নিজাম (মদন, নেত্রকোনা)ঃ নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফচিকা গ্রাম থেকে ১৪শ ১০ মিটার সড়কের সংস্কার কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছে। এতে মদন, আটপাড়া ও মোহনগঞ্জ এই তিন উপজেলার লোকজনের যাতায়াতের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঠিকাদার উধাও হওয়ায় কাজটির চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে মদন এলজিইডি অফিস।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মদন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি খানাখন্দ থাকায় মদন, আটপাড়া ও মোহনগঞ্জ এই তিন উপজেলার লোকজনের যাতায়ত বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে ছিল। এ সড়কটির গুরুত্ব অনুধাবন করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। খানাখন্দ সংস্কার করে সড়কটি নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য বরাদ্দ হয় ১ কোটি ২ লাখ টাকা। কাজের দরপত্র পায় কেন্দুয়া উপজেলার মেসার্স মামুন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে তারা কাজ শুরু করে। রাস্তা খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে চলে যায়। ১৩ এপ্রিল ২০২৪ সালে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই সময় সীমা শেষ হওয়ার ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও বাকি কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেয়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সড়কটির সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় যাতায়াতে বিপাকে পড়ছে লোকজন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সরেজমিনে গেলে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের নামে পুরোনো সড়কটি খুঁড়ে কেবল খোয়া ফেলে রেখে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকার কারণে সেসব খোয়াও সরে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় এসব গর্তে পানি জমে আছে। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে।
ফচিকা মহিম স্মরণিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নির্মল বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের কাজটি বন্ধ থাকায় তিন উপজেলার লোকজনের চলাচলের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। সংস্কারকাজ শুরুর আগে সড়ক দিয়ে চলাচল করা যেত। কিন্তু এখন চলাচলে দূর্ভোগ বেড়েছে। দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোফাইটর মামুন জানান, প্রকল্পের ফান্ডের সমস্যা ছিল। অন্যদিকে আবহাওয়া ভাল ছিল না তাই কাজ বন্ধ রেখেছি। নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের সাথে কথা বলেছি অচিরেই কাজ শুরু করব।
মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল জানান, চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারের কোনো খোঁজ নেই। মুঠোফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ৯ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে ওই ঠিকাদারের চুক্তি বাতিল করার জন্য সুপারিশ করেছি। চুক্তি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র দিয়ে কাজটি শেষ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।