ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অত্যাচারী আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন, সিরিয়া মুক্ত: দাবি বিদ্রোহীদের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪৪ বার

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। সিরিয়া এখন মুক্ত। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

আজ রবিবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে বলা হয়, অত্যাচারী শাসক বাশার আল-আসাদ পালিয়েছেন।

টেলিগ্রামে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা দামেস্ককে (সিরিয়ার রাজধানী) অত্যাচারী বাশার আল-আসাদের হাত থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি। সিরিয়া এখন মুক্ত। একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হলো। একটি নতুন যুগের সূচনা হলো।”এইচটিএস আরো বলেছে, “বাশার আল-আসাদ পরিবারের অর্ধশতাব্দীর শাসনামলে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বা কারাবন্দী হয়েছেন, তারা এখন নিজ নিজ ঘরে ফিরতে পারবেন। এটি হবে একটি নতুন সিরিয়া, যেখানে সবাই শান্তিতে বসবাস করবেন। এই সিরিয়ায় ন্যায়বিচারের জয় হবে।”

টেলিগ্রামে পৃথক আরেকটি পোস্টে এইচটিএস বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী আপাতত সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবেন।

এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি টেলিগ্রামে ঘোষণা করেছেন, শহরের সামরিক বাহিনীর জন্য দামেস্কের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের’ কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ।

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচএস) জানিয়েছে, রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ান সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর শতাধিক সদস্যকে তাদের সামরিক ইউনিফর্ম খুলে ফেলতে দেখা গেছে, কারণ তাদের বলা হয়েছে, সরকার পতনের কারণে তারা চাকরি থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় আসেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।

২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।

পরবর্তীতে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া, ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ। এতে বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়া, ইরান তার চিরশত্রু ইসরায়েলের দিকে মনোনিবেশ ও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। গত ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখল অভিযান শুরু করে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে তারা মাত্র ১২ দিনে রাজধানী দামেস্কে পৌঁছে যায়। প্রেসিডেন্ট আসাদ বিমানে করে অজ্ঞান স্থানে পালিয়ে গেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

অত্যাচারী আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন, সিরিয়া মুক্ত: দাবি বিদ্রোহীদের

আপডেট টাইম : ১১:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। সিরিয়া এখন মুক্ত। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

আজ রবিবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে বলা হয়, অত্যাচারী শাসক বাশার আল-আসাদ পালিয়েছেন।

টেলিগ্রামে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা দামেস্ককে (সিরিয়ার রাজধানী) অত্যাচারী বাশার আল-আসাদের হাত থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি। সিরিয়া এখন মুক্ত। একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হলো। একটি নতুন যুগের সূচনা হলো।”এইচটিএস আরো বলেছে, “বাশার আল-আসাদ পরিবারের অর্ধশতাব্দীর শাসনামলে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বা কারাবন্দী হয়েছেন, তারা এখন নিজ নিজ ঘরে ফিরতে পারবেন। এটি হবে একটি নতুন সিরিয়া, যেখানে সবাই শান্তিতে বসবাস করবেন। এই সিরিয়ায় ন্যায়বিচারের জয় হবে।”

টেলিগ্রামে পৃথক আরেকটি পোস্টে এইচটিএস বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী আপাতত সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবেন।

এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি টেলিগ্রামে ঘোষণা করেছেন, শহরের সামরিক বাহিনীর জন্য দামেস্কের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের’ কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ।

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচএস) জানিয়েছে, রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ান সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর শতাধিক সদস্যকে তাদের সামরিক ইউনিফর্ম খুলে ফেলতে দেখা গেছে, কারণ তাদের বলা হয়েছে, সরকার পতনের কারণে তারা চাকরি থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় আসেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।

২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।

পরবর্তীতে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া, ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ। এতে বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়া, ইরান তার চিরশত্রু ইসরায়েলের দিকে মনোনিবেশ ও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। গত ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখল অভিযান শুরু করে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে তারা মাত্র ১২ দিনে রাজধানী দামেস্কে পৌঁছে যায়। প্রেসিডেন্ট আসাদ বিমানে করে অজ্ঞান স্থানে পালিয়ে গেছেন।