অনুকূল আবহাওয়া আর ভালো দাম পাওয়ায় মানিকগঞ্জে প্রতি বছর বাড়ছে মুলা চাষ। অল্প সময়ে মুলা বিক্রি করা যায় বলে সাথী ফসল হিসেবেও ব্যাপক আবাদ করছেন চাষিরা। চলতি বছরও গত বছরের তুলনায় মুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার সর্বত্রই মুলা চাষ হয়ে থাকলেও সদর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর উপজেলায় এর আবাদ বেশী হয়। এ জেলার মুলা দেখতে ধবধবে সাদা ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দেশের সর্বত্রই এর চাহিদা বেশী।
আরাফাত হোসেন নামে এক বেপারী বলেন, আমি প্রতি মৌসুমে মুলার ব্যবসা করি। আড়তে অন্য জেলার মুলা অবিক্রীত থাকলেও মানিকগঞ্জের মুলা সবার আগে বিক্রি হয়ে যায়। প্রতি বছর ব্যবসা ভালই হয়। এবার বৃষ্টির কারণে ফলন একটু খারাপ হয়েছে, দামও একটু বেশী তার পরেও সবে মাত্র মুলার মৌসুম শুরু হয়েছে। কিছুদিন পর ব্যবসা জমে উঠবে।
সদর উপজেলার রমনপুর এলাকার মুলা চাষি জিন্নাহ জানান, এ এলাকার জমি খুবই উর্বর, জমি কখনো পতিত থাকে না। কিছুদিন আগে আখ বিক্রি করেছি। মুলা বিক্রি শেষ করে ধনে পাতা চাষ করবো। এর মধ্যে আবার আখ আস্তে আস্তে বড় হতে থাকবে। দিনে দিনে এ এলাকার জমিতে সাথী ফসল হিসেবে মূলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আওলাদ হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, আগে মানুষ মুলা খেতে চাইতো না। বর্তমানে লোকজন কাঁচা মুলা ভাতের সঙ্গে খাচ্ছে, সালাত ও তরকারি করেও খায়। বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায় বলে মুলার চাহিদা বাড়ছে। দামও ভাল পাচ্ছে কৃষক। এক একর মুলা আবাদ করতে খরচ যা হয়, তার তিনগুণ টাকায় বিক্রি হয়।
রুস্তম শেখ নামে এক চাষি বলেন, এ জেলার মাটি সবজি চাষের জন্য এমনিতেই ভালো। কয়েক বছর আগেও এতো মুলার চাষ হত না। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় চাষিরা মুলা চাষে ঝুঁকছেন। এছাড়া বাজারে মুলা দাম পাওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। শ্রমিক খরচ, সার, বীজ খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ মিটানোর পরেও পকেটে দিগুণ লাভ থাকছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান বলেন, আমাদের পরামর্শ ও সহযোগিতার কারণে প্রতিবছর মুলার আবাদ বাড়ছে। গত বছর মুলা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩৮ হেক্টর। যা সফলভাবেই অর্জিত হয়। এবার একই লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে ভাল দাম পাওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছি।