ঢাকা ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসার নামে এরশাদকে আটক করেছিল আওয়ামী লীগ, জানালেন তার ভাই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১ বার

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ২০১৪ সালে চিকিৎসার নামে আওয়ামী লীগ আটক করেছিল বলে জানালেন তার ছোট ভাই ও দলের বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। আজ শনিবার দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে। বাংলাদেশের সংবিধানে সরকার প্রধানকে অপরিসীম ক্ষমতা দেয়। এতে ভালো নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দলও ক্ষমতা অপর‌্যবহার করে দানবে পরিণত হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভালো নির্বাচনের আগে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। তবেই, ভালো নির্বাচনের পর ভালো সরকার পাওয়া যাবে। আমরা চাই, দেশের মালিকানা যেন সাধারণ মানুষের হাতে থাকে। সাধারণ মানুষ যেন ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। সরকারের জবাবদিহি থাকবে সাধারণ মানুষের কাছে। সরকার যদি জনগণের ইচ্ছার বাইরে দেশ পরিচালনা করে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে যেন সাধারণ জনগণই আবারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।’

জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী রাজনীতি করেছে। জনগণের পক্ষে থেকেই জানগণের পক্ষে রাজনীতি করেছে জাতীয় পার্টি।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিলো। তখন আওয়ামী লীগ সরকার পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে আটক করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেই। তখন আমার নেতৃত্বে প্রায় ২৭০ জন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়ায়। আমি নিজেও ২০১৪ সালের নির্বাচন করিনি, সংসদে যাইনি। মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপ দিয়ে আমাদের নেতাকে (এরশাদ) নিজস্ব রাজনীতি করতে বাঁধা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।’

জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ছবি: ফোকাস বাংলা

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। আবার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। বিএনপির সংসদ সদস্যরা প্রায় চার বছর সংসদে থেকে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি। সবাই জানে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। জাতীয় পার্টিকে দুটি ভাগ করে রেখেছিলো সরকার।’

তিনি বলেন, ‘একটি ঠুনকো মামলার আদেশে প্রায় চার মাস আমাকে দল পরিচালনা থেকে বিরত রেখেছে। আমাদের দলের পরিচয়ে সরকার আরেকটি গ্রুপকে কাউন্সিল করতে দিয়েছিল। আমাদের রাজনীতি ও দল পরিচালনায় অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিল আওয়ামী লীগ।’

জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন, ড. নুরুল আজহার শামীম, আব্দুল হামিদ ভাষানী, ইউসুফ আজগর, আব্দুর রশীদ, জিন্নাত আলী, আবুল হাসনাত মাসুম, শহীদুল ইসলাম মোল্লা, ফিরোজ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী, মো. মেহেদী হাসান ও আবু ওহাব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চিকিৎসার নামে এরশাদকে আটক করেছিল আওয়ামী লীগ, জানালেন তার ভাই

আপডেট টাইম : ০৬:৩৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ২০১৪ সালে চিকিৎসার নামে আওয়ামী লীগ আটক করেছিল বলে জানালেন তার ছোট ভাই ও দলের বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। আজ শনিবার দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে। বাংলাদেশের সংবিধানে সরকার প্রধানকে অপরিসীম ক্ষমতা দেয়। এতে ভালো নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দলও ক্ষমতা অপর‌্যবহার করে দানবে পরিণত হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভালো নির্বাচনের আগে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। তবেই, ভালো নির্বাচনের পর ভালো সরকার পাওয়া যাবে। আমরা চাই, দেশের মালিকানা যেন সাধারণ মানুষের হাতে থাকে। সাধারণ মানুষ যেন ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। সরকারের জবাবদিহি থাকবে সাধারণ মানুষের কাছে। সরকার যদি জনগণের ইচ্ছার বাইরে দেশ পরিচালনা করে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে যেন সাধারণ জনগণই আবারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।’

জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী রাজনীতি করেছে। জনগণের পক্ষে থেকেই জানগণের পক্ষে রাজনীতি করেছে জাতীয় পার্টি।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিলো। তখন আওয়ামী লীগ সরকার পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে আটক করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেই। তখন আমার নেতৃত্বে প্রায় ২৭০ জন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়ায়। আমি নিজেও ২০১৪ সালের নির্বাচন করিনি, সংসদে যাইনি। মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপ দিয়ে আমাদের নেতাকে (এরশাদ) নিজস্ব রাজনীতি করতে বাঁধা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।’

জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ছবি: ফোকাস বাংলা

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। আবার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। বিএনপির সংসদ সদস্যরা প্রায় চার বছর সংসদে থেকে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি। সবাই জানে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। জাতীয় পার্টিকে দুটি ভাগ করে রেখেছিলো সরকার।’

তিনি বলেন, ‘একটি ঠুনকো মামলার আদেশে প্রায় চার মাস আমাকে দল পরিচালনা থেকে বিরত রেখেছে। আমাদের দলের পরিচয়ে সরকার আরেকটি গ্রুপকে কাউন্সিল করতে দিয়েছিল। আমাদের রাজনীতি ও দল পরিচালনায় অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিল আওয়ামী লীগ।’

জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন, ড. নুরুল আজহার শামীম, আব্দুল হামিদ ভাষানী, ইউসুফ আজগর, আব্দুর রশীদ, জিন্নাত আলী, আবুল হাসনাত মাসুম, শহীদুল ইসলাম মোল্লা, ফিরোজ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী, মো. মেহেদী হাসান ও আবু ওহাব।