জানুয়ারির শুরুতেই পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে।গত চার দিন ধরে সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। কনকনে হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে জনজীবন জবুথবু। দিনের বেলাতেও সমগ্র জনপদ কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় পঞ্চগড়ে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল বুধবার সকাল ৯ টায় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
এদিকে তীব্র শীতে কাজে বের হতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছে এই জনপদের দিনে আনে দিনে খাওয়া খেটে খাওয়া পরিবার গুলো। তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুন কষ্ট ভোগ করছে। গ্রামীণ জনপদের অনেকে শীত বস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয় শীত নিবারনের চেষ্টা করছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও যানবাহনগুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে অতি সাবধানে চলাচল করছে। জেলায় প্রায় দেড় লাখ নিম্ন আয়ের মানুষ এই শীতে কষ্টে পাচ্ছেন।
আজ বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ, ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। কনকনে হাড়কাঁপানো শীতে চা শ্রমিক,পাথর শ্রমিক,বালু শ্রমিক,দিন মজুর,রিক্স-ভ্যান চালক সহ খেটে খাওয়া মানুষ গুলো নিদারুন দুর্ভোগে পড়েছে।
এদিকে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। জেলার হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। সরকারি ভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এই শীতে গবাদি পশুগুলোর অবস্থাও জবুথবু। তীব্র শীতে জেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের হাঁস-মুরগীর মড়ক ধরেছে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই মাসে তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে আসতে পারে এবং এই জেলার উপর দিয়ে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া আশঙ্কা রয়েছে।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো.সাবেত আলী জানান, শীত মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম দফায় দুই হাজার কম্বল দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই টাকা দিয়ে অতি দ্রুত কম্বল এবং শীতবস্ত্র ক্রয় করে অসহায় দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। ।তিনি সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিত্তবানদের পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষের এসে দাড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।