মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে রোপা আমন ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কীটনাশক স্প্রে করার পরও ভালো ফলন পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে তারা তৎপর হলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যতদূর চোখ যায়, মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ। ধানখেতের পরিচর্যায় দিন-রাত কাজ করছেন কৃষকরা। তারা পোকা দমন করতে ওষুধ স্প্রে ও সেচ দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে, কৃষকদের মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কৃষি অফিস সহযোগিতা না করায় অনেকটা বিপাকে রয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে সাটুরিয়া উপজেলায় ৫ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৭৮৩ হেক্টর জমিতে। গত বছর উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্য ছিল ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর, কিন্তু আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে। উপজেলায় এ বছরই সবচেয়ে বেশি জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলার রাধানগর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন জানান, নিজস্ব ও বর্গা নেওয়া ৮৭ শতাংশ জমিতে আমন ধান রোপণ করেছেন তিনি। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে বাজার থেকে ৩০০ টাকা দামের কীটনাশক কিনে ফসলের জমিতে স্প্রে করেছেন। কিন্তু, কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত কৃষি অফিস থেকে কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি।
সাটুরিয়ার সদর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের কৃষক মো. রফিক (৩৮) নিজেদের ৯০ শতাংশ জমিতে এ বছর আমন ধান চাষ করছেন। ঠিকমতো সার ও সেচ দেওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু, হঠাৎ ধানখেতে পোকার আক্রমণে চিন্তিত তিনি। কীটনাশক স্প্রে করার পরও পোকা দমন করা যাচ্ছে না।
পাড়াগ্রাম এলাকার কৃষক সিরাজ মিয়া জানান, নিজের ৪০ শতাংশ জমিতে এ বছর আমন রোপণ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা আছে। কিন্তু, তার ধানখেতের আশপাশের সব জমিতে ধানে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। নিজের জমিতে পোকার আক্রমণ নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, এ বছর সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আমনের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে। আমনের আবাদে কয়েকটি ধাপে পোকার আক্রমণ বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাসে চার দিন উপজেলা অফিসে এনে ট্রেনিং করানো হচ্ছে কৃষকদের মাঠে গিয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য।