ঢাকা ০৮:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্যটকদের সেন্টমার্টিন যেতে লাগবে ট্রাভেল পাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৮:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৩ বার

অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে সরকার বেশকিছু কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নানা নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপে মন চাইলেই যে কোনো পর্যটক যেতে পারবেন না। এর জন্য লাগবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপসে তৈরি ট্রাভেল পাস। সেই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে একটি গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে কমিটি গঠন ও বিভিন্ন গাইডলাইন উল্লেখ করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে ৬ সদস্যের কমিটির সদস্যরা হলেন- টেকনাফ এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অথবা ট্যুরিজম বোর্ড, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডের একজন করে প্রতিনিধি।

কমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়েছে, জাহাজ ছাড়ার/এন্ট্রি পয়েন্টে শুধু বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপস থেকে সংগ্রহকৃত ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিতকরণ। পর্যটক এবং অনুমোদিত জাহাজ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পণ্য (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী) পরিবহন না করার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ। পর্যটকরা কোন হোটেলে অবস্থান করবেন তা লিপিবদ্ধকরণ এবং রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ। জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে এবং সেন্টমার্টিনে এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা অফিস সার্বিক যোগাযোগ ও সমন্বয় করবে। এবং কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

এ নতুন নির্দেশনা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভায় সেন্টমার্টিনের বিষয়ে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করে। যে পরিপত্রে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ্য আছে। যেখানে বলা হয়েছে- সেন্টমার্টিনে নৌ যান চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করবে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তাদের আদেশ মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে সরকার গৃহীত এ ধরনের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কর্মীরা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পর্যটকদের সেন্টমার্টিন যেতে লাগবে ট্রাভেল পাস

আপডেট টাইম : ১০:২৮:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে সরকার বেশকিছু কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নানা নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপে মন চাইলেই যে কোনো পর্যটক যেতে পারবেন না। এর জন্য লাগবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপসে তৈরি ট্রাভেল পাস। সেই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে একটি গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে কমিটি গঠন ও বিভিন্ন গাইডলাইন উল্লেখ করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে ৬ সদস্যের কমিটির সদস্যরা হলেন- টেকনাফ এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অথবা ট্যুরিজম বোর্ড, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডের একজন করে প্রতিনিধি।

কমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়েছে, জাহাজ ছাড়ার/এন্ট্রি পয়েন্টে শুধু বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপস থেকে সংগ্রহকৃত ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিতকরণ। পর্যটক এবং অনুমোদিত জাহাজ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পণ্য (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী) পরিবহন না করার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ। পর্যটকরা কোন হোটেলে অবস্থান করবেন তা লিপিবদ্ধকরণ এবং রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ। জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে এবং সেন্টমার্টিনে এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা অফিস সার্বিক যোগাযোগ ও সমন্বয় করবে। এবং কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

এ নতুন নির্দেশনা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভায় সেন্টমার্টিনের বিষয়ে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করে। যে পরিপত্রে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ্য আছে। যেখানে বলা হয়েছে- সেন্টমার্টিনে নৌ যান চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করবে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তাদের আদেশ মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে সরকার গৃহীত এ ধরনের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কর্মীরা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছেন।