ট হবে।’

সরকারের উদ্দেশে সাহস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আপনারা আইনের আওতায় আনুন। ফ্যাসিবাদের দোসর দুর্জন শিক্ষকদেরও বিচারের আওয়ায় আনুন।’

মার্চ ফর জাস্টিসে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতা-কর্মীদের অগ্রভাগে নিয়ে এ যাত্রা শুরু হয়। এ সময় তাঁরা ছাত্রলীগের বিচার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে নানা স্লোগান দেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।