ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা করেছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গতকাল বুধবার দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সংগঠনটি প্রথম বিবৃতিতে বলেছে, তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘বিজয়’ অর্জন করেছে এবং তাদের যোদ্ধারা প্রস্তুত রয়েছে।
ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি বলছে, ‘ন্যায়নিষ্ঠতার কারণে সর্বশক্তিমান আল্লাহ’র কাছ থেকে আমাদের বিজয় এসেছে। ’ সরাসরি যুদ্ধবিরতির শর্তাবলীর উল্লেখ না করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলি শত্রুর উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং তার আক্রমণের মোকাবেলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবে। ’
হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ‘কোনও শহর দখল ও স্থাপন করার প্রচেষ্টা’, হিজবুল্লাহর আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ ঠেকাতে বা ‘শত্রুদের আশা অনুযায়ী একটি সামরিক ও নিরাপত্তা বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করতে’ ব্যর্থ হয়েছে। এতে বলা হয়, হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ‘আগ্রাসনের শেষ দিন পর্যন্ত’ ইসরায়েলকে লক্ষ্যবস্তু করে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপর বছরের পর বছর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চালানো নিপীড়ন আরও জোরালো করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেদিনের পর থেকে চালানো সামরিক অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ৯০ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
গাজায় ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে একাধিকবার লেবানন সীমান্তে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। দুই দেশই সীমান্ত থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হিজবুল্লাহর কাছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে এখন পর্যন্ত শতাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তবে এখন সীমান্তবর্তী এলাকা ছাপিয়ে এবার পরস্পরের সীমান্ত থেকে মূল ভূখণ্ডের বেশ ভেতরে হামলা চালানো শুরু করে দুই দেশ। স্থল অভিযানও শুরু করে ইসরায়েল। এতে করে ক্রমেই বাড়তে থাকে নিহতের সংখ্যা।
এরপর গতকাল বুধবার দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহকে ইসরায়েল সংলগ্ন সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে লিটানি নদীর উত্তরে ফিরে যেতে হবে এবং দক্ষিণ লেবাননে এর সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলতে হবে।