ঢাকা ০৮:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মসজিদ ঘিরে উত্তেজনা উত্তর প্রদেশে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ইন্টারনেট ও স্কুল বন্ধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ২ বার

ভারতের উত্তর প্রদেশের সাম্ভাল জামা মসজিদকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনায় সেখানকার স্কুল ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার শুরু হওয়া সংঘাতে পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত চারজন মুসলিম প্রাণ হারিয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫ জনকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যার মধ্যে স্থানীয় সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউল রহমান বারিকও রয়েছেন। এ ছাড়া প্রভাবশালী মুসলিম নেতা ইকবাল মাহমুদের ছেলে নবাব সুহাইল ইকবালেরও নাম রয়েছে মামলাও।

গতকাল রবিবার সকালে আদালতের নির্দেশে মুঘল আমলের এই জামে মসজিদে জরিপ চালাতে যায় কর্মকর্তারা। এই জরিপকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসলি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান তিনজন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৩০ জন পুলিশ।  পুলিশ জানিয়েছে, জরিপ দলটি সকালে কাজ করতে গেলে সেখানে মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। প্রায় এক হাজার মানুষ সেখানে গিয়ে অবস্থান নেয় এবং দলটি প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। কেউ কেউ পুলিশের ওপর পাথর ছুঁড়তেও শুরু করে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি।

আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন দেয় বলে দাবি করেছে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ সুপানর কৃষাণ কুমার বলেন, তারা ড্রোন ফুটেজের মাধ্যমে হামলাকারীদের শনাক্ত করছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে জিয়াউল রহমান বারিক এই ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করে বলছেন, এই সহিংসতা আসলে একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়া উচিত। কারণ তারা সরকারি অস্ত্র নয়, ব্যক্তিগত অস্ত্র ব্যবহার করেছেন। ’ তিনি দাবি করেন, মুসলিমদের লক্ষ্য করেই হত্যা করা হচ্ছে।

এই অবস্থায় সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সবার ক্লাসও সোমবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতর পরও রবিবার মসজিদটিতে জরিপ চালিয়েছে জরিপকারী দল। তারা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মসজিদটির বিভিন্ন জায়গার ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিয়ে গেছেন। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে আদালতের কাছে জরিপের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। মসজিদকে ঘিরে অনেকদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় অনেকের দাবি, মধ্যযুগে হিন্দু মন্দির ছিল এখানে। সেখানে মসজিদ তৈরি করেন সম্রাট বাবর। এই বিষয় নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলছে। সেই মামলার অংশ হিসেবেই জরিপ করতে যায় দলটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মসজিদ ঘিরে উত্তেজনা উত্তর প্রদেশে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ইন্টারনেট ও স্কুল বন্ধ

আপডেট টাইম : ০৬:০৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের উত্তর প্রদেশের সাম্ভাল জামা মসজিদকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনায় সেখানকার স্কুল ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার শুরু হওয়া সংঘাতে পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত চারজন মুসলিম প্রাণ হারিয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫ জনকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যার মধ্যে স্থানীয় সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউল রহমান বারিকও রয়েছেন। এ ছাড়া প্রভাবশালী মুসলিম নেতা ইকবাল মাহমুদের ছেলে নবাব সুহাইল ইকবালেরও নাম রয়েছে মামলাও।

গতকাল রবিবার সকালে আদালতের নির্দেশে মুঘল আমলের এই জামে মসজিদে জরিপ চালাতে যায় কর্মকর্তারা। এই জরিপকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসলি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান তিনজন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৩০ জন পুলিশ।  পুলিশ জানিয়েছে, জরিপ দলটি সকালে কাজ করতে গেলে সেখানে মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। প্রায় এক হাজার মানুষ সেখানে গিয়ে অবস্থান নেয় এবং দলটি প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। কেউ কেউ পুলিশের ওপর পাথর ছুঁড়তেও শুরু করে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি।

আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন দেয় বলে দাবি করেছে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ সুপানর কৃষাণ কুমার বলেন, তারা ড্রোন ফুটেজের মাধ্যমে হামলাকারীদের শনাক্ত করছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে জিয়াউল রহমান বারিক এই ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করে বলছেন, এই সহিংসতা আসলে একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়া উচিত। কারণ তারা সরকারি অস্ত্র নয়, ব্যক্তিগত অস্ত্র ব্যবহার করেছেন। ’ তিনি দাবি করেন, মুসলিমদের লক্ষ্য করেই হত্যা করা হচ্ছে।

এই অবস্থায় সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সবার ক্লাসও সোমবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতর পরও রবিবার মসজিদটিতে জরিপ চালিয়েছে জরিপকারী দল। তারা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মসজিদটির বিভিন্ন জায়গার ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিয়ে গেছেন। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে আদালতের কাছে জরিপের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। মসজিদকে ঘিরে অনেকদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় অনেকের দাবি, মধ্যযুগে হিন্দু মন্দির ছিল এখানে। সেখানে মসজিদ তৈরি করেন সম্রাট বাবর। এই বিষয় নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলছে। সেই মামলার অংশ হিসেবেই জরিপ করতে যায় দলটি।