যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিষ্ঠানটির একজন জনপ্রিয় সংবাদ উপস্থাপকের ভুল মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই মামলা দায়ের করা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, এপি নিউজসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার এবিসি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আপস হয় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের। এতে জরিমানার বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে রাজি হন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়ের করা মানহানির মামলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধে সম্মত হয়েছে এবিসি নিউজ। প্রতিষ্ঠানটির নামকরা উপস্থাপক জর্জ স্টেফানোপোলাস প্রমাণ ছাড়া ট্রাম্পকে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত বলে মন্তব্য করায় এই খেসারত দিতে হয়েছে তাদের।
মীমাংসার শর্ত হিসেবে, স্টেফানোপোলাসের বক্তব্যের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেবে প্রতিষ্ঠানটি। এবিসি নিউজ ট্রাম্পের পক্ষে একটি ‘প্রেসিডেন্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড মিউজিয়াম’ স্থাপনের জন্য ১৫ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে। এ ছাড়া ট্রাম্পের আইনি খরচের জন্য ১ মিলিয়ন ডলার দেবে তারা।
চলতি বছর ১০ মার্চ সাউদ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসপার্সন ন্যান্সি ম্যাসের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন স্টেফানোপোলাস। সে সময় ট্রাম্পকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন তিনি।
স্টেফানোপোলাস বলেন, বিচারক ও দুটি পৃথক জুরি ট্রাম্পকে ধর্ষণের জন্য দায়ী বলেছে। ট্রাম্পকে সমর্থনের পেছনে ম্যাসের কারণ জানতে চেয়ে সাক্ষাৎকার চলাকালে ১০ বার এই মন্তব্য করেন তিনি।
২০২৩ সালে নিউইয়র্কের একটি আদালত রায় দিয়েছিল, ম্যাগাজিন কলামিস্ট ই. জিন ক্যারলকে যৌন নির্যাতন করেছেন ট্রাম্প। যৌন নির্যাতন ও মানহানির জন্য ট্রাম্পকে পৃথক দুই মামলায় দায়ী করে আদালত। তবে আদালত উল্লেখ করে যে, নিউইয়র্কের আইনে সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা অনুযায়ী ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এক মামলায় ক্যারলকে আট কোটি ৩৩ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ট্রাম্পের প্রতি নির্দেশনা জারি করা হয়।
মীমাংসার বিষয়ে এবিসি নিউজের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘মামলাটি নির্ধারিত শর্তে মীমাংসায় পৌঁছেছে বলে আমরা সন্তুষ্ট।’
বিবিসির মার্কিন অংশীদার প্রতিষ্ঠান সিবিএসের বিরুদ্ধেও ‘প্রতারণামূলক আচরণের’ অভিযোগে মামলা করেছেন ট্রাম্প। এর আগে ২০২৩ সালে সিএনএনের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছেন তিনি। তার অভিযোগ, অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তাকে তুলনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অবশ্য এই মামলাটি খারিজ হয়। এ ছাড়া নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে করা মামলাও বাতিল হয়েছে।