বাংলাদেশের কোনো রোগীকে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতার জে এন রায় হাসপাতাল। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বার্তা সংস্থা পিটিআই, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের জে এন রায় হাসপাতাল অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা করবে না বলে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
জে এন রায় হাসপাতালের ডিরেক্টর শুভ্রাংশু ভক্ত জানিয়েছেন, ‘জে এন রায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) থেকে কোনো বাংলাদেশি রোগীদের ভর্তি অথবা মেডিকেল সেবা দেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে আমাদের দেশের লাখ লাখ সৈনিকের রক্ত ঝরেছিল। আজ সেই দেশে আমাদের দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হচ্ছে। জাতীয় পতাকাকে পায়ের তলায় পদদলিত করা হচ্ছে। অতএব তাদের সঙ্গে আমাদের এই ভাব-ভালোবাসা দেখানোর কোনো কারণ নেই।’
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত অত্যাচারের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালগুলোকেও একই ধরনের পদক্ষেপ (বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ) নেওয়ার আহ্বান জানান শুভ্রাংশু ভক্ত। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবায় যারা রয়েছেন তাদের সবারই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ, সবার ঊর্ধ্বে আমাদের এই দেশ।’
‘এই দেশে বসেই আমরা হাসপাতাল চালাচ্ছি, এই পরিসেবা মানবজাতির জন্য। কিন্তু বাংলাদেশে যেটা হচ্ছে সেটা একদমই কাম্য নয়, সেটা অমানবিক। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তাদের পরিসেবা দেওয়ার কোনো দরকার নেই ‘,বলেন শুভ্রাংশ ভক্ত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মাটিতে ভারতের ও ইসরায়েলের পতাকার নকশা এঁকে সেটির উপর হেঁটে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে- এমন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসব ছবি ও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর থেকেই টানাপোড়েন চলছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে। সম্প্রতি সাবেক ইসকন সদস্য এবং সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের জেরে প্রতিবেশী দুদেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা করল জে এন হাসপাতাল।